প্রতিহিংসা নয়, সবাই মিলে দেশকে বাসযোগ্য করব: খালেদা জিয়া

প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধ পথে না গিয়ে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ থেকে গণতান্ত্রিক ও বাসযোগ্য দেশ গড়ে তুলতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

আজ বৃহস্পতিবার বিএনপির বর্ধিত সভায় দেওয়া বক্তব্যে খালেদা জিয়া এই কথা বলেছেন। চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে অবস্থান করায় সেখান থেকেই দলের বর্ধিত সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন তিনি।

জরুরি ন্যূনতম সংস্কার সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচন দিতে তার দলের দাবির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, জনগণের প্রত্যাশা রাষ্ট্র মেরামতের ন্যূনতম সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন সম্পন্ন করতে আমার অবর্তমানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং আপনাদের সকলকে সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে নিরন্তন কাজ করে দলকে সুসংহত করেছেন।

দলের নেতাদের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, 'আমি বিশ্বাস করি আপনারা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে আরও উজ্জীবিত হয়ে আগামী নির্বাচনে সাফল্যের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন। এমন কোন কাজ করবেন না যাতে আপনাদের এতদিনকার সংগ্রাম আত্মত্যাগ বিফলে যায়।'

তিনি বলেন, 'আমাদের সবসময় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সেই উক্তি মনে রাখা দরকার। ব্যক্তির চেয়ে দল বড় দলের চেয়ে দেশ। বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ বিশেষ করে তরুণ সমাজ আজ ইতিবাচক গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।'

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে খালেদা জিয়া তার বক্তব্য শুরু করেন। তিনি বলেন, আজ দীর্ঘ ছয় বছর পর আপনারা আবার একসাথে ফ্যাসিস্ট মুক্ত বাংলাদেশে একত্রিত হতে পেরেছেন। সেজন্য আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া আদায় করছি। দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী বিরোধী সংগ্রাম যারা শহীদ হয়েছেন এবং সম্প্রতি জুলাই আগস্টের ফ্যাসিবাদী শাসকদের নির্মম ভয়াবহ দমনীতির কারণে গণহত্যায় যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। যারা আহত হয়েছেন তাদের প্রতি জানাচ্ছি আন্তরিক সমবেদনা। আমি চিকিৎসার কারণে যুক্তরাজ্যে অবস্থান কর আমি সবসময় আপনাদের পাশেই আছি।

তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর গণতন্ত্র ও আমার মুক্তির জন্য আপনারা যে নিরন্তন সংগ্রাম করেছেন এবং আমাদের অসংখ্য সহকর্মী প্রাণ দিয়েছেন জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং প্রায় সোয়া লক্ষ মিথ্যা মামলায় জর্জরিত হয়েছে। এখনো আদালতের বারান্দায় ন্যায়বিচারের জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আপনাদের এ ত্যাগ শুধু দল নয় জাতি চিরকাল স্মরণ রাখবে। দেশ আজ এক সংকটময় সময় অতিক্রম করছে। আপনাদের এবং ছাত্রদের সমন্বিত আন্দোলনের ফলে ফ্যাসিবাদ বিদায় নিয়েছে।

খালেদা জিয়া আরও বলেন, ক্ষুদ্র সংকীর্ণতা ভুলে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে কাজ করতে হবে। এখনো ফ্যাসিস্টের দোসররা এবং বাংলাদেশের শত্রুরা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্জনকে নস্যাৎ করার জন্য গভীর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে।

ইস্পাত কঠিন ঐক্যের মাধ্যমে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দিতে হবে। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য আমাদের সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। দলকে আন্দোলন, সংগ্রাম ও রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্ব প্রদানে আরও ঐক্যবদ্ধ এবং সুসংতভাবে গড়ে তুলি।

Comments

The Daily Star  | English
future of bangladesh after banning awami league

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

15h ago