ইরানে সরাসরি হামলা চালাবে না ইসরায়েল: যুক্তরাষ্ট্র

এনবিসিকে অন্তত চার মার্কিন কর্মর্কর্তা জানিয়েছেন, তারা ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে এই ধারণা পেয়েছেন। যেহেতু তেহরানের হামলায় তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, সে ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া দেখানোর ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে কম আগ্রাসী মনোভাব দেখাবে জেরুজালেম।
ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর পতাকা ও ক্ষেপণাস্ত্রের মডেল উঁচিয়ে উল্লাস করছে ইরানীরা। ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর পতাকা ও ক্ষেপণাস্ত্রের মডেল উঁচিয়ে উল্লাস করছে ইরানীরা। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে, শনিবার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের নজিরবিহীন হামলার ঘটনায় সীমিত আকারে প্রতিক্রিয়া দেখাবে জেরুজালেম। খুব সম্ভবত, ইরানের বাইরে ইরান-সমর্থিত বাহিনীগুলোর কিছু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুর ওপর হামলা হতে পারে। 

আজ মঙ্গলবার ইসরায়েলের গণমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল এই তথ্য জানিয়েছে। 

এনবিসিকে অন্তত চার মার্কিন কর্মর্কর্তা জানিয়েছেন, তারা ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে এই ধারণা পেয়েছেন। যেহেতু তেহরানের হামলায় তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, সে ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া দেখানোর ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে কম আগ্রাসী মনোভাব দেখাবে জেরুজালেম।

ইসরায়েলের মিত্ররা দেশটিকে ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি হামলা চালানোর বিষয়ে সতর্ক করেছে। তারা জানিয়েছে, এ ধরনের উদ্যোগে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে সিরিয়ার আধা-সামরিক বাহিনী বা লেবাননের সশস্ত্র বাহিনী হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে হামলা আসতে পারে। উভয় সংগঠনই ইরানের কাছ থেকে সরাসরি সমর্থন পেয়ে থাকে। 

চার কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এনবিসি আরও জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা, এ বিষয়ে সব সিদ্ধান্তের বিষয়ে ইসরায়েল ওয়াশিংটনকে অবহিত রাখবে। তবে কোনো ধরনের প্রতিশোধমূলক পাল্টা হামলা বা সামরিক প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেবে না।

চ্যানেল ১২ এর একটি অসমর্থিত প্রতিবেদনে সোমবার দাবি করা হয়, ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা ইরানের বিরুদ্ধে 'সরাসরি ও আগ্রাসী' হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই প্রতিক্রিয়া এমন এক বার্তা দেবে, যা হল ইসরায়েল 'তাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের আগ্রাসী হামলা' বিনা প্রতিবাদে মেনে নেবে না।

তবে চ্যানেল ১২'র প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয় যে ইসরায়েল চায় না তাদের পাল্টা হামলায় আঞ্চলিক সংঘাতের সূত্রপাত হোক বা মিত্রদেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হোক।

আরও বলা হয়, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সকল পদক্ষেপ সমন্বয় করে নিতে আগ্রহী।

ইতোমধ্যে ইসরায়েল এ অঞ্চলের আরব দেশগুলোকে আশ্বস্ত করেছে, ইরানের হামলায় প্রতিক্রিয়া দেখালেও এতে অন্য কোনো দেশ বিপদে পড়বে না। বেশ কয়েকটি দেশ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালালে ইরানের কাছে তাদেরকে জবাবদিহি করতে হবে।

কান পাবলিক ব্রডকাস্টারের এক প্রতিবেদন মতে, ইসরায়েল জর্ডান, মিসর ও উপসাগরীয় দেশগুলোকে এ বিষয়টি জানিয়েছে। ইসরায়েল বলেছে, পাল্টা হামলা এমনভাবে চালানো হবে যাতে ইরান এসব দেশকে দায় দিতে না পারে।

লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার পর ইসরায়েলের আরাদ অঞ্চলে ইরানী ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ। ছবি: রয়টার্স
লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার পর ইসরায়েলের আরাদ অঞ্চলে ইরানী ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ। ছবি: রয়টার্স

এর আগে রোববার ইরানের শীর্ষ কমান্ডাররা সতর্ক করেন, তেহরানের হামলার বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালালে ইসরায়েল ও তার মিত্ররা আরও বড় হামলার মুখে পড়তে পারে।

রোববার ইরানের সরকারী গণমাধ্যমে সতর্ক করা হয়, জর্ডান যদি ইসরায়েলকে সহায়তা করে, তাহলে তারাই হবে তেহরানের পরবর্তী লক্ষ্যবস্তু।

গত সপ্তাহে সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাস প্রাঙ্গণে ইসরায়েলি হামলার পর পাল্টা হামলা হিসেবে শনিবার ইসরায়েলে কয়েকশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান।

এসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের ৯৯ শতাংশই ইসরায়েলি ভূখণ্ডে পৌঁছানোর আগেই ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।

এই প্রথম তেহরান সরাসরি ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামলা চালালো।

Comments