মধুর বিড়ম্বনায় বাংলাদেশ

Imrul Kayes-Soumya Sarkar
লড়াইটা জমিয়ে তুলছেন ইমরুল-সৌম্য। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

গভীর সমস্যায় পড়লে কোন একটা সমাধান আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করে মানুষ। কিন্তু সমাধান হিসেবে যদি খোলা থাকে তিন দরজা, যখন সবকটা দিয়েই আসে আলো, সুমধুর বাতাস, তখন কোন একটা বেছে নিতে  দ্বিধায় পড়া ছাড়া উপায় কি। বাংলাদেশের ম্যানেজমেন্টের হয়েছে সে দশা।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে ইমরুল কায়েস আর সৌম্য সরকারের ঝড়ো সেঞ্চুরির পর, মজা করে কেউ কেউ বলছিলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে তামিম ইকবাল ফিরবেন তো? নেহাতই এটা মজা। বাংলাদেশের ইতিহাসের সফলতম ব্যাটসম্যানের দলে জায়গা নিয়ে আসলে বিন্দুমাত্র সংশয় নেই। কিন্তু তার সঙ্গী হবেন কে? কিংবা সাকিব আল হাসান সুস্থ হয়ে ফিরলে তিনে খেলবেন কে?

এশিয়া কাপের মতো বড় মঞ্চের ফাইনালে, ভারতের মতো শক্তিধর প্রতিপক্ষের বিপক্ষে যে রাজসিক সেঞ্চুরি করেছেন লিটন দাস, এরপর থেকে তাকে বাদ দেওয়ার চিন্তা করাও তো বাড়াবাড়ি। জিম্বাবুয়ে সিরিজে দুই ম্যাচে তাড়াতাড়ি আউট হয়ে গেছেন বটে কিন্তু আরেক ম্যাচে দেখিয়েছেন থাকলে কী ভয়ংকর সুন্দরভাবে খুন করতে পারেন প্রতিপক্ষ বোলারদের।

তবে কি বাদ পড়বেন ইমরুল কায়েস? কি করে তা সম্ভব? তিন ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করার রেকর্ড তো বটেই সব দেশ মিলিয়েই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করে ফেলেছেন। এই অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতার পর কাউকে বসিয়ে রাখার সাহস কার আছে!

উড়ে এসে জুড়ে বসে ফ্যাসাদটা বাধিয়ে দিয়েছেন সৌম্য সরকারও। তিন নম্বরে নেমেছিলেন। কিন্তু ইনিংসের মাত্র দ্বিতীয় বল বলে  সেটা ওপেনিংও ধরা যায়। কি খেলাটাই না খেললেন তিনি। সাড়ে তিন বছর পর ক্যারিয়ের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির জন্য বেছে নিলেন এমন সময় যখন টপ অর্ডারে জায়গা পাওয়া নিয়ে চলছে তুমুল লড়াই। শুক্রবার চট্টগ্রামে বড় আলো নিয়ে গেলেন নিজের দিকে।

সৌম্য যেমন আগ্রাসী খেলেন। তার দিনে একাই শেষ করে দিতে পারেন প্রতিপক্ষকে। এটা মানেন লড়াইয়ে থাকা ইমরুলও। ৮১ বলে সেঞ্চুরিতে পৌঁছেছেন। ৯২ বলে করেছেন ১১৭। ৯ চারের সঙ্গে মেরেছেন হাফ ডজন ছক্কা।

এমন মারকুটে কাউকে টপ অর্ডারে দেখতে চাইবে যেকোনো দল। কিন্তু তা কি করে সম্ভব। তামিম আর সাকিব ফিরলে সেরা তিনে দুই জায়গা তো তাদেরই। বাকি এক জায়গার জন্য লড়াই তিনজনের। লিটন, সৌম্য, ইমরুল তিনজনই আছেন অসম্ভব ছন্দে। ইমরুলও তামিমকে এই লড়াইয়ের বাইরে রেখেই নিজেদের কথা বললেন,  ‘আমি তামিমকে নিয়ে কথা বলব না।  কোন সন্দেহ নেই সে বাংলাদেশের সেরা একজন খেলোয়াড়। আসলে কে কোথায় খেলবে এটা টিম ম্যানেজমেন্টই সিদ্ধান্ত নেবে। এটা তাদের বিষয়। আমাদের কাজটা আমরা যখন মাঠে নামি শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করি। পারফরম্যান্স করার চেষ্টা করি।’

সমাধান অবশ্য টিম ম্যানেজমেন্টই করবে। আপাতত এই সুস্থ প্রতিযোগিতায় লাভ আছে দলের। তুমুল লড়াই থাকলে কেউ কখনো খেলতে চাইবেন না হালকা মেজাজে। এমন চলতে থাকলে সামনের বিশ্বকাপ নিয়ে আশাবাদী হওয়ার অবস্থা দেখছেন ইমরুল, ‘বাংলাদেশে এখন হয়ে গেছে স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা। আমাদের দলের জন্য এটা খুব ভাল। বিশ্বকাপ পর্যন্ত যদি আমরা এটা ধরে রাখতে পারি তাহলে বিশ্বকাপে ভাল একটা ফল আশা করা যায়। এর ভেতর থেকেই আমরা হয়ত ঘুরেফিরে খেলব। খেলতে ত হবে কাউকে না কাউকে।’

 

 

Comments

The Daily Star  | English
G7 statement on Israel Iran war

Sirens sounded after missiles launched from Iran, says Israeli army

Trump to decide within two weeks on possible military involvement

12h ago