যেভাবে টেডি রুজভেল্ট থেকে ‘টেডি বিয়ার’
যুক্তরাষ্ট্রের ২৬তম প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট 'টেডি রুজভেল্ট' নামে বেশি পরিচিত ছিলেন। তার নাম থেকেই 'টেডি বিয়ার' নামটি এসেছে। কীভাবে সেটি হলো, তা জানব এখন।
টেডি রুজভেল্ট শিকার করতে অত্যন্ত পছন্দ করতেন। ১৯০২ সালের ১৪ নভেম্বর মিসিসিপির গভর্নর এন্ড্রু এইচ. লনজিনোর আমন্ত্রণে দলবল নিয়ে ওই রাজ্যে ভালুক শিকারে যান প্রেসিডেন্ট। কিন্তু ভাগ্য সহায় হচ্ছিল না তার। দলের অন্যরা শিকার করতে পারলেও রুজভেল্ট একটা ভালুকও শিকার করতে পারছিলেন না।
প্রেসিডেন্টের অবস্থা দেখে তার কয়েকজন সহযোগী একটি ভালুক ধরে গাছের সঙ্গে বেঁধে রুজভেল্টকে গুলি করতে বলেন। কিন্তু রুজভেল্ট এভাবে গুলি করতে অস্বীকার করেন।
পত্রপত্রিকাগুলো প্রেসিডেন্টের এই বদান্যতার খবর লুফে নেয় এবং খুব দ্রুত সারাদেশে এটি ছড়িয়ে পড়ে। পত্রিকাগুলোতে তখন এই ঘটনা নিয়ে এত এত সংবাদ ছাপানো হয়েছে যে এটি রীতিমতো আলোড়ন তৈরি করেছিল।
ক্লিফোর্ড বেরিম্যান নামের একজন রাজনৈতিক কার্টুনিস্ট এই ঘটনার খবর পত্রিকায় পড়ে বিষয়টি নিয়ে মজার ছলে একটি কার্টুন আঁকেন। ১৯০২ সালের ১৬ নভেম্বর বিখ্যাত ওয়াশিংন পোস্ট পত্রিকায় বেরিম্যানের সেই কার্টুনটি ছাপা হয়। কার্টুনটি দেখে ব্রুকলিনের একটি চকলেটের দোকানের মালিক মরিস মিচকমের মাথায় আরেকটি বুদ্ধি আসে। মিচকম এবং তার স্ত্রী আগে থেকেই খেলনা পশুপাখি বানাতেন। রুজভেল্টের ঘটনাটি যেহেতু তখন 'টক অব দ্য কান্ট্রি', তাই তিনি একটি খেলনা ভালুক তৈরি করে রুজভেল্টের স্মরণে সেটির নাম দেন 'টেডিস বিয়ার'।
মিচকম পরে প্রেসিডেন্টের কাছে চিঠি লিখে তার তৈরি ভালুকে 'টেডি' নামটি ব্যবহারের অনুমতি চান এবং রুজভেল্ট তাকে অনুমতিও দেন। এরপর মিচকম টেডি বিয়ারের উৎপাদন ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দেন। এই খেলনা ভালুক খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করার পর মিচকম 'আইডিয়েল টয় কোম্পানি' নামে নতুন একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। সেই থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে টেডি বিয়ারের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে।
Comments