হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপে দাবানলে মৃত্যু বেড়ে ৫৩, নিখোঁজ প্রায় ১০০০

এক হাজার ভবন পুড়ে ছাই
অবকাশ যাপনের শহর লাহাইনাতে ভয়াবহ দাবানলের এই ধ্বংসযজ্ঞ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে অনেক বছর সময় লাগবে। ছবি: রয়টার্স
অবকাশ যাপনের শহর লাহাইনাতে ভয়াবহ দাবানলের এই ধ্বংসযজ্ঞ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে অনেক বছর সময় লাগবে। ছবি: রয়টার্স

হাওয়াইর মাউই দ্বীপে দাবানলে অন্তত ৫৩ জন নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ আছেন ১ হাজারের বেশি মানুষ। আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে ছাই হয়েছে ১ হাজারেরও বেশি দালান। কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, নিহতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

হাওয়াইর কর্মকর্তারা জানান, অবকাশ যাপনের শহর লাহাইনাতে ভয়াবহ দাবানলের এই ধ্বংসযজ্ঞ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে অনেক বছর সময় লাগবে এবং এতে খরচ হবে কমপক্ষে কয়েক বিলিয়ন ডলার।

গভর্নর জশ গ্রিন জানান, অগ্নিকাণ্ডে লাহাইনার বেশিরভাগ অবকাঠামো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে এবং এটি হাওয়াইর ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা। হাজারো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং অন্তত ১ হাজার দালান পুড়ে ছাই হয়ে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।

বিবিসি পুলিশ প্রধান জন পেলেটিয়ারের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, প্রায় ১ হাজারেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ আছেন। তবে এই সংখ্যাকে 'অতিরঞ্জিত' বলে আখ্যায়িত করেন স্থানীয় কাউন্সিল কর্মকর্তা অ্যালিস লি। এর আগে, কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, নিখোঁজ মানুষের প্রকৃত সংখ্যা নিশ্চিত নয় এবং অনেকের সঙ্গে হয়তো 'যোগাযোগ স্থাপন' করা যাচ্ছে না। মঙ্গলবার শহরের বাইরের জঙ্গলে দাবানল দেখা দেয় এবং এককালে হাওয়াইর রাজধানী লাহাইনার ওপর ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।

সংবাদ সম্মেলনে গ্রিন বলেন, 'লাহাইনার পুনর্গঠনে বেশ কয়েক বছর সময় লাগবে।'

তিনি জানান, কর্মকর্তারা বাস্তুচ্যুতদের অন্যান্য দ্বীপের হোটেল ও পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন।

গ্রিন বলেন, 'মাউই ভাবমূর্তি ও মূল্যবোধকে মাথায় রেখে আমাদেরকে নতুন করে লাহাইনা গড়ে তুলতে হবে।'

লাহাইনাতে প্রতি বছর ২০ লাখ পর্যটক আসেন। এই দ্বীপের ৮০ শতাংশ পর্যটকই লাহাইনাতে আসেন। 

মাউই দ্বীপের লাহাইনা শহরের দাবানলের পর ধ্বংসযজ্ঞের দৃশ্য। ছবি: রয়টার্স
মাউই দ্বীপের লাহাইনা শহরের দাবানলের পর ধ্বংসযজ্ঞের দৃশ্য। ছবি: রয়টার্স

দাবানলের পেছনে শুষ্ক আবহাওয়া, দাহ্য পদার্থের উপস্থিতি ও ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিবেগের বাতাসকে চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এ মুহূর্তে মাউইতে ৩টি পৃথক অবস্থানে বড় আকারে দাবানলের ঘটনা ঘটছে এবং এই ৩ অবস্থানের কোথাও এখনো আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। 

দমকলকর্মীরা আগুন নেভানোর কাজে ব্যস্ত আছেন। একইসঙ্গে উদ্ধারকর্মীরা নিহতদের মরদেহ উদ্ধারের কাজও করছেন।

ক্যালিফোর্নিয়া ও ওয়াশিংটন থেকে উদ্ধারকাজে সহায়তার জন্য প্রশিক্ষিত কুকুর পাঠানো হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।

১৯৫৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি অঙ্গরাজ্যে রূপান্তরিত হওয়ার ১ বছর পর সুনামিতে হাওয়াইর মূল দ্বীপে ৬১ জন মারা যান। 

জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে। বিজ্ঞানীদের মতে, এসব কারণেই বিশ্বজুড়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা ও মাত্রা বাড়ছে।

কার্বন নিঃসরণ না কমাতে পারলে এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা।

 

Comments