লালদীঘি ময়দান ফিরে পেল শিশুরা

অবশেষে চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দান খুলে দেওয়া হলো শিশুদের জন্য। প্রায় তিন বছর পর আজ সোমবার মাঠটি উন্মুক্ত করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক ললদীঘি ময়দান। ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

অবশেষে চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দান খুলে দেওয়া হলো শিশুদের জন্য। প্রায় তিন বছর পর আজ সোমবার মাঠটি উন্মুক্ত করা হয়েছে।

আজ সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণি ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রদের মধ্যে ক্রিকেট ম্যাচের মধ্য দিয়ে মাঠে খেলা শুরু হয়েছে।

চার কোটি টাকায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর এই মাঠটি সংস্কার করেছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের কাজ গত বছর শেষ হয়। তবে এক বছর আগে কাজ শেষ হলেও উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সময়সূচি না পাওয়া যাওয়ায় মাঠের দরজা বন্ধ রাখা হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম সফরকালে সংষ্কার করা লালদীঘি ময়দান উদ্বোধন করেন।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর আজ সোমবার শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দান খুলে দেওয়া হয়।

লালদিঘি ময়দানে নির্মাণ করা হয়েছে স্থায়ী মঞ্চ। ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

মাঠে খেলতে আসা সৈয়দ আজমাইল হক নামের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী দ্য ডেইলি স্টারকে বলে, প্রায় তিন বছর পর মাঠে খেলতে পেরে তারা খুবই খুশি।

সে বলে, 'এটা আমাদের স্কুলের মাঠ। কিন্তু বছরের পর বছর মাঠটি বন্ধ থাকায় আমরা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত ছিলাম। এখন আবার মাঠে খেলতে পারব।'

তার কথারই পুনরাবৃত্তি করে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী রোবায়েত হাসান জানায়, তার বাসার আশপাশে খেলার মাঠ নেই।  এখন অবসর সময়ে সে এখানে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলতে চায়।

মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীরা এই মাঠে খেলতে পারবে এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পারবে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মাঠের পরিচ্ছন্নতার দেখভাল করবে এবং চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটি ব্যবস্থাপনা দেখভাল করবে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, মাঠ ব্যবস্থাপনার জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রণয়ন করা হয়েছে।

'সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে এখানে এসওপি অনুসরণ করে অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হবে।'

মাঠ পরিদর্শনে এসে অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক রাজীব নন্দী বলেন, সংস্কার প্রকল্পের থিম প্রশংসনীয়। বসার ব্যবস্থা এবং হাঁটার পথ রাখায় নগরবাসী উপকৃত হবে।

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা দাবি আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের ঐতিহাসিক আন্দোলনের বিষয়বস্তু নিয়ে মাঠ সংস্কার করা হয়েছে।

মাঠটি লালদীঘি ময়দান নামে পরিচিত হলেও এটি চট্টগ্রামের সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি আশপাশের এলাকার শিশুরা এই মাঠে খেলাধুলা করে।

Comments