আসামে বাঙালি হত্যার প্রতিবাদ পশ্চিমবঙ্গে, মমতার হুঙ্কার
ভারতের আসাম রাজ্যে পাঁচজন বাঙালিকে হত্যার প্রতিবাদে প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ। তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকে শুক্রবার রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ মিছিল, বিক্ষোভ ও সমাবেশ করা হয়েছে। আর এই ঘটনায় ‘অশুভ সংকেত’ দেখছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
শুক্রবার দক্ষিণ কলকাতায় যাদবপুর থেকে এক প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মিছিলেই সামনের সারিতে অন্যদের মধ্যে ছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেখান থেকে পতাকা হাতে নিয়ে, বুকে কালো ব্যাজ ধারণ করে ও মুখে কালো কাপড় বেঁধে মিছিলকারীরা হাজরা মোড়ে গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। তারা বলেন, আসামে এনআরসি করে ৪০ লাখ বাঙালিকে রাষ্ট্রহীন করার পায়তারার সঙ্গে এই ঘটনার সম্পর্ক রয়েছে। এর জন্য ক্ষমতাসীন বিজেপির দিকেও অভিযোগের আঙুল তোলেন তারা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘দেশজুড়ে আসামের ঘটনা এক অশুভ সংকেত বহন করছে। আসামের তিনসুকিয়ায় নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে পাঁচজন নিরীহ ও গরিব মানুষকে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। এই ঘটনা আমাদের জন্য এক অশুভ সংকেত দিচ্ছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।’
ঘটনার পর পরই মমতা টুইটারে প্রতিবাদ জানান। বৃহস্পতিবার গিরিশ পার্কে কালীপূজা উদ্বোধন করতে গিয়ে বলেন, ‘গুজরাটে বিহারী খেদাও চলছে, আর আসামে বাঙালি খেদাও হচ্ছে। আবার নিরীহ মানুষগুলোকে খুন করা হলো। দেশজুড়ে এটা একটা অশুভ সংকেত।’
দেশজুড়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করার জন্য এমনটা করা হচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গজুড়ে এদিন প্রতিবাদ মিছিল করার ঘোষণা দেন মমতা ব্যানার্জি।
প্রসঙ্গত, আসাম রাজ্যের তিনসুকিয়া জেলার ধলা এলাকার খেরবাড়িয়া গ্রামে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পাঁচ বাঙালিকে তুলে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। হত্যার প্রতিবাদে বাঙালিরা শুক্রবার ১২ ঘণ্টার হরতাল পালন করেছে।
ঘটনার পর পরই আসামে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার এর জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আলফাকে দায়ী করে বক্তব্য দেয়। তবে এ ধরনের কোনো ধরনের জাতিগত সংঘাতে না জড়ানোর কথা জোর দিয়ে অস্বীকার করেছে সংগঠনটি। এমনকি এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপি ও বহু বিতর্কিত এনআরসি’র যোগসূত্র থাকতে পারে বলেও বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক মহল থেকে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।
Comments