রাজনীতি

আওয়ামী লীগ এতিম হয়ে গেছে, মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে: আমীর খসরু

আমীর খসরু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আজ এতিম হয়ে গেছে। মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। পুলিশের পিছে পিছেও ঘুরছে।'
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। স্টার ফাইল ফটো

আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে এতিম হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

আজ শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগরীর কাজির দেউরি নুর আহম্মেদ সড়কে আয়োজিত পদযাত্রার শুরুতে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

কেন্দ্রীয় বিএনপিঘোষিত ১০ দফা দাবি আদায় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মহানগর বিএনপি এ পদযাত্রার আয়োজন করে। নুর আহম্মেদ সড়কে দলীয় কার্যালয় থেকে এ পদযাত্রা শুরু হয়ে লাভলেইন মোড়, জুবলি রোড, তিনপুলের মাথা, বোস ব্রাদার্স, ডিসি হিল, বৌদ্ধ মন্দির, লাভলেইন হয়ে পুনরায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু বলেন, 'চট্টগ্রামের আজকের পদযাত্রার সমাবেশ ওয়াসার মোড়, এনায়েত বাজার মোড় পার হয়ে গেছে। লক্ষ জনতা রাস্তায় নেমে গেছে। বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে এ ফ্যাসিস্ট সরকারকে তারা বিদায় করবে। জনগণ এই সরকারের পতন ঘটিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করে দেশে নিরপেক্ষ সংসদ ও নিরপেক্ষ সরকার আনবে যাদের সাধারণ মানুষের কাছে জবাবদিহিতা থাকবে।'

আমীর খসরু আরও বলেন, 'আওয়ামী লীগ আজ এতিম হয়ে গেছে। মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। পুলিশের পিছে পিছেও ঘুরছে। আর ছুরি, লাঠি, দা নিয়ে তারা শান্তি সমাবেশ করছে। ওরা নাকি জনগণের সম্পদ রক্ষা করবে। আইন রক্ষার জন্য একজন থাকবে। নয়তো পুলিশ থাকবে নতুবা আওয়ামী সন্ত্রাসীরা থাকবে। দুইটা তো থাকতে পারে না। দেশে যদি আইন থাকে তাহলে পুলিশ থাকবে। দেশে যদি আইন না থাকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা দা, চুরি নিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করবে। তবে এসব দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে দমানো যাবে না।'
বিশ্ব বিবেক আজ বিএনপির পাশে দাঁড়িয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'আগামী নির্বাচন যদি আগের নির্বাচনের মতো করেন, দিনের ভোট রাতে চুরি করেন তাহলে বাংলাদেশের মানুষ বুঝিয়ে দেবে কত ধানে কত চাল! আজকে আওয়ামী লীগ ভীত হয়েছে। বিশ্ব বিবেক আজ আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। ঢাকায় অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকরা বার্তা দিচ্ছেন পরিষ্কারভাবে। যদি বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিচের দিকে যায় তাহলে তাদের সাথে সম্পর্কও নিচের দিকে যাবে। ভোট চুরির নির্বাচন, মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম, খুন, মিথ্যা ও গায়েবী মামলা দিয়ে বাঁচার কোনো সুযোগ নেই।'

সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে মীর নাসির উদ্দিন বলেন, 'আমরা মেগা পদযাত্রা শুরু করলাম। আরেকটা দলের ছটফটানি শুরু হয়ে গেছে। সে দল হচ্ছে চোরের দল, ডাকাতদের দল, ব্যাংক লুটেরাদের দল, মানি লন্ডারিং-এর দল। সে দলের প্রতি মানুষের কোনো আস্থা নেই। যদি আস্থা থাকত পুলিশ বাহিনীর সমর্থন নিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করতো না। আমরা রাস্তায় আছি, থাকব। এই সরকারের পদত্যাগ করিয়েই আমরা ক্ষান্ত হবে।'

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আবুল খায়ের ভূঁইয়া বলেন, 'আমাদের পদযাত্রার কাউন্টার প্রোগ্রাম আওয়ামীলীগ প্রতিটি ইউনিয়নে দিয়েছে। এ কাউন্টার প্রোগ্রামের মাধ্যমে তাদের আসল চেহারা উম্মোচিত হয়েছে। হাসিনার সরকারের আমলে মানুষের যে ভোটের অধিকার সেটা ধ্বংস করা হয়েছে। তারা সরকারে আসার পর একটি পুতুল নির্বাচন কমিশন করে দিনের ভোট রাতে নিয়েছে। তারা মানুষের বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছে। প্রশাসনকে ধ্বংস করেছে। এমন একজনকে রাষ্ট্রপতি পদে বসিয়েছে যিনি আওয়ামী লীগের মধ্যম ও তৃতীয় সারির নেতাও নন। যার বাংলাদেশে কোনো পরিচিতি নেই। আমরা হাসিনার আগের ভোটের ধরণ দেখেছি। এ মিথ্যাবাদীর অধীনে কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না।'
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় পদযাত্রা শুরুর আগে সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, জয়নাল আবেদীন ফারুক, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দীন মজুমদার, ভিপি হারুনুর রশীদ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।

Comments