ইউক্রেন যুদ্ধে সরাসরি নেতৃত্ব দেবেন রুশ সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ জেনারেল গেরাসিমভ
রাশিয়া তাদের শীর্ষ জেনারেলকে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। প্রায় ১১ মাসের যুদ্ধে রুশ সামরিক অবকাঠামোতে এটাই সবচেয়ে বড় আকারের পরিবর্তন।
আজ বৃহস্পতিবার কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বুধবার জানায়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু চিফ অব জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভকে বিশেষ সামরিক অভিযানের সর্বাধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এখন থেকে রুশ সশস্ত্র বাহিনীর এই শীর্ষ জেনারেল সরাসরি ইউক্রেন যুদ্ধেরও দায়িত্বে থাকবেন।
গেরাসিমভের নিয়োগে আগের কমান্ডার ও বিমানবাহিনীর সাবেক জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিনের পদাবনতি হল।
নতুন কমান্ডার নিয়োগ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, 'বিশেষ সামরিক অভিযানের নেতৃত্বের কলেবর বৃদ্ধির সঙ্গে কাজের পরিধি বেড়ে যাওয়ার যোগসূত্র রয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন অংশের মধ্যে আরও নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা এবং যুদ্ধক্ষেত্রে রুশ বাহিনীর গুণগত মান ও উপযোগিতা আরও বাড়ানোর জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে'।
মাত্র ৩ মাস কমান্ডারের দায়িত্ব পালনের পর সুরোভিকিনের পদাবনতি হল। তিনি এখন গেরাসিমভের অধীনে অপর ২ জেনারেল ওলেগ সালিউকভ ও অ্যালেকসেই কিমের পাশাপাশি কাজ করবেন।
সুরোভিকিন নিয়োগ পাওয়ার কয়েকদিন পর রুশ বাহিনী তাদের যুদ্ধ কৌশলে বড় পরিবর্তন আনে। ইউক্রেনের অবকাঠামোর ওপর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। যার ফলে দেশটির বেশ কয়েকটি শহরে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বিঘ্নিত হয়।
তার স্বল্প মেয়াদে সুরোভিকিন সেনাবাহিনীর মধ্যে সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ পুনপ্রতিষ্ঠার জন্য প্রশংসিত হন।
তবে নভেম্বরে খেরসন থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে পুতিনের বিরাগভাজন হন তিনি। চলমান যুদ্ধে রাশিয়ার অন্যতম প্রধান সাফল্য ছিল এই গুরুত্বপূর্ণ শহরের দখল নেওয়া।
মস্কো ভিত্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক দিমিত্রি ট্রেনিন জানান, 'ইউক্রেন অভিযানের নেতৃত্ব শৃঙ্খলকে আরও সুসংহত করার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে'।
তিনি আরও বলেন, 'গেরাসিমভের নিয়োগ এটাই প্রমাণ করছে যে এই অভিযানের গুরুত্ব আরও বেড়েছে এবং আজ আমরা এই সংঘাতের যে রূপ দেখছি, তা আগামীতে আরও সম্প্রসারিত হতে পারে। এটা খুবই উল্লেখযোগ্য একটি ঘটনা'।
'যুদ্ধ আরও তীব্র ও বিপদজনক হচ্ছে এবং আমার ধারণা এটি একজন ফিল্ড কমান্ডারের পর্যায়কে ছাড়িয়ে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এখন এটি রুশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্বময় ক্ষমতাসম্পন্ন কমান্ডারের হাতে', যোগ করেন তিনি।
কিছু বিশ্লেষকের মতে চেচনিয়া ও সিরিয়ার যুদ্ধের বীর যোদ্ধা সুরোভিকিনকে বেশ কয়েকটি ভুলের খেসারত দিতে হচ্ছে এবং তাকে 'বলির পাঠা' বানানো হচ্ছে। এ ধরনের সবচেয়ে বড় ভুলের মধ্যে আছে ইংরেজি নববর্ষের প্রথম ঘণ্টায় মাকিভকা শহরের একটি সেনা ব্যারাকে ইউক্রেনের হামলায় ৮৯ রুশ যোদ্ধার মৃত্যুর ঘটনা।
Comments