বিএনপি নেতাকে ‘নৌকার মাঝি’ দেখতে চান যুবলীগ নেতা, ভিডিও ভাইরাল

বক্তব্য রাখছেন গোলাম হোসেন | ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর রায়পুরায় বিএনপির এক নেতাকে 'নৌকার মাঝি' হিসেবে দেখতে এক যুবলীগ নেতা, এমন বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

স্থানীয় যুবলীগ নেতা গোলাম হোসেন সরকার বিএনপির কর্মী সভায় উপস্থিত হয়ে এমন বক্তব্য দেন।

গতকাল রোববার বিকেলে উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নের বগডহরিয়াকান্দি গ্রামে চাঁনপুর ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত কর্মী সভায় এ ঘটনা ঘটে।

কর্মী সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির সংসদ সদস্য প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল।

ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল | ছবি: সংগৃহীত

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফকে উদ্দেশ্য করে যুবলীগ নেতা গোলাম হোসেন বলছেন, 'আগামী দিনে রায়পুরার নৌকার মাঝি হিসেবে, গণমানুষের নেতা হিসেবে, রায়পুরার মাঝি হিসেবে (আশরাফ উদ্দিন বকুলকে) দেখতে চাই।' 

এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের অনেকে তাকে থামিয়ে দিতে চাইলে গোলাম হোসেন বলেন, 'কী হইছে? নৌকার মাঝি না, রায়পুরার মাঝি এনে কইসি।'

এ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় বিএনপি কর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, গোলাম হোসেন সরকার আওয়ামী লীগের লোক হলেও তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দল করে থাকেন। যে দল যখন সুবিধায় থাকেন, তখন তিনি সেটাই করেন।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, গোলাম হোসেন সরকার যুবলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যারিস্টার তৌফিকুর রহমানের ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত এবং তার বিভিন্ন কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নিতেন। এমনকি সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর সঙ্গেও তার ঘনিষ্টতা ছিল।

এছাড়া, তিনি জাতীয় পার্টি থেকে রায়পুরা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২০১৪ সালে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।

যুবলীগ নেতার এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম ভূইয়া রুহেল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ৫ আগস্টের আগে যারা মাঠে ছিল না, জনবিচ্ছিন্ন ছিলেন, তারা ৫ আগস্টের পরে জনসম্পৃক্ততা দেখাতে যারা আওয়ামী সুবিধাভোগী ছিলেন তাদের নিয়ে প্রোগ্রাম করছেন। জনগণ সবই বোঝে, সবই দেখে। বিএনপির যেসব নেতাকর্মী জেল-জুলুম-নিপীড়নের শিকার হয়ে রাজনীতি করেছেন তারা হাইব্রিডদের সঙ্গে আপস করবেন না। বিএনপির নেতাকর্মীদের না পেয়ে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের দলে ঠাঁই দিচ্ছেন।'

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহসম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ৫ আগস্টের আগে যারা আন্দোলন সংগ্রামে বিএনপির সঙ্গে ছিল না, তারা সামান্য বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কিত আলোচনা-সমালোচনা করছে। গোলাম হোসেন সরকার বক্তব্য দিতে গিয়ে স্লিপ অব টাং (ভুলে বলে ফেলেছেন) করেছে।'

গোলাম হোসেনের রাজনৈতিক দলের পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী যারা বিএনপির ক্ষতি করার সঙ্গে জড়িত ছিল না, তাদের দলে নিয়ে কাজ করতে সমস্যা নেই। তাছাড়া আমাকে ভালবেসে কেউ ছবি বা মাইকে কথা বলতেই পারে। সমাবেশে সে হুট করে প্রবেশ করে বক্তব্য দেয় এবং ভুল বক্তব্য দেওয়ার পর তার হাত থেকে মাইক কেড়ে নেওয়া হয়।'

Comments

The Daily Star  | English

Killing of trader in old Dhaka: Protests erupt on campuses

Protests were held on campuses and in some districts last night demanding swift trial and exemplary punishment for those involved in the brutal murder of Lal Chand, alias Sohag, in Old Dhaka’s Mitford area.

2h ago