গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ফসল: ডা. জাফরউল্লাহ
সাভারে অবস্থিত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে গতকাল (২৬ অক্টোবর) দুর্বৃত্তদের হামলার প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী বলেন, এটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ফসল। প্রতিষ্ঠানটিকে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখ করে তিনি এর মালিক বাংলাদেশের জনগণ বলেও মন্তব্য করেন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের চট্টগ্রাম সমাবেশে অংশ নেওয়ার জন্যে ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী এখন চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে টেলিফোনে তিনি দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে বলেন, “১৯৭১ সালে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্যে ভারতের আগরতলার বিশ্রামগঞ্জে আমরা ‘বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল’ গড়ে তুলেছিলাম। স্বাধীন বাংলাদেশে যখন এই হাসপাতালটি গড়ে তোলার উদ্যোগ নিলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নাম পরিবর্তন করে ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র’ নির্ধারণ করে দিলেন। তিনি ২৩ একর জায়গা অধিগ্রহণ করে দিলেন।”
“সাভারের সেই জায়গাতেই মূল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র গরীব মানুষের প্রতিষ্ঠান, আমি ডা. জাফরউল্লাহ বা অন্য কেউ এর মালিক নন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র মুক্তিযুদ্ধের প্রতিষ্ঠান, মালিক বাংলাদেশের জনগণ। আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে, মুক্তিযুদ্ধের প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে ধ্বংস করে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে,” বলে মন্তব্য করেন ডা. জাফরউল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, “যে ভবনটিতে আক্রমণ করে ভাঙচুর করা হলো, লোকজনদের আহত করা হলো সেই জমি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র কিনেছে ১৯৯৯ সালে। তখন কারো কোনো দাবি-দাওয়া ছিল না।’’
উল্লেখ্য, সাভারে অবস্থিত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে গতকাল হামলা চালিয়ে দরজা-জানালার ভাঙ্গার পাশাপাশি অফিসের যন্ত্রপাতি লুট করেছে দুর্বৃত্তরা। এই কেন্দ্রটির প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে ‘মাছ চুরি’-সহ মামলা হওয়ার ঘটনার মধ্যে এই হামলা হলো।
এ সময় হামলাকারীরা গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মারধর করে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী লিমনের ডানহাত ভেঙ্গে দেয়। এই লিমন এক সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী র্যাবের গুলিতে পঙ্গু হয়ে যায়।
গত ১৫ অক্টোবর থেকে ডা. জাফরউল্লাহর বিরুদ্ধে ভূমি দখল, চাঁদাবাজি, গ্রামবাসীর মাছ ও ফল চুরির অভিযোগে পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গণস্বাস্থ্যের কর্মীরা জানান, কয়েকজন ব্যক্তি গতকাল সকালে এসে হামলা শুরু করে এবং সারাদিন তা অব্যাহত রাখে।
কেন্দ্রের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শেখ আলমগীর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “জাফরউল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরকারী কয়েকজন ব্যক্তির নেতৃত্বে প্রায় শ খানেক ব্যক্তি আমাদের পিএইচএ ভবনে এসে ভাঙচুর শুরু করে। তারা কম্পিউটার, টেলিভিশন ও সিসিটিভি ক্যামেরা নিয়ে যায়। আমাদের নারী সহকর্মীদের লক্ষ্য করে গালিগালাজ করে এবং ছাত্রীদের আবাস ভবনে প্রবেশের চেষ্টা চালায়।”
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী লিমন বলেন, আক্রমণকারীদের হাত থেকে ছাত্রীদের রক্ষা করতে গিয়ে তিনি হামলার শিকার হয়েছেন। এদিকে, চিকিৎসকরা জানান, লিমনের ডানহাত ভেঙ্গে গেছে। ২০১১ সালে এই লিমনকে র্যাব অপরাধী ভেবে তার পায়ে গুলি করেছিলো।
Comments