যুগে যুগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও প্রার্থীদের ওপর গুলির ইতিহাস

দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন এবং জন এফ কেনেডিসহ আরও অনেককেই গুলি করেছিলেন আততায়ীরা। তাদের মধ্যে কয়েকজন গুলিতে মারাও যান।
ছবি: এএফপি

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং দেশটির আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি সমাবেশে বক্তৃতা দেওয়ার সময় তার ওপর গুলি চালানো হয়। এ ঘটনায় তার কানে গুলি লেগেছে। এ ঘটনাকে হত্যাচেষ্টা হিসেবে দেখছেন তদন্তকারীরা।

ট্রাম্প
নির্বাচনী প্রচারের সময় গুলির ঘটনার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিরাপদে সরিয়ে সরিয়ে নেন নিরাপত্তারক্ষীরা। ছবি: রয়টার্স

দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন এবং জন এফ কেনেডিসহ আরও অনেককেই গুলি করেছিলেন আততায়ীরা। তাদের মধ্যে কয়েকজন গুলিতে মারাও যান।

রোনাল্ড রিগান। ছবি: সংগৃহীত

রোনাল্ড রিগান (১৯৮১)

ওয়াশিংটনের হিলটন হোটেলে একটি অনুষ্ঠান থেকে বের হওয়ার সময় প্রেসিডেন্ট রিগান গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। তার ওপর হামলাকারী ছিলেন জন হিঙ্কলি জুনিয়র। তাকে ২০২২ সালে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হয়।

গুলিবিদ্ধ রিগান হাসপাতালে ছিলেন ১২ দিন। এ ঘটনার পর তার জনপ্রিয়তা অনেক গুণ বেড়ে যায়।

জেরাল্ড ফোর্ড (১৯৭৫)

১৯৭৫ সালের সেপ্টেম্বরে ক্যালিফোর্নিয়ায় জেরাল্ড ফোর্ডের ওপর গুলি চালান এক নারী। এ ঘটনার মাত্র ১৭ দিন পরে আবারও তার ওপর গুলি চালানো হয়।

জর্জ ওয়ালেস (১৯৭২)

ডেমোক্রেটিক দল থেকে প্রেসিডেন্ট পদের মনোনয়নের জন্য প্রচারণা চালানোর সময় জর্জ ওয়ালেসের ওপর চারবার গুলি চালানো হয়। শেষ পর্যন্ত মেরিল্যান্ডের লরেলের একটি শপিংমলে গুলি লাগার পর তিনি পঙ্গু হয়ে যান।

রবার্ট এফ কেনেডি (১৯৬৮)

প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ভাই রবার্ট ডেমোক্র্যাটিক দল থেকে প্রেসিডেন্ট মনোনয়নের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসের অ্যাম্বাসেডর হোটেলে গুলি করে তাকে হত্যা করা হয়।

এই হত্যাকাণ্ড ১৯৬৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। দেশটির নাগরিক অধিকার নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রকে হত্যার মাত্র দুই মাস পরেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।

জন এফ কেনেডি। ছবি: সংগৃহীত

জন এফ কেনেডি (১৯৬৩)

স্ত্রী জ্যাকির সঙ্গে গাড়িবহর নিয়ে যাওয়ার সময় প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। টেক্সাসের ডালাসে তাকে গুলি করেন লি হার্ভে অসওয়াল্ড।

হত্যাকাণ্ডের তদন্তকারী ওয়ারেন কমিশন ১৯৬৪ সালে তাদের তদন্ত শেষে জানায়, লি হার্ভে অসওয়াল্ড ছিলেন একজন নৌসেনা এবং তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নে বসবাস করতেন। এই হত্যাকাণ্ড তিনি একাই সংঘটিত করেছিলেন।

অনেক আমেরিকান বিশ্বাস করে যে জন এফ কেনেডির মৃত্যু মার্কিন রাজনীতি ও সমাজে আরও হিংসাত্মক সময়ের সূচনা করে।

ফ্র্যাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট (১৯৩৩)

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরপরই ফ্লোরিডার মিয়ামিতে হত্যাচেষ্টা করা হয় ফ্র্যাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্টকে। হামলা থেকে তিনি বেঁচে গেলেও নিহত হন শিকাগোর মেয়র আন্তন সেরমাক।

থিওডোর রুজভেল্ট (১৯১২)

ট্রাম্পের মতো টেডি রুজভেল্টও সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউসে পুনরায় যাওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। তেমন সময়ে উইসকনসিনের মিলওয়াকিতে তার ওপর গুলি চালানো হয়।

বুলেটটি বাকী জীবন তার বুকে আটকে ছিল। তার বুক পকেটে ভাঁজ করে রাখা ৫০ পৃষ্ঠার লিখিত বক্তৃতা এবং স্টিলের চশমার বাক্সের কারণে গুলির গতি কমে গিয়ে সে যাত্রায় তিনি বেঁচে যান।

গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরও রুজভেল্ট সেই সমাবেশে তার নির্ধারিত বক্তৃতা দেন।

উইলিয়াম ম্যাককিনলে (১৯০১)

নিউইয়র্কের বাফেলোতে প্রেসিডেন্ট ম্যাককিনলে নিহত হন লিওন সিজলগোসের গুলিতে।

আব্রাহাম লিংকন। ছবি: সংগৃহীত

আব্রাহাম লিংকন (১৮৬৫)

ওয়াশিংটনের ফোর্ডস থিয়েটারে 'আওয়ার আমেরিকান কাজিন' নাটক দেখার সময় সুপরিচিত অভিনেতা জন উইল্কস বুথের হাতে খুন হন লিংকন।

Comments