বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশের আগে খুলনায় ২ রুটে বাস বন্ধ

আজ সোমবার সকাল থেকে এই ২ রুটে বাস চলছে না।
সমাবেশস্থলে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। ছবি: স্টার

খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় তারুণ্যের সমাবেশের আগে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই খুলনা-সাতক্ষীরা ও খুলনা-পাইকগাছা রুটের সব ধরনের বাসের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার সকাল থেকে এই ২ রুটে বাস চলছে না। এ কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীসহ সমাবেশে যোগ দিতে আসা বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা।

ঝিনাইদহ থেকে সমাবেশে যোগ দিতে এসেছেন ঝিনাইদহর পোড়াহাটি ইউনিয়নের চাপড়ি এলাকার বিএনপি কর্মী হাসান আলী। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ঝিনাইদহ থেকে বাসে করে রওনা হয়েছিলেন। কিন্তু যশোরের বারো বাজার এলাকায় পৌঁছার পর তার বাসকে আর সামনে যেতে দেওয়া হয়নি। পরে অন্য পথে খুলনা পৌঁছান তিনি।

তবে জানতে চাইলে খুলনা জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, 'কোথাও কোনো বাস বন্ধ করা হয়নি। শ্রমিকরা যদি বাস না চালান, তাহলে সে দায়িত্ব মালিক সমিতির নয়।'

খুলনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন বলেন, 'শ্রমিকরা বাস চলাচল বন্ধ করেননি। সাধারণত কোথাও কোনো ঝামেলা মনে করলে মালিকরা শ্রমিকদের বাস চালাতে নিষেধ করেন। এখানেও সেটিই হয়েছে।'

তরুণ ভোটারদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও অন্যান্য দাবিতে যুবদল, ছাত্রদল এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের আয়োজনে খুলনায় আজ শুরু হয়েছে বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশ। বিকেল পৌনে ৪টায় খুলনা নগরের ডাকবাংলা সোনালী ব্যাংক চত্বরে আয়োজিত এ সমাবেশে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করছেন।

প্রধান অতিথি হিসেবে সমাবেশে বক্তব্য দেবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি মঞ্চে উপস্থিত হয়েছেন।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসেবে যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন (টুকু) ও বিশেষ বক্তা হিসেবে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী উপস্থিত রয়েছেন। সঞ্চালনায় রয়েছেন যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম (মিল্টন), স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান এবং ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ (জুয়েল)।

বিকেল পৌনে ৪টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় সমাবেশস্থলে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী ও সমর্থক উপস্থিত হয়েছেন। এ ছাড়া খণ্ড খণ্ড বিশাল বিশাল মিছিল নিয়ে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা এখনো সমাবেশস্থলে জড়ো হচ্ছেন। সমাবেশে যোগদানকারীদের অনেকে বিভিন্ন রঙের গেঞ্জি, ক্যাপ পরে এসেছেন। এগুলোতে বিভিন্ন জেলা-উপজেলার বিএনপি নেতাদের নাম লেখা রয়েছে। নেতাকর্মীদের কেউ কেউ লাঠিতে পতাকা বেঁধে, কেউ খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে যোগ দিয়েছেন সমাবেশে।

এদিকে দুপুর থেকে খুলনা শহরে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের ব্যাপক বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।

এর আগে 'ঝামেলা এড়াতে' সমাবেশের আগের রাতেই সমাবেশস্থলে হাজির হয়েছিলেন অনেকে। গতকাল রোববার রাতে উপস্থিত নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলের রাস্তা ও ফুটপাতে প্লাস্টিকের বস্তা-পাটি পেতে ঘুমিয়েছেন। দুপুর থেকে নেতা কর্মীদের চাঙা করতে জাসাস দেশাত্মবোধক গান, নাটিকা পরিবেশনা করে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ দাবিতে চলমান আন্দোলনে তরুণ প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করতে দেশের ৬টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তরুণ সমাবেশ করছে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল। চট্টগ্রাম বিভাগে সমাবেশ আয়োজনের মধ্য দিয়ে তারুণ্যের সমাবেশ শুরু হয়। খুলনায় পঞ্চম সমাবেশ করছে তারা। ঢাকায় সমাবেশের মধ্য দিয়ে ওই কর্মসূচি শেষ হবে।

Comments