পাবলো এসকোবারের শখের জলহস্তী যেভাবে কলম্বিয়ার মাথা ব্যথার কারণ

প্রায় ১ বছর ধরে বাড়তি জলহস্তীগুলোকে ভারত ও মেক্সিকো নেওয়ার ব্যাপারে কাজ চলছে
পাবলো এসকোবার ও তার শখের জলহস্তী। ছবি: সংগৃহীত
পাবলো এসকোবার ও তার শখের জলহস্তী। ছবি: সংগৃহীত

কলম্বিয়ার 'কোকেন সম্রাট' পাবলো এসকোবার নিজের শখ মেটাতে ১৯৮০'র দশকে অবৈধভাবে আফ্রিকা থেকে ৪টি জলহস্তী এনেছিলেন। এসকোবারের খামারবাড়িতে থেকে জলহস্তী বংশবিস্তার করেছে, যা এখন দেশটির সরকারের মাথা ব্যথার কারণ।

আজ শুক্রবার বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে জানা গেছে, কলম্বিয়া সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অন্তত ৭০টি জলহস্তী ভারত ও মেক্সিকোয় স্থানান্তরের পরিকল্পনা করছে।

কলাম্বিয়ার রাজধানী বোগোতা থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে ম্যাগদালেনা নদীর তীরে হাসিয়েনদা নাপোলেস র‍্যাঞ্চের ধারণ ক্ষমতাকে ছাড়িয়ে গেছে এই অতিকায় জলহস্তীর পাল। এদের গড় ওজন ৩ টন।

১৯৯৩ সালে পুলিশের গুলিতে নিহত হন এসকোবার। এরপর থেকে তার মালিকানাধীন খামারবাড়ি ও জলহস্তীগুলো স্থানীয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়। খামারবাড়ি পরিত্যক্ত হয়ে গেলে জলহস্তীরা নদীবহুল এলাকা ও অনুকূল পরিবেশ পেয়ে অবাধে বংশবিস্তার করে।

পাবলো এসকোবারের শখের জলহস্তী। ছবি: এএফপি
পাবলো এসকোবারের শখের জলহস্তী। ছবি: এএফপি

বিজ্ঞানীর সতর্ক করেছেন, কলম্বিয়ার জলহস্তীদের খাদ্য শৃঙ্খলে কোনো প্রাকৃতিক ভক্ষক নেই। যে কারণে তারা জীববৈচিত্র্যের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাদের বিষ্ঠা নদীর পানিকে দূষিত করে এবং অন্যান্য প্রাণীর খাদ্য সংকট সৃষ্টি করতে পারে। গত বছর কলম্বিয়া সরকার এই জলহস্তীগুলোকে 'বিষাক্ত ও আক্রমণাত্মক প্রজাতি' হিসেবে ঘোষণা দেয়।

প্রায় ১ বছর ধরে বাড়তি জলহস্তীগুলোকে ভারত ও মেক্সিকো নেওয়ার ব্যাপারে কাজ চলছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, জলহস্তীগুলোকে খাবারের লোভ দেখিয়ে বড় আকারের লোহার খাঁচায় আটকে ট্রাকে করে ১৫০ কিলোমিটার দূরে রিওনেগ্রো শহরের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেওয়া হবে। সেখান থেকে তাদেরকে উড়োজাহাজে করে ভারত ও মেক্সিকোর পশু অভয়ারণ্য ও চিড়িয়াখানায় পাঠানো হবে।

আপাতত ভারতে ৬০টি ও মেক্সিকোতে ১০টি জলহস্তী পাঠানোর পরিকল্পনা আছে।

পাবলো এসকোবার। ফাইল ছবি: এএফপি
পাবলো এসকোবার। ফাইল ছবি: এএফপি

মূলত যে জলহস্তীগুলো খামারবাড়ির বাইরে বাস করছে, সেগুলোকেই বিদেশে পাঠানো হচ্ছে। খামারবাড়ির ভেতরের জলহস্তীগুলো জীববৈচিত্র্যের ওপর তেমন বড় কোনো হুমকি নয়, কারণ তারা নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে বসবাস করে।

স্থানান্তর প্রক্রিয়ার ফলে জলহস্তীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ হবে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এ ধরনের আক্রমণাত্মক প্রাণীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের অপর উপায় হচ্ছে তাদেরকে বিষপ্রয়োগে হত্যা করা, যা নিষ্ঠুরতা।

ইকুয়েডর, ফিলিপাইন ও বোতসওয়ানাও তাদের নিজ নিজ দেশের জন্য কলম্বিয়ার জলহস্তী নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে প্রতিবেদনে জানা গেছে।

 

Comments