ইউরোপ

ফিনল্যান্ড ন্যাটোতে যোগ দিতে পারলেও এখনি পারছে না সুইডেন

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ইঙ্গিত দিয়েছেন যে আঙ্কারা ফিনল্যান্ডকে ন্যাটো সদস্য হিসেবে মেনে নিতে যাচ্ছে। তবে সুইডেনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হবে।
ফিনল্যান্ডের ন্যাটো সদস্যপদ
রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ইঙ্গিত দিয়েছেন যে আঙ্কারা ফিনল্যান্ডকে ন্যাটো সদস্য হিসেবে মেনে নিতে যাচ্ছে। তবে সুইডেনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হবে।

আজ সোমবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।

স্টকহোমে বিক্ষোভে এক কট্টর ডানপন্থি রাজনীতিক পবিত্র কুরআনের একটি কপি পোড়ালে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের সঙ্গে ন্যাটো সদস্যপদের বিষয়ে আলোচনা স্থগিত করে আঙ্কারা।

এ ঘটনার কয়েকদিন পর এক বক্তব্যে এরদোয়ান সুইডেনের বিষয়ে তার দ্বিধার কথা জানান।

গতকাল রোববার এরদোয়ান টেলিভিশন ভাষণে বলেন, 'ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার আবেদনপত্রের বিষয়ে আমরা ফিনল্যান্ডকে ভিন্ন বার্তা দিতে পারি। সুইডেন যখন আমাদের বার্তা দেখবে, তারা তখন বিস্মিত হবে। কিন্তু ফিনল্যান্ডের উচিৎ হবে না সুইডেনের ভুলের পুনরাবৃত্তি করা।'

গত বছর রাশিয়া প্রতিবেশী ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর সুইডেন ও ফিনল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার আবেদন করে। এর মাধ্যমে তাদের দীর্ঘদিনের 'নিরপেক্ষ' থাকার নীতিতে পরিবর্তন আসে। সে সময় ২ দেশের এই উদ্যোগের সমালোচনা করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

ন্যাটোর নীতি অনুযায়ী, ৩০ সদস্য দেশের প্রত্যেককেই নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্তির অনুমোদন দিতে হবে। এই ২ দেশের ক্ষেত্রে এখনো হাঙ্গেরি ও তুরস্ক অনুমোদন দেয়নি। তবে আগামী ফেব্রুয়ারিতে হাঙ্গেরির পার্লামেন্টে এই দাবির অনুমোদন আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সুইডেনের বিরুদ্ধে এরদোয়ানের মূল অভিযোগ—দেশটি তুরস্কে নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) ও ২০১৬ সালের ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজনকে ফেরত দিতে অস্বীকার করেছে।

গতকাল এরদোয়ান ১২০ সন্দেহভাজনকে আঙ্কারার হাতে তুলে দেওয়ার জন্য সুইডেনের কাছে আবারও দাবি জানান। তিনি বলেন, 'আপনারা এসব জঙ্গিদের আমাদের কাছে পাঠাবেন, যাতে আপনারা ন্যাটোতে যোগ দিতে পারেন।'

সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিসটারসন গণমাধ্যমকে জানান, তার দেশ তুরস্কের সঙ্গে ন্যাটোর সদস্যপদ বিষয়ের আলোচনা আবারও নতুন করে শুরু করতে চায়।

গত শনিবার তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতি ভ্রমণ সতর্কতা জারি করে। কারণ হিসেবে তুরস্কবিরোধী বিক্ষোভ ও ইসলামভীতির কথা জানানো হয়।

সম্প্রতি সুইডেনে আয়োজিত বিক্ষোভগুলোয় কুর্দিদের প্রতি সহানুভূতিশীল দলগুলো পিকেকে ও এর অঙ্গসংগঠনের পতাকা উড়িয়েছে। সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার জন্য তুরস্কের শর্ত মেনে দেশগুলোয় পিকেকের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে পারে। এই সম্ভাব্য পরিণতির প্রতিবাদেই এসব বিক্ষোভের আয়োজন।

এরদোয়ান আরও জানান, তুরস্ক ইতোমধ্যে সুইডেনকে ১২০ জনের তালিকা দিয়েছে। আঙ্কারা চায় তাদেরকে সুইডেন থেকে তুরস্কে পাঠানো হোক।

Comments