ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি, ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় অবৈধভাবে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির অভিযোগে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) অনুযায়ী কসবা থানায় মামলাটি করা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক মো. রাকিবুল হাসান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
অভিযুক্তরা হলেন— কসবা উপজেলার বড় বায়েক গ্রামের মো. হাছিবুল হাসান ভূঁইয়া (৩৬), সাগরতলা গ্রামের জামান মিয়া (৩৪), কাশিরামপুর গ্রামের সোহেল (৩৮) ও সাগরতলার কিরণ আক্তার (৪৬)।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে আসছিলেন। এই চক্রটি বায়েক ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ২৮ হাজার ৪৪০ ঘনফুট পাহাড়ি মাটি কেটে বিক্রি করেছে। রাতের বেলা ডাম্প ট্রাক ও ট্রাক্টরে করে মাটি সরিয়ে নিতেন তারা।
এর আগে, দ্য ডেইলি স্টারে পাহাড় কাটা নিয়ে ছবি ও প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তরের নজরে আসে। এরপর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সংস্থাটি আইনানুগ ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত নেয়।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্তরা অনুমতি ছাড়াই পাহাড় কেটে পরিবেশ ও প্রতিবেশগত ক্ষতি করেছে। এতে পাহাড় ধ্বসের আশঙ্কার পাশাপাশি স্থানীয় বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্যও নষ্ট হচ্ছে।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, পাহাড় কাটায় ভূমিধ্বস, পানি সংকট ও জীব-বৈচিত্র্যের ক্ষতি হতে পারে।
এদিকে মামলার তথ্য নিশ্চিত করে কসবা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বলেন, 'পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়ের করা এজাহার গ্রহণ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।'
পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা পরিদর্শক মো. রাখিবুল হাসান বলেন, 'এভাবে পাহাড় কাটা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। পাহাড় কাটার বিষয়ে বর্তমান সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। কসবার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকার আরও চারটি স্পট ইতোমধ্যে পরিদর্শন করা হয়েছে। ওসব স্পটে পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।'
এছাড়া গত সপ্তাহে উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে গোপীনাথপুর এলাকায় পাহাড় কাটার দায়ে তিন ব্যক্তিকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
Comments