টাকা পাচারের জবাবদিহি কে করবে, সংসদে প্রশ্ন ফিরোজ রশীদের

টাকা পাচারের জবাবদিহি কে করবে—প্রশ্ন রেখে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেছেন, 'মন্ত্রী এখানে (সংসদ) থাকেন না। কোন মন্ত্রীর কী দায়িত্ব সেটাও জানি না। কে কী কাজ করে, জবাবদিহিতাও নেই কোনো! ব্যাংকের যেমন জবাবদিহিতা নেই, মন্ত্রীদেরও জবাবদিহিতা নেই।'

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনের অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

কোথাও জবাবদিহি না থাকলে দেশ কীভাবে চলবে—প্রশ্ন রেখে তিনি আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী ব্যাংকের লাইসেন্স দেন। সেটা কীভাবে চলবে তা ঠিক করবে বাংলাদেশ ব্যাংক, মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং বিভাগ। তাদের জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে।'

কেন জনগণের টাকা লুটপাট হচ্ছে, কে দায়ী এসবের জন্য তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানান তিনি।

পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে ফিরোজ রাশিদ বলেন, 'সাউথ বাংলা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন ১ হাজার কোটি টাকা নিয়ে চলে গেছেন। তিনি পাচার করা অর্থে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও একাধিক বাড়ি কিনে বসবাস করছেন। তিনি একা এই কাজ করেননি। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি নিয়ত প্রত্যেক ব্যাংকে অডিট করে। ১ হাজার কোটি টাকা তো একদিনেই নেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় কী করল?'

অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে জাতীয় পার্টি এই সংসদ সদস্য বলেন, 'এটা নিয়ে আমরা কথা বলতে পারব না! এখানে অর্থমন্ত্রী কখনো থাকেন না। উনি কোনো কথাই শুনতে চান না।'

একটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখিয়ে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, 'অর্থমন্ত্রী বা অর্থ মন্ত্রণালয় কোনো প্রতিবাদ করেনি। তারা জানেন, ১ হাজার কোটি টাকা কোনো টাকাই না। এখানে ৫ হাজার কোটি টাকা হলে তারা নড়েচড়ে বসেন। ১০ হাজার কোটি টাকা হলে আরেকটু নড়েচড়ে বসেন।'

ফিরোজ রশীদ বলেন, 'জনগণের টাকা নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। ব্যাংকগুলো পারিবারিক হয়ে গেছে। এগুলো জনগণের ব্যাংক নেই। আমরা টাকা রাখি ঠিকই। ব্যাংক মালিকদের চাকর-বাকরদেরও কোনো অসুখ হলে সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক চলে যাবে চিকিৎসার জন্য।'

এর আগে বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ড নিয়ে জাতীয় সংসদে ৩০০ বিধিতে বিবৃতি দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।

সেই বিবৃতির সমালোচনা করে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, 'ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বিরাট, লম্বা-চওড়া বিবৃতি শোনালেন। কত ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, উনি নিজে দিন-রাত পরিশ্রম করে আগুন নিভিয়েছেন। আসলে আগুন নিভান নাই, আগুন আইজও জ্বলছে।'

ফিরোজ বলেন, 'বিমান বাহিনী হেলিকপ্টারে পানি ছিটিয়েছে, পানি পড়তে পড়তে কিছু আর থাকে না। ওইটা অক্সিজেন হয়ে যায়। কোনো রকম তারা গিয়ে পুলিশ হেড কোয়ার্টার রক্ষা করতে পারছেন। একটা দোকানদারও রক্ষা পায় নাই। এটা হলো আসল কথা। আপনাদের শত চেষ্টা পরেও কোনো দোকান রক্ষা পায় নাই। আর যত বেশি লোকজন গেছে, তত বেশি লুটপাট হয়েছে। এটা স্বীকার করেন না কেন? আগে ব্যবস্থা নিলে লুটপাট হতো না। আপনি বিরাট এক ফিরিস্তি দিয়েছেন কিন্তু মানুষ রক্ষা পায়নি। চিকিৎসা ভালো হয়েছে কিন্তু রোগী মারা গেছে।'

মন্ত্রীদের সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, 'মন্ত্রীরা একেক সময় একেক কথা বলেন। আমরা একটা সংবাদ পেলাম খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি হওয়ায় নির্বাচন করতে পারবেন না। তবে তিনি রাজনৈতিক চর্চা করতে পারবেন। আরেক মন্ত্রী বললেন, উনি (খালেদা জিয়া) শর্ত দিয়েছেন রাজনীতি করবেন না। আপনারা একেক সময় একেক আইনের ব্যাখ্যা দেন। আইনের ব্যাখ্যা দিবেন আইনমন্ত্রী। সেটাই সঠিক মনে করব। অর্থের ব্যাখ্যা দিবেন অর্থমন্ত্রী। আমরা সেটাই মনে করব। কিন্তু আমরা তো কারো কাছে ব্যাখ্যা পাই  না।'

Comments

The Daily Star  | English

Cops gathering info on polls candidates

Based on the findings, law enforcers will assess security needs in each constituency and identify candidates who may pose risks.

13h ago