খুলনা শিপইয়ার্ড সড়কে ধানের চারা রোপণ করে প্রতিবাদ

খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক নির্মাণ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে সড়কে ধানের চারা রোপণ করে প্রতীকী প্রতিবাদ করেছে নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) খুলনা মহানগর শাখা।
এসময় খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (কেডিএ) লাল কার্ড প্রদর্শন করে ক্ষোভ জানানো হয়।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রূপসা সেতুর পশ্চিম পাশে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে নাগরিক সমাজের নেতাসহ স্থানীয়রা সংহতি প্রকাশ করেন।
বক্তারা অভিযোগ করেন, খুলনার অন্যতম ব্যস্ত সড়ক রূপসা ট্র্যাফিক মোড় থেকে খানজাহান আলী সেতু পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার পথ দীর্ঘ ১২ বছরেও সংস্কার হয়নি। ভাঙাচোরা সড়কে বড় বড় গর্ত ও উঁচু-নিচু স্থানে প্রতিদিন হাজারো মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এ অবস্থায় সড়কটি 'মৃত্যুফাঁদে' পরিণত হয়েছে।
তারা বলেন, সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহাবুব ব্রাদার্স। কিন্তু অনিয়ম ও গাফিলতির কারণে কাজ শেষ হয়নি। কেডিএ শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করলেও ইতোমধ্যে যে কাজ হয়েছে তা নিম্নমানের। ফলে কোথাও কোথাও বড় বড় গর্ত তৈরি হয়ে পানিতে ভরে আছে, আবার সড়কের দুইপাশ খুঁড়ে বছরের পর বছর ফেলে রাখায় জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে।
প্রতিবাদকারীরা প্রশ্ন তোলেন, যখন প্রকল্প বাস্তবায়নে এমন ধীরগতি ও ব্যর্থতা, তখন কেন ওই ঠিকাদারকে প্রায় ৭০ কোটি টাকা দেওয়া হলো? কেন তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হলো না?

বক্তাদের মতে, সড়ক প্রকল্প ব্যর্থ হওয়ার দায় কেডিএ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান উভয়কেই নিতে হবে।
তারা অবিলম্বে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং দ্রুততম সময়ে সড়কটির কাজ শেষ করার আহ্বান জানান। অন্যথায় কেডিএ ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বাড়ি ঘেরাও করার হুমকি দেন তারা।
কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন নিসচার খুলনা মহানগরের সভাপতি শেখ মো. নাসির উদ্দিন। সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মুন্নার সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব বাবুল হাওলাদার। এ ছাড়া, বক্তব্য দেন বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান বাবু ও আমরা বৃহত্তর খুলনাবাসীর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক সরদার আবু তাহের প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ৩ দশমিক ৭৭৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি ২০১৩ সাল পর্যন্ত খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) নিয়ন্ত্রণে ছিল। সেসময় থেকেই সড়কটি ভাঙাচোরা অবস্থায় ছিল। ২০১৩ সালের ৭ মে সড়কটি চার লেনে পুনর্নির্মাণের জন্য একনেকে ৯৮ কোটি ৯০ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন করে কেডিএ। তবে দীর্ঘ ৯ বছর পর কাজ শুরু হয়। এরমধ্যে সড়কটি একেবারে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
Comments