‘পদ্মা সেতু পার হয়ে জনসভায় গিয়ে বিএনপি বলে, দেশে কোনো উন্নয়ন হয়নি’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি ও তাদের দোসররা পদ্মা সেতু দিয়ে ওপারে গিয়ে জনসভা করে বলেন, দেশে কোনো উন্নয়ন হয়নি। অথচ তারা পদ্মা সেতুর ওপর দিয়েই গেলেন। ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে গিয়ে বলেন কিছুই হয়নি। যাদের চোখ থাকতে অন্ধ, কান থাকতে বধির তাদেরকে কেউ আলোও দিতে পারবে না, শ্রবণশক্তিও দিতে পারবে না। আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি আল্লাহ তাদের হেদায়েত করুন।
'বাংলাদেশের উন্নয়ন ও এগিয়ে যাওয়া নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব প্রশংসা করেন, বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ভাইস-প্রেসিডেন্ট প্রশংসা করেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আমাদের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরপূর্তি উপলক্ষে যে বার্তা পাঠিয়েছেন সেখানে বাংলাদেশের উন্নয়ন বৈশিষ্ঠ্যের জন্য প্রশংসা করেছেন। আজকের সমগ্র বিশ্ব প্রশংসা করে, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য বাংলাদেশের একটি বিরোধী দল বিএনপিসহ তার দোসরেরা প্রশংসা করতে পারে না।'
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৩০তম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব বলেন তিনি।
এসময় রমজানে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'পৃথিবীর সব দেশে দেখতে পাই যখন উৎসব হয়, তখন পণ্যের দাম কমে। আর আমাদের দেশে যখন উৎসব হয় তখন পণ্যের দাম বাড়ে। যখন আমাদের কোনো উৎসব হবে, সেটি ঈদ-রোজা-পূজা যেটিই হোক, তখন যেন পণ্যের দাম কমানোর মানসিকতা ব্যবসায়ীরা রাখে।'
তিনি আরও বলেন, 'যারা মজুতদারি করবে তাদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এফবিসিসিআই ও বণিক সমিতি যদি ব্যবসায়ীদের ডেকে বলেন, যারা পণ্যের দাম কমাবে তাদেরকে ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে উৎসাহ দেওয়া হবে। প্রয়োজনে পুরস্কৃত করা যেতে পারে। তাহলে আমাদের দেশে সেই সংস্কৃতিটা চালু হবে।'
দেশের এবং ব্যবসায়ীদের সমৃদ্ধির জন্য শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ব্যবসায়ীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, 'নিরবিচ্ছিন্নভাবে দেশের সমৃদ্ধির সঙ্গে যে ব্যবসা-বাণিজ্যেরও সমৃদ্ধি আসছে সেটি যদি অব্যাহত রাখতে হয়, তাহলে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা অব্যাহতভাবে যদি দেশ পরিচালনা করতে পারেন, তাহলে আমাদের দেশকে আমরা স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাতে পারব। অন্যথায় আমরা দেশকে স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাতে পারব না।'
তিনি বলেন, '২০১৩-১৪ ও ১৫ সালে যখন সারাদেশে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছিল মানুষের ওপর, তখন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মুরগি এবং গরু-ছাগলের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এটার কারণ হচ্ছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুট বাংলাদেশের ইকোনমিক লাইফলাইন, সেটাকে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য। তখন আমাদের সরকার সব প্রোটেকশন দিয়ে রপ্তানিসহ সবকিছু চালু রেখেছিল। তারা যদি আবার সুযোগ পায় দেশটাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেবে।'
তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'গত ১৪ বছর ধরে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্নে ব্যবসা করেছে এবং সব ব্যবসায়ীর সমৃদ্ধি হয়েছে। দেশের সমৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেকটি ব্যবসায়ীর সমৃদ্ধি এসেছে। আপনারা যদি নিজের কাছে প্রশ্ন করেন ১৪ বছর আগে আপনার ব্যবসার কী ব্যাপ্তি ছিল, এখন ব্যাপ্তি কোথায়।'
'আমাদের জিডিপির আকার ছিল ৮০ বিলিয়ন ডলার। আজকে সেটি পৌনে ৫০০ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। মাথাপিছু আয় ছিল ৬০০ ডলার, সেটি ২ হাজার ৮০০ ডলারের ওপরে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনা মহামারির মধ্যে ২০২১ সালে আইএমএফের প্রাক্কলন অনুযায়ী আমরা মাথাপিছু আয়ে ভারতকে ছাড়িয়েছি। মানব উন্নয়ন সূচক, অর্থনৈতিক সূচক, সামাজিক সূচক ও স্বাস্থ্য সূচকসহ সমস্ত সূচকে অন্তত ৭ বছর আগে আমরা পাকিস্তানকে অতিক্রম করেছি। মানব উন্নয়ন সূচক, সামাজিক সূচক এবং স্বাস্থ্য সূচকে আমরা ভারতকেও অতিক্রম করেছি। অর্থনৈতিক সূচকে মাথাপিছু আয়ের দিক দিয়ে ২০২১ সালে আমরা ভারতকে অতিক্রম করেছি।'
চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এমএ লতিফ, এফবিসিসিআইর সভাপতি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, বাণিজ্য মেলা কমিটির চেয়ারম্যান একেএম আক্তার হোসেন।
Comments