‘ছাত্রলীগে মাঝে মাঝে এমন কিছু ঘটে আমাদের লজ্জা লাগে’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'আজকে আমরা আমেরিকার অ্যাম্বাসেডরকে বলে এসেছি, ইট ইজ নট পসিবল টু রিটার্ন কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট অ্যাগেইন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারে বাংলাদেশ আর ফেরত যাবে না।'
আজ বুধবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্রলীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বড় বড় কথা ছাড়ুন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূত নামিয়ে ফেলুন। ওই ভূত আর বাংলাদেশ গ্রহণ করবে না।'
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে 'অবৈধ দলের অবৈধ মহাসচিব' বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কাদের বলেন, 'বিএনপির একটা কনস্টিটিউশন আছে। সেই কনস্টিটিউশনে কোথায় আছে ১২ বছর ধরে মহাসচিব থাকা যাবে? সে যে সরকারের পদত্যাগ দাবি করে, তার নিজেরই তো পদত্যাগ করা উচিত। কারণ বিএনপির কনস্টিটিউটশন অনুযায়ী সে তো অবৈধ।'
বিএনপির আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, 'বিএনপির আন্দোলন এসে গেছে নিরব পদযাত্রায়। পদযাত্রা থেকে দাঁড়িয়ে গেছে মানববন্ধনে। এখন বিএনপির আন্দোলন চোরাবালিতে আটকে গেছে। সামনেও যায় না, পেছনেও যায় না। ডানেও যায় না, বামেও যায় না।'
'শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের কাদায় পড়া গরুর গাড়ি নিয়ে একটা চিত্রকর্ম আছে। বিএনপির অবস্থা কাদায় আটকে পড়া জয়নুলের গরুর গাড়ির মতোই। নড়েও না, চড়েও না', বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'ফখরুল নাকি বলে আমরা গণতন্ত্র ধ্বংস করেছি। ভুয়া ভোটার তালিকা করে প্রহসনমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে তোমরা গণতন্ত্রকে কবর দিয়েছ। বিএনপির হাতে এই দেশ আর যাবে না। এই দেশ মেরামত করেছে শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা তাদের হাতে এই বাংলাকে ফিরিয়ে দেবে না। এখন তারা রাষ্ট্র মেরামতের যে ২৭ দফা আর সরকার উৎখাতের ১০ দফা ঘোষণা করেছ, সবই ভুয়া।'
ছাত্রলীগের নামে যারা অপকর্ম করে, তাদের 'বিষফোঁড়া' আখ্যায়িত করে সংগঠন থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, 'অপকর্মের সঙ্গে জড়িত কাউকে নেতা বানানো যাবে না। সার্জারি করে ছাত্রলীগ থেকে বিষফোঁড়া বের করে দিতে হবে। যাদের সন্ত্রাসী মানসিকতা, চাঁদাবাজি, সিট বাণিজ্য ও মাদকের মানসিকতা, তাদের পরিহার করতে হবে '
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'ছাত্রলীগে মাঝে মাঝে এমন কিছু ঘটে, প্রাক্তন ছাত্রলীগ হিসেবে আমাদের লজ্জা লাগে। আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে অপকর্মে জড়িত ছেলে-মেয়েদের আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই।'
'কোথাও কোথাও অনেকে লাগাম ছাড়া হয়ে গেছে। তাদের লাগাম টেনে ধরতে হবে। কোনো আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। সততা ও মেধার শক্তি বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা, শেখ হাসিনার শিক্ষা। সততা ও মেধার সংমিশ্রণে স্মার্ট বাংলাদেশে আমরা স্মার্ট কর্মী গড়ে তুলতে চাই', যোগ করেন তিনি।
আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সদস্য তারানা হালিমও বক্তব্য দেন। সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
Comments