‘খেলা বন্ধে’র দাবি তুলে সুস্থধারার রাজনীতি চালুর আহ্বান হারুনের

সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। ফাইল ছবি

রাজনৈতিক ময়দানের আলোচিত উক্তি 'খেলা হবে' এবার জাতীয় সংসদেও পৌঁছালো। 

আজ বুধবার জাতীয় সংসদের বৈঠকে বিএনপি দলীয় সদস্য হারুনুর রশীদ পয়েন্ট অব অর্ডারে দাড়িয়ে আলোচনার সূত্রপাত্র ঘটান। পরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দাঁড়িয়ে এই উক্তি পুনর্ব্যক্ত করেন। 

হারুনুর রশীদ খেলা বন্ধের দাবি তুলে সুস্থধারার রাজনীতি চালুর আহবান জানান। জবাবে ওবায়দুল কাদের খেলা চালু রাখার ঘোষণা দিয়ে বলেন, খেলা হবে অগ্নি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে। লুটপাটের বিরুদ্ধে।

হারুন তার বক্তব্যে বিএনপির সমাবেশে বাধা সৃষ্টি করে জনঅসন্তোষ ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টির অভিযোগ তুলে বলেন, দেশ এখন জনদুর্ভোগের দেশে পরিণত হয়েছে। এই জনঅসন্তোষ লাঘবে সরকারের কোনো পদক্ষেপ আছে বলে মনে হয় না।

বিমানবন্দর সড়কে যানজটের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, যানজটের কারণে সরকারকে পথচারীরা গালিগালাজ করছে। এটা একদিনের সমস্যা নয়। ঢাকা-গাজীপুর সড়কে প্রতিনিয়ত জনদুর্ভোগ হচ্ছে।

সড়ক পরিবহনমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তিনি প্রায়ই বলছেন খেলা হবে। আগামী ১০ ডিসেম্বর খেলা হবে। এমন খেলা দেখতে চাচ্ছি না যে জনদুর্ভোগে মানুষ পড়েন। এ দেশে দ্রব্যমূল্য, বিদ্যুত এগুলো নিয়ে গত কয়েক মাস যাবৎ সভা-সমাবেশ করছে। একে কেন্দ্র করে কেন পরিবহন বন্ধ করছেন? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করলে বলেন, কী কারণে পরিবহন বন্ধ হয়েছে বলতে পারব না। তাহলে দেশ চালাচ্ছেন কেন আপনারা? আগামী ৫ তারিখে বরিশালে সমাবেশ হবে। লঞ্চ বন্ধ, বাস বন্ধ, থ্রি-হুইলার বন্ধ। ট্রেন বন্ধ। সবকিছু বন্ধ। এর ফলশ্রুতিতে যে জনঅসন্তোষ তৈরি হচ্ছে তা কল্পনা করা যায় না। যোগাযোগ মন্ত্রী আছেন দয়া করে দুর্ভোগ কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেন। জনদুর্ভোগ আর বাড়াবেন না। জনদুর্ভোগে যে জনঅন্তোষ তৈরি হচ্ছে তাতে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হবে।  

হারুন বলেন, সরকারকে বলব রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ফিরে আসুন। দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধী দলকে যে সভাসমাবেশ করতে দেন না। সেই জায়গায় একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনুন। খেলা বন্ধ করুন। খেলা বন্ধ করে সত্যিকার অর্থে দেশকে একটি গণতান্ত্রিক পথে নিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ নেন।

হারুনের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, পদ্মাসেতু হয়ে গেছে, মেট্রো রেল সামনে হচ্ছে। এলিভেটেড এগিয়ে গেছে। কর্ণফুলী টানেল রেডি। কী চান আর? একটা সরকার এতগুলি প্রজেক্ট করেছে। যেদিকে তাকান ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস, ওভার পাস। আপনাদের সময়য় কী ছিল? জিরো। ওই জিরোর বিরুদ্ধে খেলা হবে। ওই জিরো যে করছেন! ভোগান্তিতে রাখছেন লাখোকোটি মানুষকে।

ঢাকা-গাজীপুর বিআরটি প্রকল্পের প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, গাজীপুরে পানির লাইন খুবই খারাপ। নিজেও এই পরিস্থিতির কথা স্বীকার করে বলেন প্রকাশ্যে বলেছি প্রকল্পটা ডিজাইনে একটু ক্রুটি ছিল। সে কারণে সমস্যা হয়েছে। কিন্তু আজকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক। ওই রাস্তা এখন স্বাভাবিক। এত কাজ সরকার করছে-একটাতে ভুল ত্রুটি হতে পারে। সরকার অস্বীকার করেনি।

বিএনপির জনসভাকে কেন্দ্র করে পবিহন ধর্মঘট নিয়ে হারুনের অভিযোগের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বাস ধর্মঘট কেন হয়েছে শিমুল বিশ্বাসকে (বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান) জিজ্ঞেস করুন। কেন মন্ত্রী বলবে? সে পরিবহনের নেতা। সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট। সেক্রেটারি বাসদ। প্রেসিডেন্ট আওয়ামী লীগ (শাজাহান খান)। আর মালিক সমিতির প্রেসিডেন্ট রাঙ্গা, জাতীয় পার্টি। সেক্রেটারী আওয়ামী লীগ-এনায়েত। ভাইস প্রেসিডেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের শিমুল বিশ্বাস। সে কোন দলের? সে একটা স্টেটমেন্ট দেয় না কেন? সে কি বিএনপি? না কি অন্য কোনো দল? আপনাদের দলের নেতা। তাকে জিজ্ঞেস করেন।

সড়ক মন্ত্রী বলেন, আগুনে বাস পোড়ালে ভালো লাগে। বাসওয়ালারা এখন আর বিএনপিকে বিশ্বাস করে না। এরা বিএনপিকে দেখলেই মনে করে আগুন নিয়ে আসছে। বিএনপিকে দেখলেই মনে করে পেট্রোল বোমা। বিএনপিকে দেখলেই মনে করে ককটেল। এখন আবার পতাকা! লাঠিসোটার সাথে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা।

খেলা অব্যাহত থাকার ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, খেলা হবে। এর বিরুদ্ধেই খেলা হবে। আমি বলছি খেলা হবে-খুনের রাজনীতির বিরুদ্ধে। খেলা হবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। খেলা হবে আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। খেলা হবে লুটপাটের বিরুদ্ধে। খারাপ কী বলেছি?

Comments

The Daily Star  | English

$1b a year needed to hit 2030 green energy goal

Bangladesh needs to expand its renewable energy capacity by 21 percent annually to meet its latest green energy target by 2030, requiring nearly $1 billion in yearly investment, according to a study by the Institute for Energy Economics and Financial Analysis (IEEFA).

13h ago