'হঠাৎ করেই চোখের আড়ালে চলে যায় প্রেসিডেন্ট রাইসির হেলিকপ্টার’
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমিরাব্দোল্লাহিয়ানসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তার মৃত্যুর পর পেরিয়ে গেছে তিন দিনেরও বেশি সময়। ইতোমধ্যে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর মধ্যে প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফ দুর্ঘটনা নিয়ে কিছু তথ্য দিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার ইরানের সংবাদমাধ্যম ইরনা এই তথ্য জানিয়েছে।
![ইরানের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির চিফ অব স্টাফ গোলাম হোসেইন ইসমাইলি। ছবি: ইরানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে ইরানের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির চিফ অব স্টাফ গোলাম হোসেইন ইসমাইলি। ছবি: ইরানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/images/2024/05/22/gholamhossein_esmaili.jpg?itok=EOjhYKtl×tamp=1716359622)
প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফ গোলাম হোসেইন ইসমাইলি রাষ্ট্রীয় টিভির কাছে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, যাত্রার শুরুতে ইরানের ভারজাকান প্রদেশের আবহাওয়া বেশ ভালো ছিল এবং ফ্লাইটের বেশিরভাগ সময় তারা ভালো আবহাওয়া পেয়েছেন। এ অঞ্চলেই রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়।
আজারবাইজান-ইরান সীমান্তে একটি বাঁধের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট রাইসি তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে তিনটি হেলিকপ্টারে করে ইরানে ফিরছিলেন। একটি হেলিকপ্টারে ছিলেন ইসমাইলি।
তিনি জানান, ১৯ মে স্থানীয় সময় দুপুর ১টার দিকে হেলিকপ্টারগুলো যাত্রা শুরু করে। সে সময় আবহাওয়া স্বাভাবিক ছিল।
![দুর্ঘটনাস্থল থেকে একটি মরদেহ সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। ছবি: রয়টার্স দুর্ঘটনাস্থল থেকে একটি মরদেহ সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। ছবি: রয়টার্স](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/images/2024/05/22/dead_body.jpg?itok=EPmv2khJ×tamp=1716358689)
হেলিকপ্টার বহরের নেতৃত্বে ছিলেন রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের পাইলট ক্যাপ্টেন মোস্তাফাভি । যাত্রার ৪৫ মিনিট পর তিনি বাকিদের নির্দেশ দেন নিকটবর্তী একটি মেঘের সংস্পর্শ এড়ানোর জন্য হেলিকপ্টারগুলোকে আরও উঁচুতে নিয়ে যেতে।
প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টারের দুই পাশে বাকি দুইটি হেলিকপ্টার উড়ছিল। ইসমাইলি জানান, 'হঠাৎ করেই চোখের আড়ালে চলে যায় প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার।'
ইসমাইলি বলেন, 'মেঘের ওপর ৩০ সেকেন্ড ওড়ার পর আমাদের পাইলট লক্ষ্য করেন, মাঝখানের হেলিকপ্টারটি উধাও হয়ে গেছে।'
এরপর তারা বেশ কয়েকবার রেডিওর মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালাল। মেঘের কারণে হেলিকপ্টারকে নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছিল না। ইসমাইলি জানান, তারা নিকটবর্তী একটি তামা খনিতে অবতরণ করেন।
তিনি জানান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমিরাব্দোল্লাহিয়ান ও প্রেসিডেন্টের সুরক্ষা ইউনিটের সদস্যদের বারবার কল করা হলেও তারা সাড়া দেননি।
![দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। ছবি: রয়টার্স দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। ছবি: রয়টার্স](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/images/2024/05/22/rescue.jpg?itok=pD9J-z5s×tamp=1716358689)
তিনি জানান, দুই হেলিকপ্টারের পাইলট প্রেসিডেন্টের পাইলট ক্যাপ্টেন মোস্তাফাভির সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। তবে এক পর্যায়ে কল রিসিভ করেন তাবরিজের মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ আলী আল-হাশেম। তার শারীরীক অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। তিনি জানান, হেলিকপ্টারটি একটি উপত্যকায় বিধ্বস্ত হয়েছে।
ইসমাইলি নিজেও আলী হাশেমের সঙ্গে কথা বলেন। তাকেও একই কথা জানান আলী হাশেম।
ইসমাইলি বলেন, 'আমরা যখন দুর্ঘটনাস্থল খুঁজে পাই, তখন মরদেহের পরিস্থিতি দেখে আমাদের মনে হয়েছে আয়াতোল্লাহ রাইসি ও তার অন্যান্য সহযোগীরা হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর প্রায় তাৎক্ষণিকভাবেই শহীদ হয়েছেন। কিন্তু আলী হাশেম আরও কয়েক ঘণ্টার পর শাহাদাৎ বরণ করেন।'
Comments