গায়েবি মামলার বিষয়ে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন আইজিপি: বিএনপি

সারা দেশে দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া গায়েবি মামলার বিষয় খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক বলে জানিয়েছে বিএনপি।

রাজনৈতিক নিপীড়নমূলক বেআইনি, মিথ্যা ও গায়েবি মামলা বন্ধে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপির পক্ষ থেকে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) চিঠি দেওয়া হয়।

দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত চিঠি নিয়ে আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের সঙ্গে দেখা করেন বিএনপির কয়েকজন নেতা।

বিএনপির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

এ সময় ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারও উপস্থিত ছিলেন।

মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, কিছু দিন হলো আমরা দেখছি একই ধরনের মামলা হচ্ছে যার কোনোটার বাদী আওয়ামী লীগ বা এর অঙ্গ সংগঠনের কোনো নেতা, আবার কোনোটার বাদী পুলিশ। এজাহারের বর্ণনা একই রকম। আওয়ামী লীগ নেতাদের পাশাপাশি পুলিশের এক অংশ অতি উৎসাহিত হয়ে এই কাজগুলো করছে। সেই বিষয়টি আমরা ডিএমপি কমিশনার সামনে তুলে ধরেছি। আমরা বেশি কিছু জাতীয় দৈনিক পত্রিকার কপি প্রমাণ হিসেবে দিয়ে এসেছি। উনারা বলেছেন দেখবেন।

তিনি বলেন, তাদের (পুলিশ) কথা প্রসঙ্গে ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশের কথা উঠেছে। তারা আমাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে বলেছেন। আমরা বলেছি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আমরা আপনাদের কাছে চাইনি। কমিশনার বললেন, চাননি, আপনাদের কাগজে লেখা নেই সেটা ঠিক কিন্তু আপনারা তো মুখে মুখে বলেছেন।

আমরা বলেছি, একবার আপনারা বলেন টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে যান। আবার বলেন পূর্বাচলে বাণিজ্য মেলার মাঠে যান। তখন আমাদের মধ্যে থেকে কেউ হয়তো বলেছেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বা মানিক মিয়া এভিনিউ। সেই কথার ওপর ভিত্তি করে চিঠি দিয়ে দেবেন, এতটা উৎসাহ আমরা আশা করিনি—বলেন আলাল।

সংকট আস্থার উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেটা সরকারের আচার-আচরণ ও চালচলনের জন্য। আমরা ২০১৮তে অনেক সদিচ্ছা নিয়ে গিয়েছিলাম গণভবনে। তার পরে মামলার পরে মামলা, গুলি, প্রার্থী আটক। পরে গণমাধ্যমে এসেছে দুই হাত নেই, জন্মান্ধ; এমন মানুষও নাকি পুলিশের গাড়িতে হামলা করেছিল। সরকার পুলিশ ও বিএনপিকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। আমরা বলতে এসেছি, আপনারা আমাদের প্রতিপক্ষ নন। বরং সবাইকে সেবা দেওয়ার জন্য আছেন। পল্টনে আমরা সমাবেশ অনেক করেছি। ২০ দলীয় জোটের সমাবেশও হয়েছে। খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতেও হয়েছে আর গত কিছু দিন ধরে প্রায় প্রতিদিনই হচ্ছে। কোথাও কোনো অঘটনের চিহ্ন নেই। আর বিভাগীয় সমাবেশে এখন পর্যন্ত কিছু হয়নি। সুতরাং আপনাদের আশঙ্কা অমূলক। আমরা পল্টনে সমাবেশ করবো এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত। আপনাদের সদিচ্ছা থাকলে আমাদের নীতি-নির্ধারণী মহলে যোগাযোগ করতে পারেন।

পুলিশের মহাপরিদর্শকের সঙ্গে বৈঠক শেষে বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, 'বাংলাদেশে যে গায়েবি মামলা হচ্ছে, প্রতিনিয়ত পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের লোকজন বোমা ফাটিয়ে আমাদের লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে, গ্রেপ্তার করছে। সে বিষয়ে আমরা আইজিপিকে স্মারকলিপি দিয়েছি। তিনি আমাদের প্রতিনিধিদলের সবার বক্তব্য শুনেছেন। আমরা এর প্রতিকার চেয়েছি। উনি বলেছেন এগুলো খতিয়ে দেখবেন।'

আমরা পুলিশের কাছে ১৬৯টি গায়েবি মামলায় তালিকা দিয়েছি। গত ২২ আগস্ট থেকে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত এসব মামলায় এজহারভুক্ত আসামির সংখ্যা ৬ হাজার ৭২৩ জন, অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যা ১৫ হাজার ৫০ জন এবং ৫৫৯ জন গ্রেপ্তারের তালিকাও রয়েছে, বলেন বুলু।

তিনি আরও বলেন, 'সমাবেশের স্থলের বিষয়ে আমরা দুটি চিঠি উনাদের দিয়েছি। একটা ১৩ নভেম্বর ও আরেকটা ২০ নভেম্বর। দুটি চিঠিতেই আমরা নয়াপল্টনের স্থান চেয়েছি। আমরা দ্বিতীয় কোনো স্থান চাইনি। উনারা বলেছেন যে, আপনারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করেন, আমরা সব সহযোগিতা করবো। আমরা বলেছি, এটা আমাদের আজকে বিষয় না।'

গত মঙ্গলবার ডিএমপি ২৬ শর্তে বিএনপিকে ১০ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়।

Comments

The Daily Star  | English
government decision to abolish DSA

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

11h ago