‘ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই, সেটা এখনো শুরুই হলো না’

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বলেছেন, আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই, সেটা এখনো শুরুই হলো না।
তার ভাষ্য, 'গত বছর আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি থেকে শুরু করে উচ্চপর্যায়ের সব কর্মকর্তা। সবাই এসেছেন, সহানুভূতি জানিয়েছেন, আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা কেবল আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই। সেটা এখনো শুরুই হলো না।'
আজ বুধবার সকালে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত শেষে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, 'আমার ভাই যে, বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে শহীদ হলো, সেই লড়াইয়ে আজ দেশের মানুষ নতুন একটা স্বাধীনতা পেয়েছে। আজ এক বছর পূর্ণ হলো, কিন্তু বিচারিক অগ্রগতি বলতে কিছুই নেই। দেশ-বিদেশের মানুষ জানে, আমার ভাই পুলিশের গুলিতে মারা গেছে। এ সত্য গোপন নয়। তবুও বিচার কোথায়?'
তিনি প্রশ্ন করেন, 'এই দুঃখের কথা আমি কার কাছে বলব? কার কাছে যাব? কোনো ভাষা খুঁজে পাই না।'
তার ভাষ্য, 'আবু সাঈদের আত্মত্যাগ একটি প্রজন্মকে মুক্তভাবে কথা বলার সাহস দিয়েছে।'
'অনেক ভাই আমাদের বাড়িতে এসে বাবার পা ধরে কেঁদেছে। বলেছে—আপনার ছেলের কারণে আমরা বাঁচতে পারছি। কেউ বলেছে—আমার ফাঁসির আদেশ হয়েছিল, ফিরে এসেছি। আবু সাঈদের রক্ত আমাদের মুখে ভাষা দিয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রের বিচার কাঠামো এখনো নিশ্চুপ,' বলেন তিনি।
রমজান আলী বলেন, 'প্রধান উপদেষ্টা একজন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ব্যক্তি। কিন্তু রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়িতে তাকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। যদি তাকে সময় ও সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে দেশে সত্যিকার সংস্কার হবে, মানুষ ভোট ও বাকস্বাধীনতা ফিরে পাবে।'
'দেশ বদলে গেছে। সংবিধানও বদলানো দরকার। সেটা না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন বা নাগরিক অধিকার নিশ্চিত হবে না। আবু সাঈদ যে আলো জ্বালিয়ে গেছেন, সেটা বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার আলো,' যোগ করেন তিনি।
২০২৪ সালের ১৬ জুলাই রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মিছিলে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ
Comments