নব্বুইয়ে যে স্নায়ুচাপে ভোগে না সে মানুষ না, ফেরেশতা: মুশফিক
ডাবল সেঞ্চুরি থেকে মুশফিকুর রহিম তখন মাত্র ১ রান দূরে। বল করতে আসলেন লেগ স্পিনার ব্র্যান্ডন মাভুটা। সারাদিনই যিনি মুশফিকের ব্যাটে নাজেহাল হয়েছেন। সবার নজর মুশফিকের দিকে, এই বুঝি হয়ে যায়। কিন্তু মাভুটা তখন যেন বনে গেলেন রশিদ খান। তার বলে অস্বস্তি অনুভব করে মেডেনই দিয়ে দেন মুশফিক। মাইলফলকের কাছে গিয়ে এমন স্নায়ুচাপ তিনি ‘মানুষ’ বলেই মুশফিকের কাছে বেশ স্বাভাবিক।
তীরে এসে তরি ডোবানোর ইতিহাস মুশফিকের আগেও আছে। এশিয়া কাপে পাকিস্তানের সঙ্গে আউট হয়ে গিয়েছিলেন ৯৯ রানে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের সঙ্গে ৩ বলে ২ রানের সমীকরণ মেলাতে না পেরে ভুতুড়ে আউট হয়ে করেছিলেন হতাশ, হেরেছিল দল। এবার আর তেমনটা হয়নি। এক রান পেতে তড়িঘড়ি করেননি। সময় নিয়েই পৌঁছেছেন ডাবল সেঞ্চুরিতে।
দলের জয় বা নিজের ল্যান্ডমার্কে গিয়ে এই কাঁপুনিটা তার কাছে খুব স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া, ‘নব্বই এর ঘরে আমার মনে হয় না এমন কেউ আছে যে নার্ভাস ফিল করে না। (যদি করে) তাহলে সে মনে হয় মানুষ না, ফেরেশতা।’
‘যদি খেয়াল করে দেখেন, সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান শচিন টেন্ডুলকার, তিনিও অনেকবার নব্বই এর ঘরে আউট হয়েছেন। যদিও আমি তার পর্যায়ে যাইনি। একজন মানুষ ব্যক্তি হিসেবে কেমন সেই সময়টায় বুঝা যায়। ওটা কন্ট্রোলে আনার বিষয়।’
নিজের ভেতরে বিশ্বাস ছিল বলেই এবার আর ভুল করেননি, ‘আমার মাথায় ছিল আরেকটু হার্ড ওয়ার্ক করলে দুইশ হতেই পারে। তারচাইতে বড় ছিল বিশ্বাস করে যাওয়া। এটাই চিন্তা করেছি, আর এমন না যে ডাবল সেঞ্চুরি না হলে আমি কালকেই মারা যাব। এটা খেলার অংশ। কপালে থাকলে অবশ্যই হবে, না থাকলে কিছু করার নেই। চেষ্টাটা শুধু আমার হাতে। ’
দু’শো পেরিয়েছেন দুবার, এখন তিনশোও অসম্ভব মনে হচ্ছে না মুশফিকের, তিনি কিংবা দলের টপ অর্ডারে অন্য কেউও সেটা করে ফেলতে পারেন বলে বিশ্বাস তার, ‘আমি আমার নিজের ভেতর এটা বিশ্বাস করি। প্রথমে যখন ২০০ করেছি, তখন মনে হয় নাই এটা প্রথম বা আবার কবে মারব। নিজের ওপর ওরকম বিশ্বাস ছিল না। এখন এটা পাওয়ার পর আমার বিশ্বাস একটু হলেও ফিরে এসেছে এরকম আরও বড় অবদান রাখতে পারব। আমার মনে হয় আমাদের টপ অর্ডারদের কারও জন্য এটা ইম্পসিবল না। ’
Comments