রাজনীতি

নারায়ণগঞ্জে ২ পক্ষের সংঘর্ষে ইউনিয়ন আ.লীগের সম্মেলন স্থগিত

নারায়ণগঞ্জে সভাপতি পদে ২ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জে ২ পক্ষের সংঘর্ষে ইউনিয়ন আ. লীগের সম্মেলন স্থগিত
শনিবার সন্ধ্যায় দ্বিতীয় অধিবেশন শেষে ভোটগ্রহণের সময় মারামারির ঘটনা ঘটলে সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জে সভাপতি পদে ২ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যায় দ্বিতীয় অধিবেশন শেষে ভোটগ্রহণের সময় মারামারির ঘটনা ঘটলে সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করা হয়।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, ২০০৩ সালে সর্বশেষ সদর উপজেলার বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময় আফাজউদ্দিন ভূঁইয়া সভাপতি ও কামরুল ইসলাম ভূঁইয়া সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২ বছর আগে সভাপতি মারা গেছেন। ১৮ বছর পর এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বক্তাবলী ইউনিয়ন শামীম ওসমানের সংসদীয় আসনের আওতাধীন।

এবার সভাপতি পদে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক মাহমুদ ও ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সদস্য আবুল হোসেন প্রার্থী ছিলেন। সাধারণ সম্পাদক পদে ৩ প্রার্থী ছিলেন। তারা হলেন- বর্তমান সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, ফতুল্লা থানা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাবুল মিয়া।

দুপুর আড়াইটায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদল। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল। বিশেষ অতিথি ছিলেন থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম শওকত আলী। তিনি এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানও।

সম্মেলনে উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতা ও সাংবাদিকরা জানান, চেয়ারে বসা নিয়ে প্রথমে কর্মীদের মধ্যে হৈ-চৈ হয়। পরে এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে দুই সভাপতি প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। উভয়পক্ষের লোকজন হট্টগোল শুরু করে দেয়। এক পর্যায়ে তারা জেলা ও থানা আওয়ামী লীগের নেতাদের উপস্থিতিতেই চেয়ার ছুড়ে

মারামারির ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে।

সম্মেলন স্থগিত ঘোষণার পর শওকত আলী সাংবাদিকদের বলেন, 'নিশ্চিত পরাজয় জেনে শফিক মাহমুদের সমর্থকরা অবৈধ প্রভাব বিস্তারের জন্য সুন্দর একটি সম্মেলনকে বিঘ্নিত করেছে। সংঘর্ষ এড়াতে জেলার সাধারণ সম্পাদক সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করেন। এটি শামীম ওসমানের নির্বাচনী এলাকা। এই ধরনের দুর্ঘটনা ওনার নির্বাচনী আসনে ঘটলো। আমরা সংসদ সদস্যের সাথে পরামর্শ করবো। ওনার পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।'

সভাপতি প্রার্থী আবুল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শফিক মাহমুদের পক্ষে তার কর্মী-সমর্থকরা উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেন। পরে সিনিয়র নেতারা সম্মেলন স্থগিত করে দেন।'

এদিকে জানতে চাইলে শফিক মাহমুদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শুরুতেই অনিয়ম হয়েছে সম্মেলনে। দ্বিতীয় অধিবেশন শেষ হওয়ার আগে আপত্তি থাকার পরও ২ জনের ভোটগ্রহণ করা হয়। এরপর প্রকাশ্যে ভোট দেওয়া হচ্ছিল যা আপত্তিকর। এই নিয়ে আমি প্রতিবাদ জানাই। শওকত আলী সভাপতি প্রার্থী আবুল হোসেনের পক্ষ নিয়েছেন। অনিয়মের প্রতিবাদ করলেও তিনি আমাকে থামিয়ে দেন।'

তিনি আরও বলেন, 'আমি চাই, সুষ্ঠু পরিবেশে আবারও ভোটগ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। কোন পক্ষপাতিত্ব নয়, তৃণমূল যাকে চায় সে-ই পদ পাবে।'

শফিক মাহমুদের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ প্রসঙ্গে কথা বলতে শওকত আলীর মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মাগরিবের নামাজ পড়ে আসার পর দেখি ২ পক্ষের মধ্যে হট্টগোল। শুনেছি, চেয়ারে বসা নিয়ে ঝামেলা শুরু হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় সম্মেলন স্থগিত করা হয়। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে থানা আওয়ামী লীগ এই বিষয়ে আপডেট দেবেন।'

Comments