কেনিয়ায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে, ২৭০ জনেরও বেশি গ্রেপ্তার

এক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করছে কেনিয়ার পুলিশ। ছবি: এএফপি
এক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করছে কেনিয়ার পুলিশ। ছবি: এএফপি

প্রায় দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে কেনিয়ার জনগণ।গতকাল ২৭০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

কেনিয়ার পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীর ছদ্মবেশে ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ অপরাধমূলক কাজে জড়িয়েছেন।

এক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করছে কেনিয়ার পুলিশ। ছবি: এএফপি
এক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করছে কেনিয়ার পুলিশ। ছবি: এএফপি

কেনিয়ার বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে লুটপাট ও ভাঙচুরের সংবাদ পাওয়া গেছে। বিক্ষোভকারীদের অনেকেই দাবি করেছেন, তাদের সঙ্গে 'চোর-ডাকাতরাও' ঢুকে পড়েছে।

কেনিয়ার ফৌজদারি অপরাধ তদন্ত বিভাগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেছে, 'সারা দেশে নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীর ছদ্মবেশে থাকা অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত মানুষদের চিহ্নিত করে তাদেরকে আটক করেছে।'

কেনিয়ায় বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে টিয়ার গ্যাস শেল ছুঁড়ছে পুলিশ। ছবি: এএফপি
কেনিয়ায় বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে টিয়ার গ্যাস শেল ছুঁড়ছে পুলিশ। ছবি: এএফপি

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, নাইরোবি থেকে ২০৪ ও দেশের অন্যান্য অংশ থেকে অপর ৬৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল রাজধানী নাইরোবিতে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘাত-সহিংসতা বিচ্ছিন্নভাবে দিনভর অব্যাহত ছিল।

বিক্ষোভকারীরা পুলিশের দিকে পাথর ছুড়ে মারে ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট চালায়। পুলিশ টিয়ার গ্যাসের শেল ছুড়ে জবাব দেয়। 

বিক্ষোভকারীরা অনলাইনে প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোর বিরুদ্ধে বিষোদগার প্রকাশ অব্যাহত রেখেছে। প্রেসিডেন্ট রুটো গত সপ্তাহে বিতর্কিত একটি বিল প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পরও বিক্ষোভ চলছে। এই বিলের ঘোষণায় প্রায় দুই সপ্তাহ দেশটিতে সহিংস বিক্ষোভ চলে।

কেনিয়া ন্যাশনাল কমিশন অন হিউম্যান রাইটস (কেএনসিএইচআর) সোমবার জানায়। দুই সপ্তাহের বিক্ষোভে ৩৯ জন নিহত ও ৩৬১ জন আহত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার সবচেয়ে বড় আকারে নাইরোবিতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিল। বিক্ষোভকারীদের দমনে সরকারের 'মাত্রা ছাড়ানো ও অতিরিক্ত' বল প্রয়োগের সমালোচনা করেছে এই মানবাধিকার সংস্থাটি।

কেনিয়ায় পুলিশের উদ্দেশে টিয়ার গ্যাস শেল ফেরত পাঠাচ্ছেন এক বিক্ষোভকারী। ছবি: এএফপি
কেনিয়ায় পুলিশের উদ্দেশে টিয়ার গ্যাস শেল ফেরত পাঠাচ্ছেন এক বিক্ষোভকারী। ছবি: এএফপি

মূলত কেনিয়ার তরুণ প্রজন্মের (জেনারেশন জেড বা জেন জি) নেতৃত্বে পরিচালিত এই বিক্ষোভকে প্রেসিডেন্ট রুটো 'রাষ্ট্রদ্রোহ' বলে অভিহিত করেছেন।

২০২২ সালে আফ্রিকার সবচেয়ে স্থিতিশীল দেশের অন্যতম কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটাই উইলিয়াম রুটোর জন্য সবচেয়ে সংকটজনক মুহূর্ত—দাবি করেছেন বিশ্লেষকরা।

গত সপ্তাহের রক্তাক্ত সহিংসতার পর কেনিয়ার তরুণরা গতকাল মঙ্গলবারকে 'শান্তিপূর্ণ' দিন হিসেবে ঘোষণা দেয়। নেতাবিহীন এই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরা 'রুটোমাস্টগো' (রুটোকে বিদায় নিতেই হবে) হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে পোস্ট করছেন।

কেনিয়ায় এক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। ছবি: এএফপি
কেনিয়ায় এক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। ছবি: এএফপি

মঙ্গলবার বিকেল থেকেই নাইরোবির মূল বাণিজ্যিক কেন্দ্রে বিচ্ছিন্নভাবে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ টিয়ার গ্যাস শেল ও জলকামান ব্যবহার করে পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে নিতে চায়। তবে বিক্ষোভকারীরা বলছেন, তারা সহিংসতার সঙ্গে জড়িত নন।

জনপ্রিয় জেন-জি বিক্ষোভকারী হানিফা আদান এক্সে লেখেন, 'বিক্ষোভকারীদের মাঝে চোর-ডাকাত ঢুকে পড়েছে।'

গত মঙ্গলবার কর বাড়ানোর বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নেয়। মূলত, আইনপ্রণেতারা বিলটি পাস করার পর থেকেই গোলযোগ দেখা দেয়।

পার্লামেন্টের ভোটের ফল ঘোষণার পর উত্তেজিত জনগণ নাইরোবির কেন্দ্রে অবস্থিত পার্লামেন্ট কমপ্লেক্সে আংশিকভাবে আগুন ধরিয়ে দিলে পুলিশ তাদের ওপর এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। সে সময় ৩৯ জন নিহত হন।

Comments

The Daily Star  | English

What if the US election ends in a Trump-Harris tie?

While not highly likely, such an outcome remains possible, tormenting Americans already perched painfully on the edge of their seats ahead of the November 5 election

1h ago