সরকার ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও দুর্নীতিবাজদের স্বার্থরক্ষায় ব্যস্ত: বাম জোট

রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘সরকার ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও দুর্নীতিবাজদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত। সরকার পাটকল চালুসহ কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যর্থ, জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করেছে।’
বাম জোট
খুলনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাম জোটের প্রতিনিধি সভা। ছবি: সংগৃহীত

বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে আধুনিকায়ন করে পাটকল চালু, শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া পরিশোধ ও সারাদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় খুলনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাম জোটের প্রতিনিধি সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।

রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, 'সরকার ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও দুর্নীতিবাজদের স্বার্থরক্ষায় ব্যস্ত। সরকার পাটকল চালুসহ কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যর্থ, জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'নিত্যপণ্যের ঊর্ধগতিতে ও বিভিন্ন এলাকায় সৌন্দর্যবর্ধনের নামে বিকল্প সংস্থান ছাড়া রিকশা, হকার উচ্ছেদ, আর্থিক সংকটের কথা বলে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুতি, চাকরি ছাড়তে বাধ্য করার পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে, আর সরকার নতুন করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারি অনেক পদ খালি রয়েছে, অথচ নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। এ সময় সরকার কাজ দিতে না পারলেও স্ব-কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারীদের উচ্ছেদ করে দেশে নতুন করে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে, যার দায় সরকারকেই নিতে হবে।'

'সরকারি তথ্যই বলছে, দেশের প্রায় ৪১ শতাংশ তরুণ নিষ্ক্রিয়। এরা পড়াশোনায় নেই, কর্মসংস্থানে নেই; এমনকি কোনো কাজের জন্য প্রশিক্ষণও নিচ্ছেন না। মেয়েদের মধ্যে নিষ্ক্রিয়তার হার বেশি, ৬১ দশমিক ৭১ শতাংশ। এ অবস্থায় দেশ নতুন ধরনের সংকটের দিকে এগুচ্ছে', যোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'নীতিহীন রাজনীতি আজ মানুষকে রাজনীতিবিমুখ করে হতাশ করে তুলেছে। এ অবস্থার পরিবর্তনে নীতিনীস্ঠ বাম গণতান্ত্রিক শক্তি একদলীয় শাসনের অবসান, মানুষের গণতন্ত্র-ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠাসহ জনজীবনের সংকট দূর করার সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।'

তিনি সচেতন দেশবাসীকে এই নীতিনিষ্ঠ শক্তির শক্তির সমর্থনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

সিপিবির খুলনা জেলা সভাপতি ডা. মনোজ দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) কেন্দ্রীয় নেতা শফিউর রহমান, খুলনা বাম জোটের এস এ রশিদ, গাজী নাওশের আলী, কোহিনুর আক্তার কনা, মিজানুর রহমান বাবু, আব্দুল ওহাব, মোজাম্মেল হক খান, আব্দুল হালিম, আব্দুল করিম, অশোক সরকার, গাজী আফজাল হোসেন, চীত্ত তালুকদার, প্রণয় মজুমদার, আনিসুর রহমান মিঠু, মোস্তফা খালিদ খসরু, রুহুল আমিন,মাসুম মনজুর, নিতাই পাল, মোহাচ্ছন্ন আলম লেনিন প্রমুখ।

সভায় নেতারা অর্থপাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান ও শ্বেতপত্র প্রকাশ, পাচারের টাকা ও খেলাপি ঋণ আদায়, এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি, আর্থিক খাতের দুর্নীতি, অবস্থাপনা, অনিয়ম দূর করাসহ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার দাবিতে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক অভিমুখে মিছিল ও ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ এবং বিভাগীয় সদরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে ও সারাদেশে জেলা সদরে বিক্ষোভ সফল করার আহ্বান জানান।

Comments