জাতিসংঘের প্রতিবেদন

আন্দোলনকারী নারীদের ওপর যৌন নিপীড়নও চালিয়েছে আওয়ামী লীগ

জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে নারীরা | স্টার ফাইল ফটো

জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া নারীদের অপদস্থ করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নারী আন্দোলনকারীদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালিয়েছে আওয়ামী লীগ।

তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা নারীদের শারীরিক নির্যাতন, ধর্ষণের হুমকি এবং যৌন হয়রানি করেছে।

আজ বুধবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় থেকে প্রকাশিত জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন সংক্রান্ত ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার সশস্ত্র কর্মীদের সংগঠিত করতে থাকে। আন্দোলন দমনের প্রাথমিক ধাপে আওয়ামী লীগ নেতাদের উসকানিতে লাঠিসোঁটা, ধারালো অস্ত্র এবং কিছু ক্ষেত্রে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ কর্মীরা।

নারীদের আন্দোলনে অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করতে তাদের ওপর যৌন নিপীড়ন করা হয় ও অপদস্থ করার চেষ্টা করা হয়।

এরমধ্যে কয়েকজন নারীকে বেআইনিভাবে আটক করা হয়। কয়েকজন নারী আন্দোলনকারী নির্যাতন ও অমানবিক আচরণের শিকার হন।

এছাড়া, শিশুদেরও লক্ষ্যবস্তু করা হয়। আন্দোলন চলাকালে শিশুদের বিচারবহির্ভূত হত্যা, বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার, অমানবিক পরিবেশে আটক, নির্যাতন ও ইচ্ছাকৃত অঙ্গহানি ঘটিয়েছে পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী।

নারীদের ওপর শারীরিক আক্রমণের পাশাপাশি যৌন নিপীড়নও হয়েছে নিয়মিত। নারী আন্দোলনকারীদের বারবার অবমাননাকর শব্দ ব্যবহার করে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।

নারীদের ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের হুমকি দিয়েছে হামলাকারী আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশ সদস্যরা।

প্রতিবেদনে একটি ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। আগস্টের শুরুতে ঢাকায় একদল পুরুষ বাঁশের লাঠি হাতে এক নারীকে আটকায় এবং জানতে চায় তিনি আন্দোলনকারী কি না। ওই নারীর ফোন ও ব্যাগ তল্লাশি শেষে তারা বাংলাদেশের পতাকা খুঁজে পায়। পরে তার ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করে—তার চুল ধরে টান দেয়, জামা ছিঁড়ে ফেলে এবং যৌন হয়রানি করে। পাশাপাশি তার গায়ে নখ দিয়ে আঁচড় কাটে এবং যৌন নিপীড়নমূলক গালাগাল করে যায়।

জুলাইয়ে ঢাকায় আরেক নারী আন্দোলনকারীর ওপর ছাত্রলীগের হামলার বর্ণনাও উঠে এসেছে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে। ওই নারী, তার মা এবং পরিবারের সব নারী সদস্যদের ধর্ষণের হুমকি দেয় দুই ছাত্রলীগ কর্মী। এরপর অশ্লীল মন্তব্য করে এবং যৌন হয়রানি করে। এই ঘটনার পর ভুক্তভোগী নারী ফোনে ধর্ষণের আরও হুমকি পান।

কুমিল্লায় ছাত্রলীগ কর্মীরা বেশ কয়েকজন নারীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে, যার মধ্যে দুজন শিক্ষার্থী ছিলেন। তারা ওই দুই শিক্ষার্থীকে আটকায়, যৌন হয়রানি করে এবং এরপর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

Comments

The Daily Star  | English
Magura child rape case

Magura rape: Main accused charged with murder

A month after the death of the eight-year-old girl, who was brutally raped while visiting her sister’s in-laws in Magura, police have pressed murder charges against the main accused.

4h ago