ভারত অযৌক্তিকভাবে কোনো সুবিধা থেকে বঞ্চিত করলে বাংলাদেশ তার অপশন খুঁজে নেবে: সারজিস

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে ট্রান্সশিপমেন্টের চুক্তি ভারতের পক্ষ থেকে বাতিল প্রসঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন, কেউ যদি অনৈতিকভাবে বা অযৌক্তিকভাবে কোনো একটি সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে, দেশ হিসেবে বাংলাদেশ তার অপশন খুঁজে নেবে।
আজ শনিবার দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের মীরগড় এলাকায় জেলা প্রশাসন ইকো পার্কে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে তিনি এই কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, বাংলাদেশ-ভারত দুটি প্রতিবেশী দেশ। কখনো এই দুটি দেশের সম্পর্ক এমন হয়ে যাবে না যে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যাবে। আমরা এটা প্রত্যাশা করি না। কিন্তু ভারতের কাজ, তারা বাংলাদেশকে কীভাবে ডিল করছে, কোন চোখে দেখছে, এই জিনিসগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নির্ধারণ করবে।
তিনি বলেন, এখন এই গ্লোবাল ওয়ার্ল্ডে সবকিছুরই কোনো না কোনো বিকল্প একটি অপশন রয়েছে। পৃথিবীর বড় বড় পরাশক্তি অনেককে চেপে ধরার চেষ্টা করেছে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাকে বন্ধ করে দিয়ে। কিন্তু দিনশেষে ওই ছোট ছোট শক্তিগুলো আরও বিকল্প অসংখ্য পথের মধ্য দিয়ে শক্তিশালী হয়েছে। শুধু ভারত নয়, পৃথিবীর যেকোনো দেশই যদি তাদের জায়গা থেকে বিভিন্ন বাণিজ্যিক চুক্তি বা অন্যান্য অনেক সুযোগ-সুবিধার জায়গায় আমাদের চেপে ধরার চেষ্টা করে, তাহলে আমরা মনে করি পুরো বিশ্ব আমদের জন্য খালি রয়েছে।
'আমরা বিশ্বের অন্য জায়গায়, যে জায়গায় সমতার, শ্রদ্ধার ও ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক রেখে আমরা আমাদের সুন্দর একটি বাণিজ্যিক সম্পর্ক করতে পারব, আমরা সেদিকে যাব। এক্ষেত্রে আমরা বিশ্বাস করি, ভারত রাজনৈতিক দল হিসেবে নয়, বরং ভারত একটি দেশ হিসেবে ফাংশন করবে এবং দেশ হিসেবে আরেক দেশের সঙ্গে তার যে বাণিজ্যিক চুক্তিগুলো, সেগুলো করবে এবং বজায় রাখবে।'
একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে সারজিসের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর মন্তব্য বিষয়ে তিনি বলেন, প্রথমত, আমাদের জায়গা থেকে আমরা মনে করি যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য শামসুজ্জামান দুদু যে মন্তব্যটি করেছেন, এটি হয়তো তার ব্যক্তিগত মন্তব্য। এটি দল হিসেবে বিএনপির নয়।
'দ্বিতীয়ত, আমরা আমাদের জায়গা থেকে প্রত্যাশাও করি না। কারণ রাজনীতিতে তারা আমাদের সিনিয়র, আমরা চাই তাদেরকে দেখে আমরা শিখব, সামনের দিকে এগিয়ে যাব। যারা বয়সের দিক থেকে তাদের অনুজ রয়েছেন, তাদেরকে সামনে রেখে প্রতিহিংসামূলক বা ছোট করে কথা বলার কালচারটা তারা যদি আবার তৈরি করেন, যেটা আমরা দেখতাম যে, শেখ হাসিনা ড. ইউনূসকে ছোট করে বিভিন্ন কথা বলতেন, খালেদা জিয়াকে নিয়ে ছোট করে বিভিন্ন কথা বলতেন, এটা কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে রাজনৈতিক যে ব্যক্তিত্ব, তাদের মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্কগুলোকে নষ্ট করে ফেলেছে। তো আমরা তো একই কালচার আর তাদের কাছে বা তাদের মাধ্যমে দেখতে চাই না। সেই জায়গায় আমরা মনে করি, আমাদের জন্য যদি তাদের কোনো পরামর্শ থাকে, তারা সেই পরামর্শটি দেবেন এবং এই দেওয়াও সুন্দর-শ্রদ্ধার সম্পর্কের মধ্যে দিয়ে হওয়া উচিত।'
পহেলা বৈশাখ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এনসিপির এই নেতা বলেন, দেশের জায়গাভেদে সংস্কৃতিটা কিছুটা আলাদা হতে পারে। কিন্তু প্রত্যেকটি সংস্কৃতি সংরক্ষণ করা আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অংশ। সুতরাং আমাদের এই সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা যেন থাকে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে যে, শো-অফ করার জন্য বাইরের যে অপসংস্কৃতিগুলো রয়েছে, সেগুলোকে যেন আমরা আমাদের সংস্কৃতির অংশ বানিয়ে না দেই। একজনের কালচার আরেকজনের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার যে মানসিকতা, এগুলো থেকেও আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। সবার কালচারের প্রতি শ্রদ্ধার যে জায়গাটা, সেটা আমাদের প্রদর্শন করা উচিত।
Comments