এ বছর সৌদি আরবে ১,৩০১ হজযাত্রীর মৃত্যু

সৌদি কর্মকর্তারা জানান, এবার ১৮ লাখ মানুষ হজে অংশ নিয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৬ লাখ বিদেশ থেকে এসেছেন। গত বছরও প্রায় একই সংখ্যক মানুষ হজে অংশ নেন।
মিনায় তীব্র গরমে এই হজযাত্রী অসুস্থ পড়েন। ছবি: রয়টার্স
মিনায় তীব্র গরমে এই হজযাত্রী অসুস্থ পড়েন। ছবি: রয়টার্স

অবশেষে সৌদি আরব আনুষ্ঠানিকভাবে এ বছরের হজে মৃতের সংখ্যা প্রকাশ করেছে। দেশটির সরকারি সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, মোট এক হাজার ৩০১ জন হজযাত্রী এবার প্রাণ হারিয়েছেন।

গতকাল রোববার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

সৌদি প্রেস এজেন্সির (এসপি) প্রতিবেদনে বলা হয়, 'দু:খের সঙ্গে জানানো হচ্ছে, (এবারের হজে) মৃতের সংখ্যা এক হাজার ৩০১ এ পৌঁছেছে। মৃতদের ৮৩ শতাংশের হজে অংশ নেওয়ার অনুমোদন ছিল না এবং তারা উপযুক্ত আশ্রয় বা আরামদায়ক পরিবেশ ছাড়াই সরাসরি সূর্যের কড়া তাপ মাথায় নিয়ে অনেক দীর্ঘ পথ হেঁটেছিলেন।'

গত সপ্তাহে একাধিক কূটনীতিক ও আনুষ্ঠানিক সূত্রের ভিত্তিতে এএফপি জানিয়েছিল মৃতের সংখ্যা অন্তত এক হাজার ১০০। এর আগের প্রাক্কলনে সংখ্যাটি ৬৭৭ বলা হয়েছিল।

কাবা শরীফকে ঘিরে তাওয়াফ করছেন হজযাত্রীরা। ছবি: এএফপি
কাবা শরীফকে ঘিরে তাওয়াফ করছেন হজযাত্রীরা। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্র ও ইন্দোনেশিয়াসহ মোট ১০ দেশের মানুষ মৃতদের মধ্যে আছেন। কয়েকটি দেশের সরকার এখনও মৃতের সংখ্যা যাচাই করছে।

আরব কূটনীতিকরা গত সপ্তাহে এএফপিকে জানান, মৃতদের মধ্যে ৬৫৮ জন মিসর থেকে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে ৬৩০ জনই অনিবন্ধিত হজযাত্রী।

কূটনীতিকরা জানান, বেশিরভাগ হজযাত্রী তাপ-সংক্রান্ত অসুস্থতায় ভুগে মারা গেছেন।

সৌদি আরবের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, এ বছর হজ মৌসুমে মক্কার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৫১ দশমিক আট ডিগ্রি ছুঁয়েছে।

রবিবারের আগে রিয়াদ আনুষ্ঠানিকভাবে মৃতের সংখ্যা প্রকাশ করেনি বা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

শুক্রবার এক জ্যেষ্ঠ সৌদি কর্মকর্তা এএফপিকে জানান, হজের ব্যস্ততম দুই দিনে ৫৭৭ জন মারা যান। দিন দুইটি হল ১৫ জুনে কড়া রোদের মাঝে আরাফাতের ময়দানে নামাজ আদায় এবং ১৬ জুন মিনায় শয়তানকে পাথর ছুড়ে মারা।

সৌদি কর্মকর্তারা জানান, এবার ১৮ লাখ মানুষ হজে অংশ নিয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৬ লাখ বিদেশ থেকে এসেছেন। গত বছরও প্রায় একই সংখ্যক মানুষ হজে অংশ নেন।

কাবা শরীফকে ঘিরে তাওয়াফ করছেন হজযাত্রীরা। ছবি: এএফপি
কাবা শরীফকে ঘিরে তাওয়াফ করছেন হজযাত্রীরা। ছবি: এএফপি

অনিবন্ধিত হজযাত্রী

কোটার ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশ থেকে হজযাত্রীরা সৌদি আরবে এসে হজ করার সুযোগ পান।

হজের উচ্চ খরচের কারণে অনেকে ভিন্ন উপায়ে, অনুমোদন ছাড়া হজ করার চেষ্টা করেন। এতে গ্রেপ্তার ও নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও পিছপা হননা অনেকেই।

সৌদি কর্তৃপক্ষ এর আগে জানিয়েছিল, হজ শুরুর আগে তারা লাখো অনিবন্ধিত হজযাত্রীকে মক্কা থেকে সরিয়ে দিয়েছে।

তা সত্ত্বেও এএফপিকে সৌদি কর্মকর্তা জানান, 'প্রায় চার লাখ অনিবন্ধিত হজযাত্রী এবারের হজে অংশ নিয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই একটি দেশের নাগরিক।' সরাসরি নাম উল্লেখ না করলেও তিনি মিশরের দিকে ইঙ্গিত করেন।

অনিবন্ধিত হজযাত্রী কেলেঙ্কারিতে ইতোমধ্যে মিসরের ১৬টি ট্র্যাভেল এজেন্টের নিবন্ধন বাতিল করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী মোস্তাফা মাদবৌলি। তিনি এই প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন বলে মিসরের মন্ত্রিসভা থেকে জানানো হয়েছে।

 

Comments