সমাবেশের নামে নাশকতা করলে ছাড় দেওয়া হবে না: রাজশাহী আ. লীগ
'বিএনপির দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের' বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে রাজশাহী মহানগর ও কাটাখালী পৌর আওয়ামীলীগ। বিএনপি সমাবেশের নামে নাশকতা করলে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
বৃহষ্পতিবার বেলা ৩টায় কুমারপাড়াস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিলটি বের হয়। নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদিক্ষণ শেষে সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে এসে মিছিল শেষ হয়। মিছিল শেষে সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মো. ডাবলু সরকার সমাবেশে প্রায় ২০ হাজার মানুষ যোগ দিয়েছে বলে জানান।
মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনসহ আরও অনেকে।
খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, 'বিএনপির জন্য নির্বাচন থেমে থাকবে না। আপনারা সমাবেশ করছেন, আমরা জানি কেন করছেন। নির্বাচনও করবেন। এখন বলছেন, তত্ত্বাধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন করবেন না, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন করবেন না। আপনাদের জন্য নির্বাচন থেমে থাকবে না। নির্বাচনে আসেন, কিছু আসন পেলেও পেতে পারেন। জনগণ যদি ভোট দেয়, তাহলে কিছু আসন পেতে পারেন।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা যা জীবনেও কল্পনা করতে পারিনি, সেই রকম উন্নয়ন হয়েছে। বাংলাদেশে নদীর তল দিয়ে টানেল তৈরি হচ্ছে। ঈশ্বরদীতে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে, যেখানে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। সবদিক দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে কাঙ্ক্ষিত জায়গায় নিয়ে যাবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।'
বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা, যিনি স্বাধীনতা আনতে দেখেছেন, স্বাধীনতার সুতিকাগার দেখেছেন, তাকে গণতন্ত্র শেখাবার চেষ্টা করেন না মির্জা ফখরুল সাহেবেরা। আপনারা হেরে যাবেন, পারবেন না।'
'সরকার অনুমতি দিয়েছে সমাবেশ করেন। ভদ্রভাবে করেন, ৮ জেলা থেকে লোক নিয়ে এসে করেন, কোনোটাতে আপত্তি নেই। কিন্তু যদি শুনি কোথাও কোনো গাড়ি ভেঙেছেন, যানবাহনে আগুন দিয়েছেন বা জনগণের মাঝে অশান্তি তৈরি করেছেন, তাহলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কী করবে, সেটি তাদের ব্যাপার। কিন্তু দলীয়ভাবে আমরা ক্ষমতাসীন দল ছেড়ে দিতে পারি না। জনগণ আমাদের রায় দিয়েছে, জনগণের পক্ষে কাজ করার জন্য, উন্নয়ন দেবার জন্য, তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করবার জন্য, আমরা সেটি রক্ষা করতে ওয়াদাবদ্ধ,' বলেন তিনি।
কাটাখালীতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, 'জামায়াত-শিবির ছাড়া বিএনপি আন্দোলন করতে পারে না। এখন তাদের নিয়ে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে তারা। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও সহিংসতা ছড়ালে ছেড়ে দেওয়া হবে না।'
তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগ বন্দুকের নলে ভর করে আসেনি। জনগণের ভোটেই নির্বাচিত হয়। তাই ভয় দেখানোর চেষ্টা করবেন না, আমরা ভেসে আসিনি।'
'বিএনপির মতো যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে আমরা রাজনীতি করি না। আমি বিশ্বাস করি জামায়াত-শিবির ছাড়া বিএনপির কোনো নেতাকর্মী ৩দিন আগে চিড়া-মুড়ি নিয়ে সমাবেশে জড়ো হবে না,' বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'বিএনপির আমলের রাজশাহীতে বাংলা ভাই, জঙ্গির কথা মানুষ ভুলে যায় নাই।'
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন বলেন, 'সারাদেশে আন্দোলন ও সমাবেশের নামে সহিংসতা করলে বিএনপিকে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। বিএনপি ১৪ সালে নির্বাচনী পরবর্তী সময়ে সারাদেশে যেভাবে জ্বালাও পোড়াও করেছিল ঠিক তেমনিভাবে তারা এখন আবার দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে করার জন্য আবার নীল নকশা শুরু করেছে, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ এখন সচেতন।'
Comments