‘দেশের মানুষ অভাবী, সাজসজ্জা তাদের অবস্থার সঙ্গে ক্ল্যাশ করবে’

বিএনপি দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল, শেখ হাসিনা সেটা মেরামত করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, 'তারা (বিএনপি) নাকি রাষ্ট্র সংস্কার করবেন... আজকে বাংলাদেশে অ্যালায়েন্স হয়েছে, প্রগতিশীলও আছে, প্রতিক্রিয়াশীলও আছে। সব এক কাতারে একাকার। লক্ষ্য কী? শেখ হাসিনাকে উৎখাত। এই রাষ্ট্রকে যারা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল, তারা রাষ্ট্র মেরামত করবে? মেরামত তো শেখ হাসিনা করেছেন। করেছেন বলেই আজকে বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল। মেরামত তো শেখ হাসিনা করেছেন। ধ্বংস করেছেন আপনারা। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ধ্বংস করেছেন। দুর্নীতি আর লুটপাট করে কোষাগার ধ্বংস করেছেন।'
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষে গঠিত স্বেচ্ছাসেবক ও শৃঙ্খলা উপ-কমিটির এক সভায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
নেতাকর্মীদের শৃঙ্খলার বিষয়ে সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, 'আমরা শৃঙ্খলার কথা বলছি, আমাদের নেতাকর্মীদের কর্মকাণ্ডে শৃঙ্খলার প্রতিফলন থাকতে হবে। আজকে একটা মিটিংয়ে এড্রেস করতে করতে সময় শেষ। কোন নেতা অখুশি হবে একটু কম বললে, এটাও মাথায় থাকে বা পরবর্তীতে পদায়নে প্রব্লেম হতে পারে। এসব চিন্তা করেও অনেকে বলেন। এগুলো আমাদের গতানুগতিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সভার সব সদস্যদের এড্রেস করতে করতে সময় শেষ হয়ে যায়। আমাকে আপনি ওবায়দুল কাদের, সাধারণ সম্পাদক বক্তব্য রাখবেন, এভাবে বললেই হয়। আর এড্রেস করা একটা-দুটো শব্দে যতটা সংক্ষেপে করা যায়।'
'সভায় কাউকে ২ মিনিট সময় দেওয়া হলে ৫ মিনিটই সম্বোধন করতে করতে সময় শেষ করে দেন। পরে মাগরিবের নামাজের আজান দিচ্ছে, তখন প্রধান অতিথি বক্তৃতা করার সুযোগ পান। মানুষকে শ্রোতাদের শুনতে দিতে হবে। তো সে সময়টুকু না দিলে তো এটা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। আমাদের অনেক কিছু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শিখতে হবে। আমরা তাদেরকে অনুসরণ করব এবং শৃঙ্খলাবোধটা আমাদের থাকতে হবে সর্বক্ষেত্রে।'
তিনি বলেন, 'গণজাগরণের যে ঢেউ সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, গোটা দেশ জেগে গেছে। সারাদেশের যেখানেই গেছি, স্রোতের মতো মানুষ। চট্টগ্রাম, যশোর, কক্সবাজারের মহাসমাবেশের সমাবেশ দেখে মনে হয়েছে সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গ যেন আছড়ে পড়েছে। বিজয়ের মাসে আমাদের সম্মেলন। কাজেই সম্মেলনেও স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি হবে। সম্মেলন সাদামাটা হবে, উপস্থিতি সাদামাটা হচ্ছে না। এটা অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।'
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'সাজসজ্জা-আলোকসজ্জা সাদামাটা হচ্ছে নেত্রীর নির্দেশে আমাদের দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে। দেশের মানুষ অভাবী মানুষ। এসব সাজসজ্জা-আলোকসজ্জা তাদের অবস্থার সঙ্গে ক্ল্যাশ করবে। এখানে প্রমাণ আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল। মানুষের চিন্তাভাবনা সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পথ চলতে হবে, সামনে এগিয়ে যেতে হবে।'
তিনি বলেন, 'সবচেয়ে বেশি সংকটের সময় সবচেয়ে বেশি দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।'
এর পাশাপাশি জাতীয় সম্মেলনে আগত কাউন্সিলর ও ডেলিগেটদের সহায়তার জন্য পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনীকে স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ করার অনুরোধ জানান আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এবং সম্মেলনে উপলক্ষে গঠিত শৃঙ্খলা ও স্বেচ্ছাসেবক উপ-কমিটির আহ্বায়ক আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ।
এ জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিশেষভাবে অনুরোধ করবো তার পুলিশ বাহিনী, গোয়েন্দা বাহিনী যারাই আছে তারা অন্তত এই সময়টাতে একটু স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ করুক। এটাই আমার বিশেষভাবে অনুরোধ।'
সভায় আওয়ামীলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, 'স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আওয়ামী লীগের আগামী কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।'
এ ছাড়া, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দীন নাসিমও সভায় বক্তব্য রাখেন।
Comments