পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক, সই হবে ৫ সমঝোতা স্মারক

ছবি সৌজন্য: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের মধ্যে এই দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শুরু হয়েছে।

আজ রোববার সকালে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এই বৈঠক হয়। প্রথমে দুই নেতা একান্তে কিছুক্ষণ আলোচনা করেন। এরপর নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধিদল নিয়ে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসেন তারা।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সব দিক এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, বৈঠকে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে—কূটনৈতিক ও অফিশিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার, ব্যবসা-বাণিজ্য বিষয়ে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রতিষ্ঠা, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) ও অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস অব পাকিস্তানের মধ্যে সহযোগিতা এবং দুই দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমির মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা।

পাকিস্তানের প্রতিনিধিদলে দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খানও রয়েছেন। আজ দিনের শেষে প্রতিনিধিদলটির প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে। সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গেও তাদের বৈঠকের কথা রয়েছে।

২০১৩ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর নেতা আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ের পর পাকিস্তানের এক মন্তব্যের জেরে ঢাকা ও ইসলামাবাদের সম্পর্কে অবনতি ঘটে। গত বছর বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সেই সম্পর্ক উন্নয়নের নতুন করে প্রচেষ্টা শুরু হয়।

এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বেড়েছে, যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৮৬৫ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। পাকিস্তানে বাংলাদেশের রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ৭৮ মিলিয়ন ডলারে, যা আগের বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে, পাকিস্তান থেকে আমদানি ২৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

সম্পর্ক উন্নয়নের অংশ হিসেবে গত আগস্টে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ভিসা ও বাণিজ্য নীতিও শিথিল করা হয়েছে। ঢাকা-করাচি সরাসরি ফ্লাইট চালুর প্রস্তুতিও চলছে। পাকিস্তানের উড়োজাহাজ সংস্থা ফ্লাই জিন্নাহ ও এয়ার সিয়াল ইতোমধ্যে অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছে এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সও পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করার কথা বিবেচনা করছে।

এর আগে, দীর্ঘ ১২ বছর পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট আতিফ ইকরাম শেখের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের পাকিস্তানি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুই দশক ধরে স্থগিত থাকা যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠক আগামী সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে আয়োজনের পরিকল্পনা করছে দুই পক্ষ। সেই বৈঠকে যোগ দিতে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব ঢাকা সফরে আসতে পারেন।

Comments

The Daily Star  | English

‘For 15 years I fought for BNP leaders and activists, today they pushed me’

Rumeen Farhana says she was almost knocked down during clash at EC over Brahmanbaria boundaries

2h ago