এ মাসেই উন্মুক্ত হচ্ছে লালদীঘি মাঠ

ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানের সংস্কারকাজ শেষ হয়েছে এক বছরেরও বেশি সময় আগে। তবে, আনুষ্ঠানিকভাবে মাঠটি এখনো পুনরায় খুলে না দেওয়ায় শিশুরা খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
লালদীঘি ময়দান। ছবি: স্টার

ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানের সংস্কারকাজ শেষ হয়েছে এক বছরেরও বেশি সময় আগে। তবে, আনুষ্ঠানিকভাবে মাঠটি এখনো পুনরায় খুলে না দেওয়ায় শিশুরা খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এ মাঠে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ (ইইডি) প্রায় ৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, যা ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়ে গত বছর শেষ হয় বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইইডির এক কর্মকর্তা বলেন, 'যদিও এক বছরেরও বেশি সময় আগে সংস্কারকাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে মাঠের উদ্বোধন করা হয়নি।'

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, ৬ দফা দাবি আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান ও মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের ঐতিহাসিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই প্রকল্পের থিম করা হয়।

লালদীঘি ময়দান নামে পরিচিত হলেও সরকারিভাবে এই মাঠটির মালিকানা চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের। এই বিদ্যালয় এবং লালদীঘি ও আশপাশের এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এই মাঠে খেলাধুলা করে।

গত সপ্তাহে সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায়, মাঠটির ৪ পাশের সীমানা টিন দিয়ে ঢাকা।

নগরীর কেসি দে সড়ক এলাকার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী হাসান আল বাকের বলেন, '২ বছর ধরে আমরা এখানে খেলতে পারছি না।'

৭০ বছর বয়সী স্থানীয় বাসিন্দা তাপস মিত্র বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক সমাবেশ হয়েছিল লালদীঘিতে। এটি এমন একটি জায়গা যেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমাবেশে ভাষণ দিয়েছিলেন।'

'আমি আনন্দিত যে সরকার এই মাঠটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে, যেহেতু সংস্কারকাজ শেষ, তাই শিগগিরই শিশুদের জন্য মাঠটি উন্মুক্ত করা উচিত', বলেন তিনি।

এই প্রকল্পে বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা দাবির ঘোষণাকে স্মরণীয় করে রাখতে মাঠে তৈরি করা হয়েছে 'ছয় দফা মঞ্চ' নামে একটি মঞ্চ। এ ছাড়াও, ১৮টি পোড়ামাটির শিল্পকর্ম করা রয়েছে, যা দেশের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলোকে চিত্রিত করে৷ একইসঙ্গে অনেক ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের প্রতিকৃতি রয়েছে সেখানে। আর শিশুদের জন্য বসার ব্যবস্থা, হাঁটার পথ ও একটি পার্ক জোন রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইইডির চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মাঠটিতে ৩৬৮ মিটার হাঁটার রাস্তাসহ ৩৬টি বেঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে।'

মাঠটি উদ্বোধন কবে করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সঠিক তারিখ সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলতে পারবেন।'

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী আগামী ১৭ অক্টোবর মাঠটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। এটি ২ অক্টোবর উদ্বোধন করার কথা ছিল। কিন্তু, প্রধানমন্ত্রীর শিডিউল না পাওয়ায় উদ্বোধনের সময় পিছিয়েছে।'

Comments