সরকারবিরোধী আন্দোলন: রোড মার্চ বা সমাবেশের পরিকল্পনা করছে বিএনপি

সরকারবিরোধী আন্দোলনের শেষ ধাপ হিসেবে সমমনা দলগুলোকে নিয়ে রোড মার্চ বা সমাবেশের পরিকল্পনা করছে বিএনপি।

সরকারবিরোধী আন্দোলনের শেষ ধাপ হিসেবে সমমনা দলগুলোকে নিয়ে রোড মার্চ বা সমাবেশের পরিকল্পনা করছে বিএনপি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আন্দোলনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ দল ও জ্যেষ্ঠ নেতা রোড মার্চের মাধ্যমে আন্দোলন শুরুর পক্ষে মতামত দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ ১৯টি বড় জেলায় সমাবেশের পর রোড মার্চের মতামত দিয়েছেন।

সূত্র জানায়, বিএনপি নতুন কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে যেতে চায়। আর আন্দোলনে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা এবং আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর কাছ থেকে মতামত নিচ্ছেন শীর্ষ নেতারা।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায় নিয়ে আলোচনা করছি। কর্মসূচি চূড়ান্ত হলেই ঘোষণা করব।'

সূত্র জানায়, এদিকে আন্দোলনের চুড়ান্ত কর্মসূচি নিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামীকাল দলের সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

দলটি ইতোমধ্যে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে এবং তাদের মতামত নিয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, সোমবার রাতে কমিটির বৈঠকে দলের পরবর্তী করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

তবে, স্থায়ী কমিটির অধিকাংশ সদস্য রোড মার্চের পক্ষে থাকলেও তা ঢাকা কেন্দ্রীক হবে নাকি ঢাকা থেকে বিভাগীয় সদরে যাওয়া হবে সে বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চলমান এসএসসি পরীক্ষার কারণে কর্মসূচি ঘোষণায় কিছুটা সময় লাগতে পারে। কারণ পরীক্ষা চলাকালে বড় কোনো কর্মসূচিতে যেতে চায় না বিএনপি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, 'পরীক্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে আমরা নতুন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে পারি।'

দলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, মানববন্ধন, অনশন, সমাবেশসহ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করা হলেও তা গতি পায়নি। তবে, বিভাগীয় সমাবেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি ছিল।

বিএনপির এক নেতা বলেন, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিতে মানসিকভাবে প্রস্তুত এবং ঈদুল আজহার আগে আন্দোলনের একটি 'শক্ত ভিত্তি' প্রস্তুত করতে চায়। আমরা অযথা আন্দোলন দীর্ঘায়িত করতে চাই না, তাহলে আন্দোলন তার গতি হারাতে পারে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর একযোগে আন্দোলনের যৌথ ঘোষণা চূড়ান্ত করা হচ্ছে।

ঘোষণাপত্রে বিএনপির ১০ দফা দাবি অক্ষুণ্ণ রেখে অন্য দলগুলোর দাবি-দাওয়া অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

সূত্র আরও জানায়, এ ছাড়া একটি যৌথ রূপরেখা থাকবে। তাতে উল্লেখ থাকবে ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে দলগুলো কী করবে।

বিএনপি ইতোমধ্যে ২৭ দফার রূপরেখা ঘোষণা করেছে এবং অন্যান্য দলের প্রস্তাবও অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর লিয়াজোঁ কমিটির নেতারা জানিয়েছেন, শিগগিরই একটি যৌথ ঘোষণা দেওয়া হবে।

এক নেতা বলেন, 'দু-একদিনের মধ্যেই বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।'

সূত্র জানায়, বিএনপি ও সাতটি রাজনৈতিক দলের জোট গণতন্ত্রমঞ্চের মধ্যে যৌথ ঘোষণা নিয়ে কিছু মতপার্থক্য ছিল। এর সমাধানে মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দুই পক্ষের বৈঠক হয়।

বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, তারা যৌথ ঘোষণা নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং শিগগিরই তা ঘোষণা করা হবে

Comments