ভাঙা হয়েছে কবি রফিক আজাদের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটির একাংশ, যা বলছে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ

বীরমুক্তিযোদ্ধা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রয়াত কবি রফিক আজাদের স্মৃতিবিজড়িত ধানমন্ডির বাড়িটির একাংশ ভেঙে ফেলেছে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ৷
আজ বুধবার সকালে ধানমন্ডি থানা পুলিশের উপস্থিতিতে বাড়িটির পশ্চিমাংশ ভেঙে ফেলা হয়৷
কবির স্ত্রী অধ্যাপক দিলারা হাফিজ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়াই আজ সকালে পুলিশ এসে বাড়ির পশ্চিম অংশ ভেঙে ফেলে৷ এরপর তারা আমাদেরকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসবাবপত্র ও জরুরি জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান মুলতবি করে।'
শিক্ষা ক্যাডারের প্রভাষক হিসেবে বাড়িটির বরাদ্দ পেয়েছিলেন দিলারা হাফিজ। তিনি সরকারি বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ এবং সর্বশেষ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড ঢাকার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর অবসর নেন।
'বাড়িটি নিয়ে আদালতের স্টে অর্ডারও আছে' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে পরিত্যক্ত ভবনটি আমাকে বসবাসের জন্য দিয়েছিল সরকার। এরপর থেকে আমরা এই ভবনে বসবাস করি৷ কবি রফিক আজাদের অধিকাংশ কবিতা এই ভবনে বসে লেখা৷'
'এক ছাদের নিচে আমাদের বাসার পাশের অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে' জানিয়ে দিলারা হাফিজ বলেন, '২০১৬ সালে রফিক আজাদ মারা যাওয়ার পর থেকে আমরা তার স্মৃতি রক্ষার্থে এই ভবনটি সংরক্ষণের জন্য সরকারের কাছে বারবার চিঠি দিয়েছি। সর্বশেষ গত ১১ এপ্রিল উপদেষ্টা আদিলুর রহমানের সঙ্গেও দেখা করেছি। তিনি আমাদেরকে জানান, এটা আইনের বিষয়, আইন নিজস্ব গতিতে চলবে৷ এরপর আমাদেরকে কোনো প্রকার নোটিশ না দিয়ে আজ সকালে ভাঙার কাজ শুরু করে৷ তারা বাড়িটি ফাঁকা করার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় বেঁধে দেননি৷'
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের মিরপুর বিভাগ-২ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৈয়ব-উর-রহমান আশিক দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, অভিযানে কবি রফিক আজাদের বাড়িটি ভাঙা হয়নি।
তিনি বলেন, 'সেখানে চারটি একতলা ভবন রয়েছে, যার সবগুলো ভাড়াটিয়াদের দখলে। এর মধ্যে কবি রফিক আজাদের বাসভবনসহ দুটি ভবনের বিষয়ে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থার আদেশ আছে। আমরা রফিক আজাদের বাড়ির পেছনের দুটি ভবন ভেঙে ফেলেছি।'
আশিক বলেন, 'কবি রফিক আজাদের বাসভবনের কোনো অংশ ভাঙা হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, তার বাড়ির সীমানা প্রাচীর পুনর্নির্মাণ করা হবে।'
Comments