জাতীয় ঐক্যমত্য: আজ থেকে শুরু দ্বিতীয় দফার আলোচনা

প্রথম দফায় আলোচনা শেষে যেসব মতানৈক্য ছিল সেগুলো দূর করতে আজ সোমবার থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় সংলাপ শুরু করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
কমিশনের চেয়ারম্যান এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ বিকাল সাড়ে ৪টায় দ্বিতীয় দফার সংলাপ শুরু করবেন। ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আজাদ মজুমদার গতকাল বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
সংবিধান, বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের ওপর গঠিত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কমিশনের জমা দেওয়া সুপারিশ পর্যালোচনা এবং চূড়ান্ত করার জন্য ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়েছিল।
১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত আলোচনার প্রথম ধাপে ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক হয়।
প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কারের বিষয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঐক্যমতে পৌঁছালেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাদের মতানৈক্য ছিল।
দলগুলো নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু, এর গঠন ও মেয়াদ এবং প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে মতানৈক্য রয়ে গেছে।
সংসদে ১০০ সদস্যের উচ্চকক্ষসহ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা গঠন এবং বিরোধী দলকে ডেপুটি স্পিকারের ভূমিকা প্রদানের বিষয়েও তারা একমত।
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব কিংবা ভোটের মাধ্যমে উচ্চকক্ষের সদস্যদের নির্বাচন পদ্ধতির বিষয়টি এখনও অমীমাংসিত। আবার কিছু দল চাইছে বর্তমান এককক্ষবিশিষ্ট সংসদই থাকুক।
একজন সর্বোচ্চ দুইবার প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন—এই প্রস্তাবনা নিয়েও দলগুলো বিভক্ত।
প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা সীমিত করার প্রস্তাব, বিশেষ করে একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, দলীয় প্রধান ও সংসদ নেতার পদ ধারণের ক্ষমতা রদ করার প্রস্তাবেও রয়েছে মতানৈক্য।
প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ ও আইনি মানদণ্ড তদারকি করার জন্য 'জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল' গঠনের প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো তীব্রভাবে বিভক্ত। সাংবিধানিক কাউন্সিলের গঠন এবং ক্ষমতা নিয়েও তাদের দ্বিমত রয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলো 'সমতা, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং গণতন্ত্র'কে রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে গ্রহণ করার বিষয়ে একমত। কিন্তু, সংবিধানের মৌলিক নীতি হিসেবে 'বহুত্ববাদ' শব্দটি যোগ করার বিষয়ে তাদের মতানৈক্য রয়েছে।
Comments