দেশের কিছু মানুষের গণতান্ত্রিক সরকার ভালো লাগে না: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

দেশের কিছু মানুষের গণতান্ত্রিক সরকার ভালো লাগে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ শনিবার সকালে গণভবনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সভা শেষে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দাহিলানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সারা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। খালি চোখে দেখে না আমাদের দেশের কিছু মানুষ। তাদের কিছুই ভালো লাগে না। এই গণতান্ত্রিক সরকার তাদের ভালো লাগবে না। অগণতান্ত্রিক কিছু হলে তাদের মূল্যটা বাড়ে। এটাই তারা ভাবে। বাংলাদেশে সেই খেলাই খেলতে চায় তারা। বারবার তো সেই খেলা চলেছে দীর্ঘ দিন। ২০০৮ এ নির্বাচনের পরে একটানা গণতান্ত্রিক ধারা আছে বলেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্বে আবার সেই মর্যাদা পেয়েছে। এর আগে বাংলাদেশের নাম শুনলে মনে করতে দুর্ভিক্ষ-ঝড়-দরিদ্র। এভাবেই ছোট চোখে দেখতো। এখন তো আর সেই ছোট চোখে আর বাংলাদেশকে দেখতে পারে না! কারণ আমরা বিজয়ী জাতি। জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করেই চলবো আমরা। সেটাই করছি।

আওয়ামী লীগ জনগণের কল্যাণে কাজ করে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এখানে আমরা নিজেদের ভাগ্য গড়তে তো আসিনি। গড়ছি বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য। বৃত্তি-উপবৃত্তি, মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি পুষ্টি নিরাপত্তা দিচ্ছি। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ৩০ প্রকার ওষুধ বিনা পয়সায় দিয়ে দিচ্ছি। কবে কে করেছে বাংলাদেশের মানুষের জন্য এত কাজ? এতবার তো ক্ষমতায় ছিল সবাই। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া ছিল, কোথায় মানুষের কল্যাণে তারা তো কখনো করেনি! করেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগই করে।

এ সময় আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা বলেন, কোনো শ্রেণি-পেশার মানুষ বাদ যায়নি।

তিনি বলেন, আমরা যেমন উপায় করছি, খরচা করছি। আমরা খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়েছি। যেটা আমাদের প্রয়োজন তার থেকে বেশি উৎপাদন করছি। তারপরও আমরা আরও খাদ্য সব সময় মজুত রাখি আপৎকালের জন্য। আমাদের দেশের মানুষ যেন কোনো রকম কষ্ট না হয়।

বেশি দাম দিয়ে সব জিনিস কিনে নিয়ে এসে কম দামে দিচ্ছি যাতে কোনো মানুষ খাদ্যে কষ্ট না পায়। টিসিবির কার্ডের মাধ্যমে চাল, ডাল, তেল, চিনি ভর্তুকিতে দিচ্ছি। ১ কোটি মানুষ এটা পাচ্ছে। প্রায় ৫০ লাখ মানুষকে আমরা ১৫ টাকায় দিচ্ছি আর ৫০ লাখ পরিবার পাচ্ছে বিনা পয়সায়। যারা গৃহহীন-ভূমিহীন তাদের ঘর করে দিচ্ছি। আমরা একটি হিসাব নিয়েছি বাংলাদেশে কত গৃহহীন-ভূমিহীন মানুষ আছে। জাতির পিতা এই প্রকল্পটা হাতে নিয়েছিলেন। এখন খুব কম লোক আছে। আগামীতে আরও ঘর আমরা দেবো। যাদের ঠিকানা ছিল না, এ ধরনের যত মানুষ পাচ্ছি আমরা খুঁজে খুঁজে বের করে ঘর দিচ্ছি, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, কিছু দিন আগে বন্যা হয়ে গেল। নদী ভাঙনে যারা ভূমিহীন আমরা তাদেরও ঘর করে দেবো। 

শেখ হাসিনা বলেন, কথা ছিল সব ঘরে ঘরে আলো জ্বালবো। আমরা প্রত্যেক ঘরে বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হয়েছি। এখন এই ইউক্রেনের যুদ্ধের পর যেহেতু তেল কিনতে, গ্যাস আনতে অসুবিধা হচ্ছে আর শুধু আমাদের দেশ না, ইংল্যান্ড, জার্মানি; তারাই তো জ্বালানি সাশ্রয়ের দিকে নজর দিচ্ছে। তারা নিজেরাই তো হিমশিম খাচ্ছে। সেখানেও কিছু দিনের জন্য আমাদের কষ্ট পেতে হয়েছে। ইনশাল্লাহ হয়তো আগামী মাস থেকে এত কষ্ট আর থাকবে না। তারপরও আমি বলবো, তেল-পানি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে। মিতব্যয়ী হতে হবে। কারণ সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। তার প্রভাব থেকে আমরা মুক্ত না। সে জন্য আমি আহ্বান করেছি, আমাদের যেহেতু জমি আছে, ১ ইঞ্চি জমি যাতে খালি না থাকে। যে যা পারেন উৎপাদন করেন। ছাদ বাগান করেন, জমিতে ফসল ফলান। কারণ সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক অবস্থা কিন্তু খুবই খারাপ। খুবই ভয়ানক অবস্থা। সেখানে আমরা যে এখনো চলছি, আমাদের নিজেদের উৎপাদন নিজেরা বাড়াতে পারলে আমাদের কোনোদিন দুর্ভিক্ষের আঁচ বাংলাদেশে লাগবে না। এটা হলো বাস্তবতা। আমাদেরটা আমাদেরই করে নিতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

US officials preparing for possible strike on Iran in coming days, Bloomberg reports

Iran and Israel continue to attack each other on Wednesday night, as Donald Trump weighs US involvement

10h ago