পয়েন্ট খুইয়েও সবার আগে দ্বিতীয় রাউন্ডে বার্সেলোনা
১ পয়েন্ট পেলেই নকআউট পর্ব নিশ্চিত হয়ে যেত বার্সেলোনার। পেলও তারা ঠিক ১ পয়েন্টই। ইন্টার মিলানের মাঠে শুরু থেকে আক্রমণাত্মক খেলে গোল পেতে অপেক্ষা করতে হয় ৮৩ মিনিট পর্যন্ত। বার্সেলোনার জার্সি গায়ে নিজের প্রথম গোল করে স্বাগতিকদের স্তব্ধ করে দেন ম্যালকম। কিন্তু বার্সার উল্লাস চার মিনিটও স্থায়ী হয়নি। মাউরো ইকার্দির গোলে সমতা নিয়েই মাঠ ছাড়ে ইন্টার।
এ জয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চলতি মৌসুমে সবার আগে দ্বিতীয় রাউন্ডে পা রাখলো বার্সেলোনা। বার্সা ছাড়া এখন পর্যন্ত আর কোন দলের নকআউট পর্ব নিশ্চিত হয়নি। বি গ্রুপে চার ম্যাচে তিন জয় ও এক ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বার্সেলোনা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইন্টার মিলানের সংগ্রহ ৭ পয়েন্ট। এ গ্রুপের অপর ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও হ্যারি কেইনের জোড়া গোলে দারুণ জয় পেয়েছে টটেনহ্যাম হটস্পার। ৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে তারা। পিএসভির সংগ্রহ ১ পয়েন্ট।
ম্যাচের আগে সদ্য ইনজুরি থেকে ফেরা লিওনেল মেসিকে স্কোয়াডে রেখেছিলেন বার্সা কোচ এরনেস্তো ভালভারদে। কিন্তু ম্যাচে তাকে খেলাননি। তবে তার অভাবে খুব একটা খারাপ খেলেনি দলটি। ঘরের মাঠে নিজেদের চিরাচরিত রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে ইতালির ক্লাবটি। সে সুযোগে শুরু থেকেই মুহুর্মুহু আক্রমণ করতে থাকে বার্সেলোনা। ৬৫ শতাংশ বল পায়ে তো রেখেছেই। বারে শট নিয়েছে ২৬টি। যার ৮টি ছিল লক্ষ্যে। অপরদিকে লক্ষ্যে একটি মাত্র শট নিয়েই গোল পায় ইন্টার।
ম্যাচের ২ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো বার্সেলোনা। উসমান দেম্বেলের দূরপাল্লার কোণাকোণি শট ঝাঁপিয়ে পরে ফিরিয়ে দেন ইন্টার গোলরক্ষক সামির হ্যান্দানোভিচ। ১২ মিনিটে সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন সুয়ারেজও। কিন্তু তার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
১৯ মিনিটে সুযোগ ছিল ইন্টারেরও। কিন্তু অনেকটা ফাঁকায় বল পেয়েও বারের উপর দিয়ে মারেন আসামোয়াহ। তিন মিনিট পর লক্ষ্যে দারুণ এক চিপ করেছিলেন লুইস সুয়ারেজ। কিন্তু অল্পের জন্য জাল খুঁজে পাননি। ৩০ মিনিটে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন সুয়ারেজ। কিন্তু ঠিকভাবে বলে পা লাগাতে না পারলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় সে সুযোগ। পরের মিনিটেও তার নেওয়া শট লক্ষ্যে থাকেনি।
৩৭ মিনিটে ফিলিপ কৌতিনহোর নেওয়া শট ঝাঁপিয়ে পরে ফিরিয়ে দেন ইন্টার গোলরক্ষক। ৪২ মিনিটে দিনের সেরা সুযোগ পেয়েছিলেন সুয়ারেজ। ডি বক্সে গোলরক্ষককে একা পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। দারুণ দক্ষতায় তার শট ফিরিয়ে দেন হ্যান্দানোভিচ।
৫২ মিনিটে তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে লক্ষ্যে দারুণ এক কোণাকোণি শট নেন কৌতিনহো। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ান ওই ইন্টার গোলরক্ষক। পরের মিনিটে ডিফেন্ডারের ভুল প্রায় গোল হজম করতে বসেছিল বার্সা। তবে সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি ম্যাতিয়াস ভেসিনো। ৬০ মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়েও বরাবর শট নিয়ে সুযোগ নষ্ট করেন ইভান রাকিতিচ।
৬২ মিনিটে কৌতিনহোর আরও একটি প্রচেষ্টা রুখে দেন ইন্টার গোলরক্ষক। তিন মিনিট পর কাউন্টার অ্যাটাক থেকে দারুণ সুযোগ পেয়েছিল ইন্টার। কিন্তু ফাঁকায় হেড দেওয়ার সুযোগ পেয়েও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি মাতেও পলিতানো। ৬৭ মিনিটে বার্সেলোনাকে আবার গোলবঞ্চিত করেন ইন্টার গোলরক্ষক। এবার রুখে দেন উসমান দেম্বেলের কোণাকোণি শট।
৮১ মিনিটে দেম্বেলের জায়গায় ম্যালকমকে মাঠে নামান দেম্বেলে। তার প্রতিদান দুই মিনিট পরই দেন এ ব্রাজিলিয়ান। কৌতিনহোর কাছ থেকে বল পেয়ে ডিবক্সের ঢুকে দারুণ এক কোণাকোণি শটে লক্ষ্যভেদ করেন এ ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।
তবে চার মিনিট পরই সমতায় ফেরে ইন্টার। ভেসিনোর শট ঠিকভাবে ফেরাতে না পারলে ফাঁকায় বল পেয়ে যান ইকার্দি। লক্ষ্যের খুব কাছে বল পেয়ে দুই ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে গোলরক্ষক মার্ক টের স্টেগানের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে মেরে সে সুযোগ কাজে লাগান এ আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। ফলে সমতা নিয়েই মাঠ ছাড়ে ইতালির দলটি।
Comments