রাজশাহীতে সামরিক মর্যাদায় সমাহিত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ীতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগরকে তার নিজ শহর রাজশাহীতে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় সমাহিত করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে কুর্মিটোলা প্যারেড গ্রাউন্ডে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে বিকেল ৩টা ২০ মিনিটের দিকে তার মরদেহ রাজশাহীতে পৌঁছায়।
এরপর তার মরদেহ রাজশাহী মহানগরীর উপশহরের বাসভবনের সামনে নেওয়া হয়। সেখানে আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও পরিচিতজনেরা তাকে শেষ বিদায় জানান।
পরে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে রাজশাহী জেলা স্টেডিয়ামে তার দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে মরদেহ নেওয়া হয় শহরের সপুরা কবরস্থানে, যেখানে বিকেল ৫টার দিকে তাকে দাফন করা হয়।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, তৌকির ২০১০ সালে পাবনা ক্যাডেট কলেজে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। এরপর ২০১৬ সালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগ দেন।
তার স্ত্রী নিঝুম ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। তার বাবা তোহুরুল ইসলাম ব্যবসায়ী ও মা সালেহা খাতুন গৃহিণী। তৌকিরের একমাত্র বোন তাসনিয়া ইসলাম সৃষ্টি রাজশাহীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ছেন।

তৌকিরের নানা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আজিজুর রহমান বলেন, 'আমার নাতি অনেক ভালো ছেলে ছিল। কিছুদিন আগে তার বিয়ে হয়। নতুন জীবন শুরু করেছিল তারা। কিন্তু এখন নাতবউ একা হয়ে গেল।'
'এটা তৌকিরের প্রথম ফ্লাইট ছিল, একা একা। আমরা কত আনন্দিত ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করেই সব শেষ হয়ে গেল', বলেন তিনি।
তৌকিরের চাচা সাদিকুল ইসলাম বলেন, 'সাগরকে এলাকার সবাই খুব ভালোবাসতো। তার মতো ভালো ছেলেকে হারানোর বেদনা আমাদের সারাজীবন তাড়িয়ে বেড়াবে।'
তৌকিরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাবনা ক্যাডেট কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল মনিরুল ইসলাম বলেন, 'তৌকির খুবই মেধাবী ছিল। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দূরদর্শিতাপূর্ণ বক্তব্য দিত সে। কলেজের যেকোনো সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামে মেন্টরিং করতো, দিকনির্দেশনা দিতো। নিজ বাহিনীতেও সে এই কাজগুলো চালিয়ে যেতো।'
রাজশাহীর উপশহর এলাকার বাসিন্দা রুবিনা আফরোজ বলেন, 'তৌকির একজন মেধাবী পাইলট ছিল। কেন আমরা এমন চৌকস পাইলটদের হারাব? কেন আমাদের মায়েদের বুক খালি হবে?'
Comments