জানা-অজানা

আইভ্রুর কাজ কী

আমাদের চোখের জন্য ভ্রু হচ্ছে ‘সুইস আর্মি নাইফ’। অর্থাৎ, এটা একাধিক কাজ করে। চোখের প্রতিরক্ষায় এর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।
অবাচনিক যোগাযোগেও আমরা ভ্রু ব্যবহার করি। ছবি: স্টার

আমাদের চোখের জন্য ভ্রু হচ্ছে 'সুইস আর্মি নাইফ'। অর্থাৎ, এটা একাধিক কাজ করে। চোখের প্রতিরক্ষায় এর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।

প্রথমত, ভ্রু আমাদের চোখকে রক্ষা করে। চোখের উপরে এবং নিচে আইভ্রু এমনভাবে বাঁকানো থাকে, যার ফলে বৃষ্টি, ঘাম ও আর্দ্রতা আমাদের চোখের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না এবং আমাদের দৃষ্টি সবসময় স্বচ্ছ থাকে। বাইরের ধুলাবালি বা ছোটখাটো বস্তু থেকেও ভ্রু আমাদের চোখকে রক্ষা করে।

অবাচনিক যোগাযোগের জন্যও আমরা ভ্রু ব্যবহার করি। আমাদের চেহারার অভিব্যক্তি নিয়ে গবেষণাকারী বিজ্ঞানীরা বলেন, বিস্ময়, আনন্দ, কষ্ট, ক্ষোভ ইত্যাদির মৌখিক অভিব্যক্তি প্রকাশের ক্ষেত্রে আইভ্রু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

২০১৮ সালে গবেষকরা অনুসন্ধান করার চেষ্টা করেছেন যে কেন হোমো নিয়ানডিথ্রাল এবং হোমো ইরাকটাসের ভ্রু এখনকার মানুষদের চেয়ে আরও গাঢ় ও বড় ছিল। তারা অনুমান করছেন, হয়তো তাদের কামড়ের জোর এর একটা কারণ হতে পারে। কিন্তু গবেষকরা যখন হোমিনিনদের থ্রিডি মডেল তৈরি করে দেখতে পান, এই যুক্তি টেকসই নয়।

গবেষকরা তখন অনুমান করেন, তাদের এমন গাঢ় ভ্রুর পেছনে পারস্পরিক সামাজিক যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।

হাজার বছর ধরে আমাদের ভ্রু ক্রমান্বয়ে ছোট হয়েছে এবং অবাচনিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠছে। যেমন: এখনকার সাংকেতিক ভাষা ব্যবহারকারীরা যোগাযোগের জন্য তাদের হাতের সঙ্গে ভ্রুও ব্যবহার করেন।

ভ্রু কিন্তু মানুষের চেহারার জন্য আইডি কার্ড হিসেবেও কাজ করে। সময়ের সঙ্গে চেহারায় বদল এলেও ভ্রু অপরিবর্তিত থাকে, যার ফলে বহু বছর পরেও একজন মানুষকে যথার্থভাবে চেনা যায়।

২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) এক জরিপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের ২টি ফটোশপ করা ছবি দেখানো হয়। একটিতে নিক্সনের চোখ ফটোশপে মুছে ফেলা হয়, আরেকটিকে তার ভ্রু মুছে ফেলা হয়। জরিপে অংশগ্রহণকারীরা ভ্রু ছাড়া নিক্সনকে চিনতে বেশি সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। অন্যান্য সেলিব্রেটিদেরকে চেনার ক্ষেত্রেও জরিপে অংশগ্রহণকারীরা তাদের ভ্রু দেখেই সহজেই চিনতে পেরেছেন।

Comments