মডেল মসজিদ, কালচারাল সেন্টার ও ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে: প্রধানমন্ত্রী

দেশের মানুষের মধ্যে ইসলামি সংস্কৃতির প্রসারের জন্য সারাদেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ, ইসলামিক কালচারাল সেন্টার ও ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা সরকার হাতে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ব্যাপারে সৌদি আরব সরকার সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
হেফাজতে ইসলামের প্রধান শাহ আহমদ শাফীর সভাপতিত্বে রোববার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুকরানা মাহফিলে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাহফিলের ফাঁকে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন দুজন। ছবি: বাসস

মানুষের মধ্যে ইসলামি সংস্কৃতির প্রসারের জন্য সারাদেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ, ইসলামিক কালচারাল সেন্টার ও ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা সরকার হাতে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ব্যাপারে সৌদি আরব সরকার সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

কওমি মাদ্রাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিসকে স্নাতকোত্তর (ইসলামিক শিক্ষা ও আরবি) স্বীকৃতি দিয়ে আইন পাস করায় শুকরানা মাহফিলে আজ এই কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ৯০ দিনেরও কম সময় বাকি থাকতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই মাহফিল হলো। মাদরাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতের নেতারা বলেছেন, সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই মাহফিলের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়েছে। এর জন্য আজকের জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা স্থগিত করে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কওমি মাদরাসা ব্যবস্থার ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতিম শিশুরা এখানে আশ্রয় পায়, শিক্ষা পায়। এর থেকে বড় কাজ আর কী হতে পারে। তাই আপনাদের স্বীকৃতি দেব না এটা তো হতে পারে না।

শিক্ষানীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, যে শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে তাতে ধর্মীয় শিক্ষাকে স্বীকৃতি দিয়েছে সরকার। ‘আমি মনে করি শিক্ষা তখনই পূর্ণ হয় যখন ধর্মীয় শিক্ষাও গ্রহণ করা যায়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, লক্ষ্য লক্ষ্য শিক্ষার্থী এখানে পড়ালেখা করে। অথচ তাদের সেই ডিগ্রির যদি স্বীকৃতি না থাকে তবে তারা কোথায় যাবে, কী করবে, কী করে তারা চলবে? তাই দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্স ডিগ্রির সমমর্যাদা দিয়ে আইন পাস করা হয়েছে। কারণ আইন পাস না করলে এটা বাধ্যবাধকতা থাকত না।

এসময় ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ গড়ার জন্য মাদরাসা শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

ইমাম, মুয়াজ্জিনদের আর্থিক সুবিধার জন্য বর্তমান সরকার কল্যাণ ট্রাস্ট করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষার ব্যবস্থা করেছে তার সরকার। নিরক্ষরতা দূর করার জন্য যারা এখানে শিক্ষা দেন তাদেরও ভাতার ব্যবস্থা করেছে সরকার।

এর মাধ্যমে প্রায় ৮০ হাজার আলেম-ওলামার কর্মসংস্থান হয়েছে বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, সারাদেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক কালচারাল সেন্টার করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। ইসলাম ধর্মের শিক্ষা প্রচার ও মানুষ যেন ইসলামি সংস্কৃতির শিক্ষা পেতে পারে সে কারণে এসব মসজিদ নির্মাণ করা হবে বলে উল্লেখ করেন হাসিনা। তিনি বলেন, এসব জায়গায় ইমাম মুয়াজ্জিনরা প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। বিদেশি অতিথিদের থাকার ব্যবস্থার পাশাপাশি যারা হজে যাবেন তারাও সেখানকার করণীয় সম্পর্কে এখান থেকে শিখতে পারবেন।

এসব মসজিদ ও কালচারাল সেন্টার নির্মাণে সৌদি আরব সহযোগিতা করবে। সম্প্রতি সৌদি আরব সফরের সময় বাদশাহর কাছ থেকে এই আশ্বাস পাওয়া গেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

কওমি মাদ্রাসাগুলোর সর্বোচ্চ সংস্থা ‘হাইআতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমি বাংলাদেশ’-এর ব্যানারে এই শুকরানা মাহফিল হলো। হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী সংগঠনটির চেয়ারম্যান।

কওমি শিক্ষার সনদের স্বীকৃতি দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই অবদান ইতিহাসে সোনালি অক্ষরে লেখা থাকবে।

তিনি ওলামাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘মিথ্যা ও হয়রানিমূলক’ মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago