ভোটাধিকার থাকলে আ. লীগের স্বৈরতন্ত্র আসত না: জিএম কাদের
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ মানুষের বাক স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই শাস্তি পেতে হয়। তারা মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। মানুষের ভোটাধিকার থাকলে, তাদের একনায়কতন্ত্র কখনো স্বৈরতন্ত্রে পরিণত হতো না।
জিএম কাদের বলেন, তারা মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ একা যুদ্ধ করেনি। এদেশের প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের লোকজনই সাধারণ মানুষের কাতারে থেকে যুদ্ধ করেছে। মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র অথরিটি আওয়ামী লীগ নয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করেছে আওয়ামী লীগ।
আজ শনিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর টাউন হল মিলনায়তনে জেলা জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে জি এম কাদের বলেন, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিজেদেরকে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি হিসেবে দাবি করতে পারে না। তারা ভোটাধিকার হরণ করেছে। তারা দেশে বিভাজন ও বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। এ বৈষম্য থেকে মুক্তি পেতে অনেক সময় লাগবে। অনেকে মাসে ৫ হাজার টাকা আয় করতে পারে না, আবার অনেকেই ৫০ কোটি টাকা আয় করছে। অনেকে আবার ৫০০ কোটি টাকাও আয় করছে। স্বাধীনতার যুদ্ধের চেতনা হচ্ছে–দেশের মালিক হবে মানুষ। তারাই দেশকে পরিবর্তন করবে, সরকারকে পরিবর্তন করবে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্মীপুরের ৪টি নির্বাচনী আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই। স্বাধীনতার পরে জাতীয় পার্টি ৩৩ বছর বিরোধী দল হিসেবে রয়েছে। আওয়ামী লীগ ২১ বছর বিরোধী দল ছিল। এরপর তারা ভেঙে কয়েক টুকরো হয়ে গেছে। বিএনপি ক্ষমতায় নেই ১৪ বছর। আবার যদি ক্ষমতায় না আসতে পারে, থাকবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। বিএনপি, মুসলিম লীগ হয়ে যাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। জাতীয় পার্টি এখনো টিকে আছে, কারণ আমাদের গৌরবান্বিত শাসনকাল ছিল। আজকের উন্নয়নের ধারবাহিকতার মূল ছিল প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের আমল। এরশাদ সাহেব ব্যর্থতা ছিল, তিনি দুর্নীতি করতে পারেননি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি চার বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। দুর্নীতি-দুঃশাসনের আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এ থেকে মানুষ এখন মুক্তি চায়। মুক্তি একমাত্র পথ প্রদর্শক হচ্ছে জিএম কাদেরের নেতৃত্বে পরিচালিত জাতীয় পার্টি।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক সাবেক এমপি মোহাম্মদ উল্যার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান মাহমুদের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা সাবেক এমপি মোহাম্মদ নোমান ও নোয়াখালী জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন মিঠু প্রমুখ।
Comments