এলাহাবাদের পর মুসলিম নাম পরিবর্তনের হিড়িক

Allahbad
একটি ফাইল ছবিতে দেখা যাচ্ছে রাষ্ট্রীয় রক্ষক সমিতির কর্মীরা এলাহাবাদ রেল জংশনের নামের ওপর প্রয়াগরাজ নাম সম্বলিত ব্যানার ঝুলিয়ে দিচ্ছেন। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে অবস্থিত এলাহাবাদ শহরের নাম পাল্টে প্রয়াগরাজ করার পর এখন সেখানে শুরু হয়েছে নাম বদলানোর হিড়িক। সেই তালিকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক শহরের নাম যেগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে মুসলিম ঐতিহ্য।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসে আজ (২৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি-শাসিত উত্তরপ্রদেশে নাম পরিবর্তনের তালিকায় রয়েছে আজমগড়, ফৈজাবাদ, আলীগড় এবং মুজাফফরনগর জেলা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজ্য বিজেপিসহ বিভিন্ন হিন্দু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী এসব নাম পরিবর্তনের দাবি তুলেছে। তারা আজমগড়কে আরিয়ামগড়, ফৈজাবাদকে সাকেত, আলীগড়কে হরিগড় এবং মুজাফফরনগরকে লক্ষ্মীনগরে নামকরণের দাবি তুলেছে।

খবরে প্রকাশ, বিজেপি নেতারা ইতোমধ্যে হরিগড় লেখা হাতে নিয়ে গাড়িতে চড়ে আলীগড়ে ঘুরে বেড়াতে শুরু করেছেন।

মুজাফফরনগর জেলা বিজেপির সভাপতি সুধীর সাইনি সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, “হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো মুজাফফরনগরের নাম বদলানোর দাবি জানাচ্ছে। তারা মনে করেন, একসময় এই স্থানটি লক্ষ্মীনগর নামে পরিচিত ছিলো।”

উত্তরপ্রদেশ রাজ্য সরকারের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ নাথ সিং বলেন, “সরকার বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখছে। নাম বদলানোর দাবি বা পরামর্শ এলে আমরা তা বিবেচনা করে দেখবো।” এই সিদ্ধার্থই এলাহাবাদ শহরের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।

গত আগস্টে উত্তরপ্রদেশ সরকার মুগলসরাই রেল স্টেশনের নাম বদলে বিজেপি নেতা পণ্ডিত দীন দয়াল উপাধ্যায়ের নামে রাখে। তারপর, সবশেষে এলাহাবাদের নাম বদলে রাখা হয় প্রয়াগরাজ।

এলাহাবাদের একজন অধিবাসী ও আইনজীবী এস ফরমান নাকভি বলেন, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ মাত্র পাঁচদিনেই এলাহাবাদের নাম পাল্টে দিলেন।… স্থানীয়দের কোনো মতামতও নিলেন না।… এমনকি, তিনি গোরাখপুরের উর্দুবাজারের নাম পাল্টে রাখলে হিন্দিবাজার। মনে হচ্ছে তিনি একটি সাম্প্রদায়িক এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছেন।”

এদিকে, গত মে মাসে প্রকাশিত ‘লাখনৌর না বলা কথা’ নামক বইয়ে বিহারের গভর্নর এবং উত্তরপ্রদেশের নেতা লালজি ট্যানডন উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের রাজধানীর লাখনৌর নামও বদলে দেওয়ার দাবি তুলেছেন।

তিনি বইটিতে উল্লেখ করেন যে লাখনৌর আদি নাম ছিলো লক্ষ্মণাবতী। পরে তা বদলে হয় লক্ষ্মণপুর এবং লখনাবতী। সবশেষে, শহরটি লাখনৌ নাম ধারণ করে বলেও লেখক মন্তব্য করেন।

হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর মন্তব্য, তারা কারো বিরুদ্ধে কাজ করছে না। বরং মুগল বা ব্রিটিশ শাসকরা ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতি হামলা হিসেবে অনেক শহরের নাম বদলে দিয়েছিলো। সেসব শহরগুলোকেই তারা পুরনো নামে ফিরিয়ে দিচ্ছে।

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বেছে বেছে মুসলিম নামগুলো বদলে দিয়ে বিজেপি যেনো হিন্দুত্ববাদকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করছে।

Comments

The Daily Star  | English

Uncovering the silent deaths of migrant women

In the shadows of booming remittance flows and the quiet resilience of Bangladesh’s labour diaspora, a disturbing reality persists: numerous Bangladeshi female migrant workers, particularly those employed as domestic help in Gulf countries, are returning home in coffins.

18h ago