বিএনপি মহাসমাবেশের নামে চট্টগ্রামে ফ্লপ সমাবেশ করেছে: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপি ৩ মাস হাঁকডাক করে মহাসমাবেশ নাম দিয়ে একটি ফ্লপ সমাবেশ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি আরও বলেন, সারা দেশ থেকে সন্ত্রাসীদের চট্টগ্রামে এনে হোটেল ভাড়া করে রেখেছে। পরদিন তাদের নিয়ে সমাবেশ করেছে। চট্টগ্রামে জব্বারের বলি খেলায় এর চেয়ে অনেক বেশি মানুষ হয়। সাধারণ মানুষের কোনো সম্পৃক্ততা এই সমাবেশে ছিল না।
আজ শনিবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ এবং বিভিন্ন আসনের সংসদ সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়ে অংশ নেন তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণকে নিয়ে রাজনীতি করে। আমরা জনগণকে নিয়েই আগামী মাসে গণসমাবেশ ও মিছিল করবো চট্টগ্রামের প্রত্যেকটি উপজেলা ও থানায়। তার পরে চট্টগ্রাম শহরে আমরা জেলা সমাবেশ করবো।
মতবিনিময় সভা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি চট্টগ্রামে সমাবেশ থেকে নানা ধরনের আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছে। সেই সমাবেশে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গা থেকে সন্ত্রাসীদের সমাবেশ ঘটিয়েছে। চট্টগ্রামসহ সারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির একটি ছক এঁকেছে। সেই প্রেক্ষাপটে আমরা রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আমাদের করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করার জন্য আজকে আমরা বসেছি।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন বিএনপি চট্টগ্রামে যে সমাবেশ করেছে, তার প্রস্তুতি তারা দীর্ঘ ৩ মাস ধরে নিয়েছে। প্রস্তুতি নিয়ে তারা বলেছিল, ১৫ লাখ মানুষের সমাগম হবে। এখান থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ১৮০ কিলোমিটার, টেকনাফের দূরত্ব ২৫০ কিলোমিটার, সেখান থেকেও মানুষ এনেছে। তারা পলোগ্রাউন্ড মাঠের ৪০ শতাংশ পেছনে রেখে মঞ্চ করেছে। আর সামনের যে অংশ তার অর্ধেকও পূর্ণ হয়নি। অর্থাৎ পলোগ্রাউন্ড মাঠের এক-তৃতীয়াংশও ঠিক মতো পূর্ণ হয়নি। চট্টগ্রামে জব্বারের বলি খেলায় যত মানুষ হয়, তার চেয়েও অনেক কম মানুষ হয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে, জব্বারের বলি খেলায় অনেক বেশি মানুষ হয়। বিএনপি হাঁকডাক করেও মহাসমাবেশ নাম দিয়ে একটি ফ্লপ সমাবেশ করেছে।
বিএনপি যে প্ল্যাটফর্মে সমাবেশ করেছে সেখানে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর প্রতিবাদ হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর কথা বলার কারণে জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম ষড়যন্ত্র মামলা নামে ৩টি মামলা দিয়েছিল। মৌলভী সৈয়দকে নির্যাতন করে মেরেছে, সে বিষয়ে আপনাদের অবস্থান কী সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান আসলে ইতিহাসের পাতায় একজন খুনি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। তিনি নাস্তা করতে করতে ফাঁসির আদেশে সই করতেন। এমন ঘটনাও ঘটেছে, ফাঁসি কার্যকর হয়ে গেছে, রায় হয়েছে ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর। তারা যে এই চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, সেগুলো নিয়ে ইতোমধ্যে যারা সেই নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের শিকার তারা সরব হয়েছেন। আমরা সেগুলোকে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যাব।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান বিনা বিচারে হাজার হাজার সেনাবাহিনীর অফিসার-জওয়ানদের হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগের লখো কর্মীকে হত্যা করেছেন তিনি। আপনারা জানেন, যারা জিয়াউর রহমানের নির্মম নির্যাতন আর বিনা বিচারে হত্যার শিকার হয়েছেন তারা কদিন আগে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে 'মায়ের কান্না' ব্যানারে একটি অনুষ্ঠান করেছে। সেখানে একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়েছে। সেখানে আমি নিজেও ছিলাম, সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির এক দফা দাবি সরকারের পতন, এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি গত ১৪ বছর ধরেই এই আন্দোলনের মধ্যে আছে। আমরা সরকার গঠনের দুয়েক মাস পর থেকেই তারা সরকারকে বিদায় দেওয়ার আন্দোলনের মধ্যে আছে। আন্দোলন করতে করতে দেখা গেল, তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাদের আন্দোলনের মধ্যেই জনগণ পরপর ৩ বার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব আমাদের দিয়েছে। তারা এই আন্দোলন করার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মনে করি, আগামী নির্বাচনে ভোট আমাদের আরও বাড়বে ইনশাল্লাহ।
তিনি বলেন, বিএনপি সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের পথেই হাঁটছে, তারা যাতে কোনো সংঘাত সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য সতর্ক দৃষ্টি রাখতে আমাদের নেতা-কর্মীদের অনুরোধ জানিয়েছি। কারণ তারা সংঘাত চায়। তবে তারা সংঘাতের পথে হাঁটলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর জবাব দেওয়া হবে।
Comments