রাজনীতি

নোয়াখালীর একাধিক স্থানে বিএনপির ওপর আ. লীগের হামলার অভিযোগ

আহত অর্ধশত 
হামলায় আহত বিএনপি নেতাকর্মীদের স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

আজ শনিবার সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত জেলার চাটখিল, সোনাইমুড়ী, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ, কবিরহাট ও সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এসব হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

চাটখিল উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবু হানিফ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি উপলক্ষে বিএনপি নেতাকর্মীরা বিভিন্ন ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা শুরু করেন। সকাল ১০টার দিকে চাটখিল উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের সাহাপুর বাজারে, হাটপুকুরিয়া ঘাটলাবাগ ইউনিয়নের বিনাতলা এলাকায় ও পরকোর্ট ইউনিয়নের দশঘরিয়া বাজারে পদযাত্রায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালান। এতে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কমপক্ষে ২০ নেতাকর্মী আহত হন। এ ছাড়া, বিভিন্ন উপজেলায় বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলায় চাটখিল পৌরসভার সাবেক মেয়র মোস্তফা কামাল, সাহাপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন বাবুল, জামাল হোসেন, যুবদল নেতা রুবেল হোসেন, বিএনপি নেতা হারুন মোল্লা, বিএনপি নেতা সাইদুল হাসান, ছাত্রদল নেতা সাব্বির হোসেন ও ছাত্রদল নেতা একরামসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।'

সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. সেলিম শাহী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সোনাপুর ইউনিয়নের খেলাফত বাজারে পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু করলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ককটেল নিক্ষেপ করেন। এসময় তাদের হামলায় ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি ফিরোজ, মাসুদ, সালাউদ্দিন ও সৈকতসহ ১০ জন আহত হন। পরে ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতা যুবদল নেতা ফিরোজের বাবার দোকানে হামলা ও লুটপাট চালান।'  

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মফিজুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সেনবাগ উপজেলার কেশারপাড় ইউনিয়নের কানকির হাট বাজারে সকাল ১১টার দিকে বিএনপির পদযাত্রায় সরকার দলের নেতাকর্মীরা হামলা চালান।'

ছাতার পাইয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আবদুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিকেল ৪টার দিকে ছাতার পাইয়া বাজারে বিএনপির পদযাত্রা অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হামলা চালান। এতে আমাদের ৭-৮ জন আহত হন।'

নোয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম সুমন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সকাল ১১টার দিকে রাজগঞ্জ বাজার থেকে মিছিল বের করলে পুলিশ বাধা দেয়। একপর্যায়ে সিএনজি স্টেশনের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আমাদের দলের আজাদ, সবুজ, আলাউদ্দিনসহ ১০ জন আহত হন।'

কবিরহাট উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিকেল ৩টার দিকে সদর উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়নের দ্বীনমনি বাজার থেকে পদযাত্রা শুরু করলে টাওয়ার মোড় এলাকায় সরকার দলীয় লোকজন হামলা চালায়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আমাদের হোসেন, সায়েম, সোহেল, রিয়েল, ফখরুলসহ ২৫ জন আহত হন।'

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান বিএনপির শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, 'পুলিশ ও সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা বিএনপির লোকজনের ওপর প্রকাশ্যে হামলা চালিয়ে অর্ধশত লোককে আহত করেছেন।'

তবে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিএনপির পদযাত্রায় সরকার দলীয় কোনো নেতাকর্মী হামলা করেনি। এটা তাদের দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফসল।'

নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র শহীদ উল্যাহ খান সোহেল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিএনপির কর্মসূচিতে হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি। তারা উস্কানিমূলক কার্যক্রম করতে চাইলে সেখানে উত্তেজনাকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। তারা পদযাত্রার নামে সহিংসতামূলক কার্যকলাপ করার অপচেষ্টা করেছে। সেটা নিয়ে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।'

এ বিষয়ে জানতে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

 

Comments