কুষ্টিয়া থেকে গোলাপবাগ পৌঁছানোর গল্প

কুষ্টিয়া থেকে গোলাপবাগ পৌঁছানোর গল্প
গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির সমাবেশ। ছবি: রাশেদ সুমন

পথে পথে পুলিশের চেকপোস্ট ও হয়রানি এড়িয়ে বিচ্ছিন্নভাবে সমাবেশে যোগ দিয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। কুষ্টিয়া থেকে রওনা দিয়ে নানা জায়গায় পুলিশের তল্লাশি এড়িয়ে অবশেষে সমাবেশ স্থলে পৌঁছে একজন বিএনপিকর্মী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কষ্ট হয়েছে, তবুও সমাবেশ এলাকায় পৌঁছাতে পেরেছি, আলহামদুলিল্লাহ।'

কুষ্টিয়া শহরের বাসিন্দা ওই বিএনপিকর্মী পেশায় উকিলের সহকারী। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাসা থেকে বের হয়ে বাসে করে দৌলদিয়া পৌঁছে সাড়ে ৪টার দিকে ফেরি পার হই। এরপর পাটুরিয়া এসে একটা বাসে উঠি। বাস কিছুদূর চলার পর বরঙ্গাইল এলাকায় চেকপোস্টে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের শিকার হই। তারা আমার ব্যাগ ও শরীর তল্লাশি করে কিছু না পেয়ে জানতে চায় কোথায় যাব। উত্তরে মানিকগঞ্জ যাব বলাল পর আর কিছুই বলেনি। এরপর বাস মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে নেমে একটা লোকাল বাসে উঠে। তার কারণ পুলিশ লোকাল বাসে আটকায় কম।'

'এরপর ধামরাই আসার পর আবারও চেকপোস্টে পুলিশ বাস থামিয়ে তল্লাশি করে। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাভারে পৌঁছে সেখানে এক আত্মীয়ের বাসায় রাত কাটিয়ে সকাল ৬টার দিকে আবার সমাবেশের উদ্দেশ্য রওয়ানা হই।'

পথে বিভিন্ন স্থানে গাড়ি থামিয়ে চলছে পুলিশের তল্লাশি। ছবি: স্টার

'সাভার থেকে একটি অটোরিকশায় করে হেমায়েতপুর পৌঁছায়। হেমায়েতপুর থেকে একটি বাসে উঠে আমিনবাজার পৌঁছালে পুলিশ চেকপোস্টে বাসটি থামিয়ে যাত্রীদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করে, ফোন চেক করে এবং শরীর তল্লাশি শেষে ছেড়ে দেয়।' 

তিনি বলেন, 'সেখান থেকে ছেড়ে দেওয়ার পর পায়ে হেঁটে গাবতলী হয়ে টেকনিক্যাল পৌঁছায়। টেকনিক্যাল থেকে সিএনজিতে করে ফার্মগেট পৌঁছে পায়ে হেঁটে শাহবাগ আসি। এরপর রিকশায় বায়তুল মোকাররম হয়ে ফকিরাপুল পৌঁছে আবারও পায়ে হেঁটে সকাল সাড়ে ১০টারদিকে সমাবেশ এলাকায় পৌঁছাই।'

'কষ্ট হয়েছে, তবুও সমাবেশ এলাকায় পৌঁছাতে পেরেছি, আলহামদুলিল্লাহ', বলেন আব্দুল করিম।

রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির বিভাগীয় জনসমাবেশ শুরু হলেও রাজধানীর আশেপাশের এলাকা সাভার, ধামরাই, মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক দিয়ে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের প্রকাশ্যে মিছিল কিংবা গাড়িবহর নিয়ে বিভাগীয় সমাবেশে অংশ নিতে যেতে দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে নেতা-কর্মীরা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, পথে পথে পুলিশি চেকপোস্ট ও হয়রানি এড়িয়ে বিচ্ছিন্নভাবে সমাবেশে যোগ দিতে হয়েছে। এ ছাড়া অনেকেই হয়রানি ও গ্রেপ্তারের ভয়ে সমাবেশ যোগ দেননি।

আশুলিয়া থানা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শরিফুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, পথে পুলিশি বাধা, গ্রেপ্তার, হয়রানি এড়াতে তিনি ৪ দিন আগে থেকে ঢাকায় অবস্থান করছেন। 

তিনি বলেন, 'আমাদের টার্গেট ছিল সাভার থেকে অন্তত ১০ হাজার নেতা-কর্মী সমাবেশে যোগ দেবেন। কিন্তু পরিবেশ না থাকায় সেটি হয়নি। তবে কমপক্ষে ৩ হাজার নেতা-কর্মী সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। যারা অংশ নিয়েছেন তারা পালিয়ে, পরিচয় গোপন করে সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। 

 

Comments

The Daily Star  | English

137 journalists sued so far

They have been charged with murder, attempted murder, unlawful assembly, rioting, abduction, vandalism, extortion, assault, and in certain cases, genocide, and crimes against humanity.

9h ago