ইসরায়েলি হামলায় ত্রাণকর্মী নিহতের ঘটনায় বাইডেনের ‘ক্রোধ’
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় সাত ত্রাণকর্মী নিহতের ঘটনায় ক্রোধে ফেটে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি এ বিষয়টি নিয়ে ইসরায়েলের কড়া সমালোচনা করেন এবং একে হৃদয়বিদারক ঘটনা বলে অভিহিত করেন।
আজ বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।
ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের শুরু থেকেই এক ধরনের দ্বিমুখী নীতি অবলম্বন করে এসেছেন জো বাইডেন। এক দিকে তিনি ইসরায়েলকে দ্বিগুণ পরিমাণ অস্ত্র দেওয়ার অনুমোদন দিচ্ছেন আর অপরদিকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সমালোচনায় মুখর হচ্ছেন। আবার এটাও নিশ্চিত করেছেন, ইসরায়েল থেকে কখনোই মুখ ফিরিয়ে নেবে না ওয়াশিংটন।
মঙ্গলবার রাতে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জো বাইডেন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন, হামাসের বিরুদ্ধে সংঘাতে নিরীহ বেসামরিক ব্যক্তিদের সুরক্ষিত রাখতে ব্যর্থ হয়েছে দেশটি।
বাইডেন বলেন, 'যতজন ত্রাণকর্মী নিহত হয়েছেন, সে সংখ্যা বিচারে এটাই সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাত। গাজায় মানবিক ত্রাণ বিতরণে জটিলতা দেখা দেওয়ার মূল কারণ এটাই—ইসরায়েল বেসামরিক ব্যক্তিদের কাছে অত্যন্ত জরুরি মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার কাজে নিয়োজিত ত্রাণকর্মীদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য যথেষ্ট উদ্যোগ নেয়নি।'
বাইডেন নিহত ত্রাণকর্মীদের 'সাহসী ও নি:স্বার্থ' বলে অভিহিত করেন।
'গতকালের ঘটনার মতো আর কোন ঘটনা যেন না ঘটে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। ইসরায়েল বেসামরিক মানুষের সুরক্ষায় যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি। যুক্তরাষ্ট্র বারবার ইসরায়েলকে অনুরোধ করেছে হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পরিচালনার করে ত্রাণ কর্মকাণ্ডে বিঘ্ন সৃষ্টি না করতে। যাতে আর কোনো বেসামরিক প্রাণ না ঝরে যায়', যোগ করেন তিনি।
বাইডেন জানান, ইসরায়েলকে দ্রুত এই ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে এবং সব তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে।
তিনি বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র গাজায় ফিলিস্তিনি বেসামরিক মানুষের কাছে মানবিক ত্রাণ পৌঁছানো নিশ্চিত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।'
'আমি ইসরায়েলের ওপর চাপ অব্যাহত রাখব। আমরা জিম্মি-বন্দি মুক্তির বিনিময়ে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির চুক্তির জন্যেও চাপ দিচ্ছি। আমার একটি প্রতিনিধিদল এ মুহূর্তে কায়রোয় এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে', বলেন বাইডেন।
মার্কিন মানবিক ত্রাণসংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের (ডব্লিউসিকে) সাত কর্মী সোমবার রাতে ইসরায়েলি বিমানহামলায় নিহত হন। গাজার দেইর এল-বালাহ শহরে খাবার বিতরণ করে ফিরে আসার পথে তাদেরকে বহনকারী গাড়ি বহরের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েল।
এই হামলায় এক মার্কিন-কানাডীয়, অস্ট্রেলীয়, পোলিশ, ফিলিস্তিনি ও যুক্তরাজ্যের তিন নাগরিক নিহত হন।
মঙ্গলবার নেতানিয়াহু এই হামলার দায় স্বীকার করে জানান, এটি অনিচ্ছাকৃত ভুল এবং 'মর্মান্তিক' ঘটনা।
বাইডেন দাবি করে যাচ্ছেন, তিনি বেসামরিক ব্যক্তিদের সুরক্ষা দিতে চান। তা সত্ত্বেও তিনি ইসরায়েলে আরও অস্ত্র পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছেন।
ইসরায়েলের প্রতি অন্ধ সমর্থন জানিয়ে ইতোমধ্যে নিজ দলের প্রগতিশীল সমর্থক, মানবাধিকারকর্মী, মার্কিন-আরব নাগরিক ও মুসলিমদের বিরাগ ভাজন হয়েছেন বাইডেন।
Comments