পিটার হাস সরাসরি বললেন “উই ডোন্ট কেয়ার অ্যাবাউট ইওর কেয়ারটেকার”: কাদের

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর বনানী সেতু ভবনে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের বোর্ড সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনে বিদেশি কোনো মহলের চাপ নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর বনানী সেতু ভবনে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের বোর্ড সভায় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।

বিএনপি অনেক দিন ধরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জানিয়ে আসছে। নতুন করে কেন এই বিষয়টি আলোচনায় এলো, বিদেশের রাষ্ট্রের কোনো চাপ আছে কি না জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের আমন্ত্রণে ভিন্ন ভিন্নভাবে আওয়ামী লীগ থেকে বৈঠক করেছি। ভারতের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে, যেটা বিএনপির সঙ্গেও হয়েছে।

'আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য—কোনো মহল থেকে কোনো প্রকার চাপ অনুভব করিনি। কেউ আমাদের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রে হস্তক্ষেপ হয় এমন কোনো বিষয়ের অবতারণা করেননি। তারা কথায় কথায় বলেছেন, বাংলাদেশে একটি ফ্রি-ফেয়ার ইলেকশান হোক। এটা তাদের কাম্য, বন্ধুদেশ হিসেবে এটা তারা বলতেই পারেন। এটাতে একটা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বোঝায় না,' বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, 'মার্কিন রাষ্ট্রদূতের আমার সঙ্গে যখন কথা হয়, তখন আমি তাকে জিজ্ঞাসা করছিলাম যে, তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে আপনাদের কোনো বক্তব্য আছে কি না। পিটার হাস সরাসরি বললেন, "উই ডোন্ট কেয়ার অ্যাবাউট ইওর কেয়ারটেকার"। এই দেশে একটা ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশান হোক বন্ধুদেশ হিসেবে আমরা এটা চাই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার করতে হবে এ ধরনের কোনো বিদেশি চাপ সরকারের ওপর আমরা এ পর্যন্ত অনুভব করিনি।'

বিএনপি এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলছে না, নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি করছে। এটি সম্ভব কি না বা আওয়ামী লীগ এটি করবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বিএনপির নির্বাচনকালীন সরকার বোঝা মুশকিল। এক সময় বেগম জিয়া বলেছিলেন, "পাগল আর শিশু ছাড়া নিরপেক্ষ আর কেউ নেই"। এখন তাদের নিরপেক্ষতার সংজ্ঞাটা কী? আমার কাছে মনে হয়, তাদের নিরপেক্ষতার সংজ্ঞা ২০০১ ও ২০০৬ সালের মতো যেভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসেছিল এবং তাদের যে কার্যকলাপ-আচরণ; বিএনপি নিজে ২০০১ সালে যেটার সুফল ভোগ করেছে এবং শুরুতেই একটি বায়াসড নীতি-কৌশল অবলম্বন করেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। বিএনপির নিরপেক্ষতা হচ্ছে বিএনপির পক্ষপাতিত্ব করা। বিএনপিকে নির্বাচনে জেতার গ্যারান্টি দেওয়া। সেটা কেমন, কে দিতে পারবে আমি জানি না।'

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'নির্বাচনে আসা বিএনপির অধিকার। সরকার দয়া করে সুযোগ দিচ্ছে এমন না।'

এবার নির্বাচনের আগে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না জানতে চাইলে তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আওয়ামী লীগ দয়া করে তাদের নির্বাচনে নিয়ে আসবে কেন! এটা তো হতে পারে না। এটা নিয়ে তো কোনো সংলাপ...করলাম তো, তার ফলাফল কী হলো! ২০১৮ সালে বিএনপির সঙ্গে একবার নয় ২ বার সংলাপ করলাম গণভবনে। ৭২টি দলের সঙ্গে সংলাপ হলো, রেজাল্ট কী?'

২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি মন্ত্রণালয় দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল নির্বাচনকালীন সরকারের জন্য। এবার তেমন প্রস্তাব দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'কোনো ব্যাপারে সিদ্ধান্ত যদি নিতে হয় সংবিধানের মধ্যেই নিতে হবে। সংবিধানের মধ্যে ছাড় দেওয়ার সুযোগ থাকলে...এটাতে কোনো অসুবিধা নেই যদি বিএনপি বলে আমরা নির্বাচনে আসব।'

'নির্বাচনে এলে তখন এক ব্যাপার। এখন তারা নির্বাচন করবেই না তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া; এই পার্লামেন্ট তারা চায় না; এই মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করবে; এই প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করবে এসব শর্তারোপের মধ্যে আমরা কী করে তাদের বলব যে, আপনারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইন্টার গভর্নমন্টে আসুন বা আপনাদের অন্য কোনো মন্ত্রণালয় দিচ্ছি। সেই পরিবেশটা তো তারা রাখছে না। তারা সম্পূর্ণ উত্তর আর দক্ষিণ মেরুর অবস্থান নিয়েছে,' বলেন কাদের।

Comments

The Daily Star  | English

July charter implementation: What notes of dissent could mean

The July National Charter, finalised after weeks of consensus talks, faces a delicate challenge over notes of dissent, most of them from the BNP and its allies.

14h ago